অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্থানে দাবানলের কারণে পর্যটন শিল্প এখন ধুঁকছে।
সাউথ অস্ট্রেলিয়ার ক্যাঙ্গারু আইল্যান্ড এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের ব্যাটম্যান্স বে'র মত জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলো দাবানলের কারণে এখন ধ্বংসপ্রায়।
পর্যটকদের অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হচ্ছে; যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে তাদের ট্রাভেল অ্যাডভাইসারি লেভেল টু'তে উপনীত করেছে যা হংকং এবং পাপুয়া নিউ গিনির বেলাতেও একই।প্রতিবছর প্রায় আটশত হাজার মার্কিন পর্যটক অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে আসে, কিন্তু এখন এই সংখ্যা কমে এসেছে।
John Stanton looks on as bushfires sweep through Stokes Bay on Kangaroo Island. Source: AAP
ট্রাভেল এজেন্ট ক্রিস রিউ বলেন, পর্যটকরা সতর্ক হয়ে যাচ্ছেন।
"আমাদের চাইনিজ আর্টিস্টদের একটি গ্রুপ এপ্রিলে আসার কথা ছিল... এখন শুধু তারাই নয়, অনেকেই আসতে দ্বিধা করছেন এবং উৎসবের উপস্থাপক এবং আর্টিস্টদের অনেকের ষ্টুডিও পুড়ে গেছে।"
গত অর্থ বছরে অস্ট্রেলিয়াতে ৯ মিলিয়ন বিদেশী পর্যটক এসেছিলো, সেই সাথে স্বদেশী পর্যটকসহ তারা প্রায় ১৬৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছিল।
এখন এটা অস্ট্রেলিয়ার পর্যটনের জন্য ব্যস্ত সময়।
এদিকে পর্যটন শিল্পের অনেকেই ভাবছেন পর্যটকরা হয়তো কয়েক মাস ধরে আসতে আগ্রহী হবেন না।
ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি সিডনির পর্যটন বিষয়ের সিনিয়র লেকচারার ডঃ ডেভিড বেইরমান বলেন, দাবানলের ভীতিকর সব ছবি দেখে বাইরের লোকেরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
"যখন পৃথিবীর লোকেরা কোয়ালাদের আগুনে পোড়া, মৃত বন্য জন্তুদের ছবি দেখে, নৌবাহিনীর দ্বারা মানুষদের সরিয়ে নেয়া বা উদ্ধারের ছবি দেখে, নানা ধরণের এপোক্যালিপ্টিক ছবি দেখে, অবশ্যই কেউ তো আর যারা আক্রান্ত হয়নি তাদের ছবি দেখাবে না; তো তখন তারা হয়তো ভাবে এটা কি অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের সঠিক সময়? সুতরাং, এটা একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ, বাস্তবেই শুধু নয়, মনস্তাত্ত্বিক ভাবেও। "
অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন এমন পর্যটকরা তাদের স্নায়ুর চাপে ভোগার কথা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা একজন পর্যটক এমনকি ফিরে যাবার কথাও ভেবেছিলেন।
"যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সময় অনেক নেতিবাচক খবর শুনে বাদ দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন দেখছি সব কিছু খুব সুন্দর, এবং আমরা তোমাদের সুন্দর দেশটিতে আসতে পেরে বেশ আনন্দিত।"
বুশফায়ারের ধ্বংসলীলার মধ্যে ট্যুরিজম অস্ট্রেলিয়া সংগীতশিল্পী কাইলি মিনোগের সাথে তাদের কয়েক মিলিয়ন ডলারের ক্যাম্পেইন স্থগিত রেখেছে; এর উদ্দেশ্য ছিল ব্রেক্সিট ভীতিতে আক্রান্ত ব্রিটিশবাসীদের অস্ট্রেলিয়ায় আসতে উৎসাহিত করা।
এসত্ত্বেও ট্রেড, ট্যুরিজম এন্ড ইনভেস্টমেন্ট মিনিস্টার সাইমন বার্মিংহাম অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে আসতে উৎসাহিত করছেন।
Prime Minister Scott Morrison surveys the damage at Stokes Bay on Kangaroo Island, southwest of Adelaide. Source: AAP
ক্যাঙ্গারু আইল্যান্ডের সাদার্ন ওশেন লজ একটি আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র যেটি বছরে ৫০০০ অতিথিদের সেবা দিয়েছে। এটি এখন আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে।
এরপরেও এর কর্ণধার হেইলি বেইলি পর্যটকদের আতংকিত হতে বারণ করেন। তিনি বলেন, "আমার ব্যবসা শেষ হয়ে গেলেও আমি বিশ্ববাসীকে এই বার্তা দিতে চাই যে, অস্ট্রেলিয়ায় আরো অনেক জায়গা আছে যেগুলো এখনো খোলা আছে, অনেক অনেক আশ্চর্য সব সুন্দর জায়গা আছে দেখার মত এবং সেগুলো আগুনের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।"
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বিদেশী পর্যটকদেরকে বার্তা দিয়ে বলেছেন যে, অস্ট্রেলিয়া উন্মুক্ত।