গত জানুয়ারি মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও তাদের জরুরি তহবিল আরও ২.৫ বিলিয়ন ডলার বাড়ানোর আবেদন করে।
পরবর্তীতে তুর্কি ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং আরও অনেকে অনিশ্চিত অবস্থায় পড়ে গেলে এই অর্থ বরাদ্দ অনেক কাজে আসে।
সেখানে নানা রকম রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা ছিল কারণ উদ্বাস্তু মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্র বা তাবুতে বাস করতে হচ্ছিল। একই সময়ে এই মানুষদের বসবাসের জন্যে নতুন অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল।
সেখানকার অফিস অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের উপ-পরিচালক গাদা এলতাহির মুদাওয়ি বলেন,
চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যেও আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরিয়ায় অনিশ্চিত পরিস্থিতি বিদ্যমানগাদা এলতাহির মুদাওয়ি
আর চলতি বছরের শেষের দিকে একই ধরনের বিপর্যয় শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের গাজায়।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পর ইসরায়েল হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার জন্যে যুদ্ধ শুরু করে।
আল-শিফা সহ গাজার প্রধান প্রধান হাসপাতালগুলিও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ক্ষেপনাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী অভিযোগ করেছে যে হামাস এই হাসপাতালের ভিতরে অস্ত্র এবং জিম্মিদের লুকিয়ে রেখেছে, যদিও হামাস এই দাবি অস্বীকার করেছে।
সেখানে কাজ করা ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ সেখানে আশ্রয় নেওয়ায় হাসপাতালের কার্যক্ষমতা প্রায় ভেঙে পড়েছে এবং জ্বালানি ও খাবারের অভাবে চিকিৎসা সেবা একেবারে সীমিত হয়ে পড়েছে।
ব্রিটিশ-ফিলিস্তিনি সার্জন ড. গাসান আবু সিত্তা, যিনি গাজা শহরের ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস-এ কয়েক সপ্তাহ কাজ করেছেন, তিনি বলেন,
এর নেতিবাচক প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে নারী ও শিশুদের ওপরেড. গাসান আবু সিত্তা
এমনকি নিকটবর্তী দেশ লেবাননের স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপরেও এই যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে।
মারজায়ুন হাসপাতালের পরিচালক ড. মৌনেস ক্লাকেশ বলেন, ২০১৯ সালে লেবাননের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিপর্যয়ের কারণে এমনকি শান্তিকালীন সময়েও এই হাসপাতালটি পরিচালনা করতে তাঁকে বেগ পেতে হচ্ছিল।
যুদ্ধ পরিস্থিতির পাশাপাশি, বিশ্বের জন্যে উদ্বেগ বৃদ্ধির আরেকটি বড় কারণ জলবায়ু পরিবর্তন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মানবিক সংকট, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বৃদ্ধি এবং অত্যধিক বৃষ্টিপাতের কারণে এ বছর ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ অনেক বেড়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৈশ্বিক ম্যালেরিয়া কর্মসূচির পরিচালক ড. ড্যানিয়েল এনগামিজে বলেন, প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য আরও তহবিল প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দুবাইয়ে কপ ২৮-এ বিশ্ব নেতাদের কাছে তাদের উদ্বেগের পুনরাবৃত্তি করে বলেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইতিমধ্যে উচ্চতাপজনিত মৃত্যুর সংখ্যা চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা আশঙ্কা করছেন যে আরও লক্ষ লক্ষ লোক এর নেতিবাচক প্রভাবে পড়বে।
ক্যানাডার চিকিৎসক ইয়াসাল্ট গিবেয়ার বলেন, জলবায়ু সংকটও যে একটি স্বাস্থ্য সংকট, তা অনেকেই বোঝেন না।
এদিকে, ধূমপান বিরোধী আইন বাতিলের আকস্মিক সিদ্ধান্তের জন্য নিউজিল্যান্ড এ বছর খবরের শিরোনামে ছিল।
আগামী বছর থেকে ২০০৮ সালের পর জন্ম নেওয়া যে কোনো ব্যক্তির কাছে নিউজিল্যান্ডে সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা ছিল তরুণদের ধূমপান থেকে বিরত রাখার পদক্ষেপ হিসেবে।
কিন্তু দেশটির নতুন ডানপন্থী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে না।
অ্যাকশন ফর স্মোকফ্রি ২০২৫ গ্রুপের বেন ইউডানের মতো স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও অনেক প্রতিবেদন ও খবর সংবাদমাধ্যমে অনেক গুরুত্ব এবং মনোযোগ পেয়েছে।
যেমন একটি প্রকল্প শুরু হয়েছে, যাতে রোগের নতুন চিকিত্সা আবিষ্কারের জন্যে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের পাঁচ লক্ষ মানুষের জিন সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হবে, এবং এই তথ্যের মাধ্যমে মানুষের ভেতরে অসুস্থতা কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে তা বুঝতে আমাদের সহায়তা করবে।
অন্যদিকে, একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে একটি পরীক্ষামূলক ঔষধ রোগীদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তা করার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া ধীর করতে পারে, যেটি আলঝাইমারের চিকিত্সার জন্য নতুন আশা দিচ্ছে।
এবং জার্মানিতে, ডোমিনিকা ফ্রাইজ নামের একজন বিশ্বের প্রথম থ্রিডি প্রিন্ট করে প্রস্তুত করা বায়োনিক আর্ম বা বাহু ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছেন।
আবার কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ খবর উপেক্ষিত হয়েছে।
এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রান্সজেন্ডার মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা এবং বয়স্ক সেবাকেন্দ্রের পরিষেবা গ্রহণে প্রতিবন্ধকতার খবরও রয়েছে।
দেশজুড়ে ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার সীমিত করার জন্য এ বছর নতুন অনেক রাষ্ট্রীয় আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
ফ্লোরিডায়, এরকম একটি আইন ৫৭ বছর বয়সী আন্দ্রেয়া মন্টানেজের মতো মানুষদের হরমোন থেরাপি গ্রহণ করার কাজ কঠিন করে তুলেছে।
তবে এসএজিই নামের একটি সহায়তা সংস্থার প্রতিনিধি মাইকেল অ্যাডামস বলেছেন,
ট্রান্স সিনিয়রদের চাহিদা মেটাতে নার্সিং হোম এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলির প্রস্তুতি নিয়েও উদ্বেগ রয়েছেমাইকেল অ্যাডামস
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে, এখন থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস পপদেশীতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।
কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ তে।