জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে আগের সরকারের স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে অস্ট্রেলিয়া

Embassy of Australia

Israel’s Foreign Ministry’s political director, Aliza Bin-Noun, to summon Australia’s ambassador, Paul Griffiths, for more than 30 minutes on Tuesday. Source: AAP / AAP

লেবার সরকার পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সাবেক কোয়ালিশন সরকারের নীতি বাদ দিয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে জানা যাচ্ছে জেরুজালেমের অবস্থা সংবেদনশীল এবং জটিল। শহরটি নিয়ে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিদ্যমান।


২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ডেভ শর্মা ইসরায়েলে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত ছিলেন, এবং ওয়েন্টওয়ার্থের জন্য লিবারেল পার্টির উপ-নির্বাচন প্রার্থী হয়েছিলেন - সিডনির এই আসনটি বিশাল ইহুদি জনসংখ্যা অধ্যুষিত।

তার উৎসাহেই অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ২০১৮ সালে ইসরায়েলের রাজধানী নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যেখানে তিনি পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।

এই ঘোষণা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭-তে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেছিল।

কিন্তু এখন লেবার সরকার আবার দায়িত্বে পাওয়ায় দৃষ্টিকোণ পরিবর্তিত হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর পেনি ওং মঙ্গলবার জেরুজালেমের ব্যাপারে একটি ঘোষণা দিয়ে বলেন যে, অস্ট্রেলিয়া পূর্ববর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিল করছে।

তিনি বলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত ইসরায়েল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কয়েক দশক ধরে থাকা অবস্থানে ফিরে আসছে।

সিনেটর পেনি ওং বলছেন,"অস্ট্রেলীয় সরকার একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেখানে ইসরায়েল এবং একটি ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানার মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তায় সহাবস্থান করবে। আমরা এমন কোনো পদ্ধতিকে সমর্থন করব না যা এই সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ন করে।"

তবে এই নীতির পরিবর্তনকে সবাই ইতিবাচকভাবে দেখেনি।

বিরোধী জোট নেতা পিটার ডাটন এটিকে আসন্ন বাজেটে খারাপ খবর থেকে মনোযোগ সরিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা বলে লেবারকে অভিযুক্ত করেছেন।

তিনি বলছেন, এটা এমন একটা আনাড়ি কাজ, যেমনভাবে রিচার্ড মার্লেস সাংবাদিকদের বিভ্রান্ত করছেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার ল্যাপিড বলেছেন যে, তিনি মনে করেন অস্ট্রেলিয়া তাড়াহুড়ো করে কাজ করেছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক পরিচালক, আলিজা বিন-নাউন, মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত পল গ্রিফিথসকে ডেকে পাঠান এবং ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা করেন।

তিনি রাষ্ট্রদূতকে বলেন যে ইসরায়েল বিশ্বাস করে যে এই পদক্ষেপটি পশ্চিম তীরে চরমপন্থীদের সহিংসতা বাড়াতে উৎসাহিত করবে এবং ফিলিস্তিনিদের সাথে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে পারে, যখন লেবাননের সাথে একটি সমুদ্রসীমা চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা আছে।

রাজনৈতিক পরিচালক ঘোষণার সময় নিয়েও আপত্তি করেছিলেন, কারণ এদিন সুক্কট এবং সিমহাত তোরা উদযাপন হয়, দিনটি ইহুদি জনগণ জেরুজালেমের সাথে তাদের বিশেষ সংযোগ হিসেবে উদযাপন করে।

তেল আবিবের একজন বাসিন্দা, ইউভাল জেনডেনব্যাঙ্ক বলেছেন যে তিনি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অন্যান্য সরকার জড়িত হওয়ার বিষয়ে আপত্তি করেন।

তিনি বলছেন, জেরুজালেম ইহুদি জনগণের চিরন্তন রাজধানী। তবে এটি শুধুমাত্র ইহুদিদেরই নয়, অন্য সকল ধর্মের পবিত্র স্থান।"

সিনেটর ওং এই পদক্ষেপের জন্য আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন।

তিনি বলেছেন যে ২০১৮ সালের সিদ্ধান্তটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের অনুভূতির সাথে বেমানান এবং এতে অস্ট্রেলিয়া দূরে সরে গেছে।

এবং তিনি জোটকে তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক খেলার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।

তিনি বলছেন, এটি ছিল উপ-নির্বাচনে ওয়েন্টওয়ার্থের আসনে জয়লাভ করার জন্য একটি ধূর্ত খেলা - যদিও তা ব্যর্থ হয়েছিল - এবং জনগণ প্রত্যক্ষ করেছিলো যে সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শুধু একটি আসনে জেতার জন্য পররাষ্ট্র নীতি ব্যবহার করে এই খেলা খেলতে চেয়েছিলেন।"

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইজ্জাত সালাহ আব্দুল হাদি বলেছেন লেবার সঠিক ভূমিকা নিয়েছে।

তিনি বলেন, তিনি মনে করেন যে এই শহরের স্ট্যাটাস কী হবে সে সিদ্ধান্ত অস্ট্রেলিয়ান সরকারের নেওয়া উচিত নয়।

তিনি বলছেন, জেরুজালেমের স্ট্যাটাস নিয়ে যে সমস্যা এটি ইসরাইল ও ফিলিস্তিন, এই দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।

পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার 
সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

Share