গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- AUKUS চুক্তির অংশীদার হিসাবে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো পরমাণু শক্তি চালিত সাবমেরিনগুলি নিজের দখলে রাখতে সক্ষম হবে
- অস্ট্রেলিয়া এই চুক্তিতে হাত মেলাল - কার্যত - এর আগে ফ্রান্সের সাথে ৯০ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তি করার পরে
- যে সাবমেরিনগুলো নিয়ে কথা হচ্ছে তা পারমাণবিক বিস্তার-রোধের বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে
অস্ট্রেলিয়া তার প্রথম পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন তৈরি করবে। অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে ত্রিদেশীয় এই চুক্তি AUKUS নামে পরিচিত।
এই জোট অস্ট্রেলিয়ার সাবমেরিন ক্রয় পরিকল্পনায় একটি বড় পরিবর্তনের পথ তৈরি করবে।
বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে, তিনটি দেশ এই চুক্তির ঘোষণা দেয়, যার নাম AUKUS (অকাস), এই চুক্তির অংশীদার হিসাবে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো পরমাণু শক্তি চালিত সাবমেরিনগুলি নিজের দখলে রাখতে সক্ষম হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের সম্পৃক্ততার অর্থ হল অস্ট্রেলিয়া তার নিজস্ব বহর নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, নতুন সাবমেরিন নির্মাণের কাজ অস্ট্রেলিয়ায় হবে।
তিনি বলেন, "অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের পারমাণবিক ব্যবস্থাপনা দায়িত্ব পালন করার জন্য কী করতে হবে তার জন্য একটি গভীর পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত হবে। আমরা যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে এই সাবমেরিনগুলি নির্মাণের ইচ্ছা পোষণ করছি। কিন্তু আমি স্পষ্ট করে বলছি - অস্ট্রেলিয়া পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন বা একটি বেসামরিক পারমাণবিক সক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে না।"
মিস্টার মরিসন তিন দেশের মধ্যে পূর্বের সম্পর্ক এবং নতুন বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের প্রশংসা করেন ।
তিনি ত্রিপক্ষীয় এই গোষ্ঠীকে "স্বাধীনতার বন্ধু" বলে বর্ণনা করেছেন - কিন্তু কিছু দেশ তাদের বন্ধুত্বের এই গ্রুপ থেকে বাদ দেওয়ায় খুশি নয়।
অস্ট্রেলিয়া এই চুক্তিতে হাত মেলাল - কার্যত - এর আগে ফ্রান্সের সাথে ৯০ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তি করার পরে।
জেরার্ড আরাউদ, একজন ফরাসি কূটনীতিক যিনি এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বলেন, "পৃথিবী একটি জঙ্গল। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ফ্রান্সকে এই তিক্ত সত্যটি অস্ট্রেলিয়ার এই চুক্তির মাধ্যমে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, এটি তার পিঠে যেন ছুরিকাঘাত করা।"
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন মরিসনের নাম ভুলে যাওয়ার জন্য ভাইরাল হয়েছেন।
তিনি নাম মনে করতে না পেরে বলেন, আমি ডাউন আন্ডারের (অস্ট্রেলিয়াকে অনেকে এই নামে ডাকে) এই সহকর্মীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, ধন্যবাদ বন্ধু।
দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্য ছাড়াও এটি মূলত গভীর প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে।
মি: বাইডেন বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার অপরিহার্যতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ও জোটের লক্ষ্য।
এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও বলেছেন, যে সাবমেরিনগুলো নিয়ে কথা হচ্ছে তা পারমাণবিক বিস্তার-রোধের বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে।
তিনি বলেন, "এই পার্টনারশিপের প্রথম কাজ হবে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিনের একটি বহর অর্জন করতে সাহায্য করা। অবশ্যই পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করা নয়।"
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনাটি উন্মোচন করার সময়ে চীনের বিষয়ে কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে নতুন এই নিরাপত্তা জোটকে বেইজিংয়ের জন্য একটি উস্কানিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
তবে যাইহোক, নেতারা তাদের প্রযুক্তি-উদ্যোগ নিয়ে গর্ব করার সুযোগ গ্রহণ করেছিলেন।
মিঃ জনসন বলেন, এটি হবে বিশ্বের অন্যতম জটিল এবং প্রযুক্তিগতভাবে চাহিদা সম্পন্ন প্রকল্প।
পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন অস্ট্রেলিয়ান এই সাবমেরিনগুলি পাঁচ মাস পর্যন্ত সমুদ্রে থাকতে পারবে এবং দেশের বিদ্যমান কলিন্স শ্রেণীর ডিজেল চালিত জাহাজের চেয়ে শান্তভাবে কাজ করবে।
আলোচিত এই চুক্তি নিয়ে আগামী দিনে বিশ্বব্যাপী আরও মন্তব্য আশা করা হচ্ছে।
পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
আরও দেখুন: