বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব হওয়ার পর থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে লকডাউন করেছিল সরকার। সেই সঙ্গে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়াত। ক্যাম্পগুলোতে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা, চিকিৎসা ছাড়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বাকি সব কার্যক্রম। গাদাগাদি করে বাস করা প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ (১.১৫ মিলিয়ন) রোহিঙ্গা শরণার্থীকে করোনাভাইরাসের মহামারী থেকে রক্ষা করাই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন,
“রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দু’জন নয়, একজন করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তিকে সনাক্ত করেছি। প্রকৃতপক্ষে একজন। তিনি পুরুষ।”
“আমাদের ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বেশ কিছু আইসোলেশন সেন্টার রয়েছে।”
“বিধি মোতাবেক, তাকে আইসোলেশন সেন্টারই নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
“আমাদের ক্যাম্পের অভ্যন্তরে কিছু কোয়ারেন্টিন সেন্টার করা হয়েছে আলাদাভাবে। তার পরিবারকে সেই কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়মিত করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়। কারও মধ্যে কোনো উপসর্গ দেখা দিলে তার বাড়িতে গিয়ে তা পরীক্ষা করা হয়।
“ক্যাম্পের অভ্যন্তরের জন্য WHO এর কিছু নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।”
ক্যাম্পের মাঝে বেশকিছু কোয়ারেন্টিন সেন্টার ও আইসোলেশন সেন্টার রয়েছে, বলেন তিনি।কারও মধ্যে করোনাভাইরাস সনাক্ত করা হলে তাদের জন্য ক্যাম্পের মাঝে ৩০০ আইসোলেশন বেড প্রস্তুত করা হয়েছে।
Nikaruzzaman CHowdhury Source: Supplied
সরকারের পাশাপাশি নানা বেসরকারি সংস্থা ও বিদেশী সংস্থাগুলোও সেখানে কাজ করছে, বলেন তিনি।
করোনাভাইরাসের মহামারী যদি ক্যাম্পে বিস্তৃত হয়, তাহলে তা প্রতিরোধে সমস্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ক্যাম্পের লোকজন বাইরে আসেন কিনা এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাইরে থেকে কিছু লোককে ক্যাম্পে প্রবেশ করতে হতো। ক্যাম্পের ভেতরে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার লোকজন কাজ করতো।
তার মতে, “সেখানে কতোগুলো গাড়ি প্রবেশ করছে এবং কারা কারা প্রবেশ করছে সেটি সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।”
“চেকপোস্টগুলোতেও নির্দিষ্ট তালিকাভুক্ত যান-বাহনের বাইরে অন্য কোনো যান-বাহন ছাড়া হচ্ছে না।”কক্সবাজারের উখিয়াতে বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা-আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ শুনে সেই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ অনেক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
Tofayal Ahmad Source: Tofayal Ahmad
টেকনাফ-উখিয়ার স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে, স্থানীয় লোকেরা সর্বত্র চলাফেরা করতে না পারলেও রোহিঙ্গারা যেখানে ইচ্ছা যেতে পারে।
“রোহিঙ্গা শিবিরে বসবাসরতরা যে-সব সুযোগ-সুবিধা পায়, এর বাইরে বসবাসরত ব্যক্তিরা সে-সব সুবিধা পায় না, এ রকম অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে”, বলেন তোফায়েল।
এ পর্যন্ত প্রায় দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরীক্ষা করা হয়েছে, বলেন তিনি।রিফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রিপ্যাট্রিয়েশন-এর অ্যাডিশনাল কমিশনার এবং গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপ-সচিব শামসুদ্দোজা বলেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রোহিঙ্গাদেরকে অহেতুক বাইরে ঘুরাঘুরি করতে নিষেধ করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন,
Shamsud Douza Source: Supplied
“করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।”
“তার পরিবারের সদস্যদেরকেও পরীক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং তাদেরকে আলাদাভাবে রাখা হয়েছে। আর, তাদের যে কন্টাক্ট ছিল, ঐ এলাকায় বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে। তারা যেন চলাচল করতে না পারে।”
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
Source: SBS
অস্ট্রেলিয়া জুড়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষা এখন ব্যাপকভাবে বিস্তৃত করা হয়েছে। আপনার মাঝে যদি সর্দি-কাশির (কোল্ড কিংবা ফ্লু) লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে আপনার ডাক্তারকে কল করে কিংবা করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইন, 1800 020 080 নম্বরে কল করে টেস্টের ব্যবস্থা করুন।
Source: SBS
আপনার মোবাইল ফোনের অ্যাপ স্টোর থেকে ফেডারাল সরকারের করোনাভাইরাস ট্রেসিং অ্যাপ COVIDSafe ডাউনলোড করা যাবে।
আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।
আপনার ভাষায় কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ আপডেট জানাতে এসবিএস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৬৩ টি ভাষায় এ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য পাবেন। ভিজিট করুন: .বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন:
Source: SBS