Feature

রেফিউজি উইক কি এবং কেন এটি অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিবছর পালন করা হয়?

রেফিউজি উইক বা শরণার্থী সপ্তাহ হল অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক আয়োজন যার মাধ্যমে জনসাধারণকে শরণার্থীদের সম্পর্কে অবহিত করা হয় এবং অস্ট্রেলিয়ান সমাজে তাদের ইতিবাচক অবদানগুলি উদযাপন করা হয়।

Refugees

Credit: Getty Images/bymuratdeniz

গুরুত্বপূর্ণ দিক
  • শরণার্থী সপ্তাহ হল অস্ট্রেলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক আয়োজন যার অন্যতম উদ্দেশ্য হল অস্ট্রেলিয়ান সমাজে শরণার্থীরা যে ইতিবাচক অবদান রাখে তা উদযাপন করা।
  • প্রতি বছর শরণার্থী সপ্তাহের একটি ভিন্ন থিম থাকে।
  • অস্ট্রেলিয়ার শরণার্থী কাউন্সিল সারা বছর শরণার্থীদের সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে অনেক কর্মসূচি পরিচালনা করে।
  • গত এক দশকে শরণার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
প্রতি বছর, লাখ লাখ মানুষ নিরাপত্তার সন্ধানে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

২০ জুন হচ্ছে (বিশ্ব শরণার্থী দিবস), দিবসটি অস্ট্রেলিয়ার শরণার্থী সপ্তাহের অন্তর্ভুক্ত যেটি অনুষ্ঠিত হয় রবিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত।

অস্টকেয়ার ১৯৮৬ সালে সিডনিতে প্রথম শরণার্থী সপ্তাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। ১৯৮৭ সালে, অস্ট্রেলিয়ার রিফিউজি কাউন্সিল (আরসিওএ) এর সহ-সংগঠক হিসেবে যুক্ত হয় এবং পরের বছর এই অনুষ্ঠানটি একটি জাতীয় অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে। আরসিওএ (RCOA) ২০০৪ সালে শরণার্থী সপ্তাহের জাতীয় সমন্বয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করে।

আরসিওএ-এর ডেপুটি চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার অ্যাডামা কামারা বলেছেন, শরণার্থী সপ্তাহের অন্যতম উদ্দেশ্য হল অস্ট্রেলিয়ান সমাজে শরণার্থীরা যে ইতিবাচক অবদান রাখে তা উদযাপন করা।
Adama Kamara Deputy CEO RCOA
Adama Kamara, RCOA’s Deputy Chief Executive Officer. Credit: RCOA
সামগ্রিক লক্ষ্য হল আমাদের শরণার্থী সম্প্রদায় এবং অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের মধ্যে আরও ভাল বোঝাপড়া... এবং একে অপরকে আরও স্বাগত জানানো।
আদামা কামারা, ডেপুটি চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, আরসিওএ

রেফিউজি উইকের এ বছরের থিম

প্রতি বছর, রেফিউজি উইকের একটি থাকে।

এটি অস্ট্রেলিয়া এবং সারা বিশ্বে উদ্বাস্তুদের প্রভাবিত করে এমন সমস্যাগুলির বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং বৃহত্তর সম্প্রদায়কে শরণার্থী হওয়া কেমন তা বুঝতে সাহায্য করার জন্য পালন করা হয়।

থিমটি এমন একটি ঐক্যবদ্ধ এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ বার্তার জানান দেয় যা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। এটি শরণার্থীদের সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং (তাদের সহায়তার জন্য) কর্মসূচী গ্রহণে প্রভাব রাখে।
প্রতি বছর এমন একটি থিম সমাজে সম্প্রীতি এবং ঐক্যের বোধ জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করে। বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডের ব্যক্তি, সম্প্রদায় এবং সংগঠনের মধ্যে ভাবের আদান প্রদানের উদ্দেশ্যে মানুষ একত্রিত হয়।

এটি একটি শক্তিশালী স্মারক হিসাবে কাজ করে এজন্য যে, আমাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, আমরা সবাই মানবতার জন্য ঐক্যবদ্ধ।

প্রতিকূল পরিস্থিতিতে শরণার্থীদের টিকে থাকা

একজন সিডনি-ভিত্তিক আইনজীবী এবং রেফিউজি উইক অ্যাম্বাসেডরদের একজন। তিনি ইরাকের একটি অ্যাসিরিয়ান পরিবারে বেড়ে ওঠেন এবং ১৯৯৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়ার আগ পর্যন্ত শরণার্থী হিসাবে জর্ডান, তুরস্ক এবং গ্রিসে ছিলেন।

মি. স্লেওয়া বলেছেন আন্তঃ-প্রজন্মীয় ট্রমা কমতে অনেক বছর সময় লাগতে পারে, তবে শরণার্থীরা তাদের "সেটেলমেন্ট জার্নি" শুরু করলে নিরাময় সম্ভব।

তিনি বিশ্বাস করেন যে উদ্বাস্তুদের জন্য নিরাময়ের মূল উপাদান হল "প্রতিকূল পরিস্থিতিতে টিকে থাকা " এবং এটাও বলেন যে "আপনি অস্ট্রেলিয়ায় পা রাখার দিন থেকেই নিরাময়ের পর্যায় শুরু হয়"।
অন্যদের সাথে কথা বলা, আপনার গল্পগুলি বলা, কোনো পক্ষপাত ছাড়াই সেই দুর্ভোগের কথা খোলাখুলি আলোচনা করতে পারা, এবং তা গ্রহণযোগ্য হওয়া। শরণার্থীদের জন্য এই গ্রহণযোগ্যতা, স্বীকৃতি এবং সম্মান দেয়া হলে, আমি মনে করি, এই নিরাময় প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে।
অলিভার স্লেওয়া, আরসিওএ অ্যাম্বাসেডর
RCOA ambassador, Oliver Slewa
RCOA ambassador, Oliver Slewa Source: Supplied / Supplied by RCOA

'ফেস-টু-ফেস' প্রোগ্রাম

শরণার্থী সপ্তাহে এবং এর বাইরেও আরসিওএ পরিচালিত অনেকগুলি বিভিন্ন কর্মসূচী এবং কার্যক্রম রয়েছে।

হচ্ছে এমনি একটি প্রোগ্রামগুলির মধ্যে একটি যা শরণার্থী সপ্তাহ জুড়ে চলে। এটি আরসিওএ অ্যাম্বাসেডর এবং প্রতিনিধিদের একটি ইনকারশন প্রেজেনটেশন এবং কর্মশালা।
শরণার্থী বক্তারা এখানে তাদের নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার ব্যক্তিগত গল্প বলেন এবং শিক্ষার্থীদের উদ্বাস্তু জীবন, তাদের অভিজ্ঞতা এবং অস্ট্রেলিয়ায় তাদের অবদান সম্পর্কে জানার সুযোগ দেন।

প্রেজেনটেশনগুলি সব বয়সী স্কুল শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং আগ্রহী ব্যক্তিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে৷
Face-2-Face program workshop
Face-2-Face program workshop Credit: RCOA

বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি

গত এক দশকে, বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে, যার সংখ্যা ৪১ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ১০৩ মিলিয়ন হয়েছে (জুন ২০২২ পর্যন্ত)।

রেডক্রসের হিসেব অনুসারে প্রতি ৯৫ জনের মধ্যে একজন এখন জোরপূর্বকভাবে বাস্তুচ্যুত, যা ২০১০ সালে ছিল ১৫৯ জনে একজন। বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুতির হার এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে।

মিজ কামারা বলেছেন যে আরসিওএ অস্ট্রেলিয়ান সরকারকে তার মানবিক কর্মসূচির অধীনে বার্ষিক শরণার্থী গ্রহণের হার বাড়ানোর জন্য উৎসাহিত করছে।

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা অডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।

রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

Share
Published 19 June 2023 4:45pm
Updated 24 August 2023 3:13pm
By Roza Germian
Presented by Shahan Alam
Source: SBS


Share this with family and friends