অস্ট্রেলিয়ার রিজার্ভ ব্যাংকের ক্যাশ রেট বেড়েছে গত দু’দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ

interest rates rise, Filipinos in Australia, cost of living

The RBA predicts inflation, which currently sits at 5.1 per cent, will further increase this year before returning to the target 2 to 3 per cent range next year Source: AAP

রিজার্ভ ব্যাংক (আর-বি-এ) ৫০ বেসিস পয়েন্ট ক্যাশ রেট বাড়ানোর পরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মর্টগেজ রেট বৃদ্ধির সম্মুখীন হয়েছেন বহু বাড়ি-মালিক। দু’দশকেরও বেশি সময়ের মাঝে এটাই সবচেয়ে বেশি রেট বৃদ্ধির ঘটনা। কাকতালীয়ভাবে, একই সময়ে গ্যাস ও বিদ্যুৎ মূল্যও বেড়েছে। ফলে আর্থিক সংগ্রামে নাভিঃশ্বাস ফেলছেন অনেকেই। ইন্টারেস্ট রেট নিয়ে একটি প্রতিবেদন।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • সুদের হার ০.৩৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ০.৮৫ শতাংশ করায় অনেক বাড়ির মালিকের ওপরেই এর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে
  • অস্ট্রেলিয়ায় মূদ্রাস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ায় সুদের হারের বৃদ্ধি বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে
  • অর্থনীতিবিদগণ বলছেন বেতন অধিক বাড়ানো হলে মূদ্রাস্ফীতির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে

সুদের হার ০.৩৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ০.৮৫ শতাংশ করায় অনেক বাড়ির মালিকের ওপরেই এর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে। 

সম্প্রতি সুদের হার বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বহু ক্রেতা ও বাড়ির মালিকের মাঝে।

একই সময়ে আরও বেড়েছে গ্যাস ও বিদ্যুৎ-মূল্য। বলা যায়, এই শীতকালে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন অনেকেই।

নিউ সাউথ ওয়েলস ও এসিটি-এর ফুড ব্যাংকের সিইও জন রবার্টসন বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে হিমশিম খাচ্ছে কোনো কোনো পরিবার।

তিনি বলেন, চ্যারিটি বা দাতব্য কার্যক্রম ইতোমধ্যে অনেক বিস্তৃত করা হয়েছে। তবে, সহায়তা লাভের চাহিদাও বেড়ে চলেছে।

অস্ট্রেলিয়া জুড়ে প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন বাড়ির মালিক রয়েছে। সুদের হার ০.৩৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ০.৮৫ শতাংশ করায় তাদের অনেকের ওপরেই এর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে।
২০০০ সালের পরে এটাই সবচেয়ে বড় রেট বৃদ্ধির ঘটনা। তখন থেকে অবশ্য হাতে গোণা কয়েকবারই এই রেট বাড়ানো হয়েছে।

রিজার্ভ ব্যাংক গভর্নর ফিলিপ লোয়ি একটি লিখিত বিবৃতিতে বলেন, ক্রমবর্ধমান মূদ্রাস্ফীতিই মূল ইস্যু, যার পেছনে রয়েছে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিয়ামক।

ফেডারাল ট্রেজারার জিম চ্যালমার্স বলেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে, তারপর পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

রিজার্ভ ব্যাংক অফ অস্ট্রেলিয়া বা আর-বি-এ মূদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা করছে। বর্তমানে মূদ্রাস্ফীতির হার ৫.১ শতাংশ। এ বছর এটি আরও বাড়বে। এরপর, আগামী বছরে তা ২ থেকে ৩ শতাংশ লক্ষমাত্রায় নেমে আসবে।

এর প্রতিফলন দেখা যাবে জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধিতে, যেমন, বিদ্যুৎ খরচ ও বাজার-সদাইয়ের খরচ বাড়বে।

ট্রেজারার আরও বলেন, সুদের হার বৃদ্ধির ফলে সরকারের পক্ষেও ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হবে।

বিরোধী দলীয় ট্রেজারি বিষয়ক মুখপাত্র অ্যাঙ্গাস টেইলর বলেন, এর মানে হলো, নতুন সরকার নতুন নতুন ব্যয়ের যে-সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলো থেকে তাদেরকে ব্যয় হ্রাস করতে হবে।

তবে, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন নি। তিনি তখন ইন্দোনেশিয়া সফরে ছিলেন।

নির্বাচনী প্রচারণার সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুও এখন সামনে আনা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ান কাউন্সিল অফ ট্রেড ইউনিয়নস (ACTU) আবারও আহ্বান জানিয়েছে বেতন বৃদ্ধির। জীবন-যাত্রার ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে যে চাপ পড়ছে, সেক্ষেত্রে সহায়তার জন্য।
ফেয়ার ওয়ার্ক কমিশন সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দিয়েছে। 

অস্ট্রেলিয়ান কাউন্সিল অফ ট্রেড ইউনিয়নস (ACTU)- এর সেক্রেটারি স্যালি ম্যাকমেনাস বলেন, সর্বনিম্ন বেতনধারী কর্মীদের কারও কারও বেতন বাড়ানো হলে অর্থনীতি চাঙা হবে।

তবে, কেপিএমজি (K-P-M-G)-এর সারাহ হান্টারের মতো অর্থনীতিবিদগণ বলেন, বেতন অধিক বাড়ানো হলে মূদ্রাস্ফীতির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে।

আর-বি-এ বলছে, তারা আশঙ্কা করছে মূদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে। অর্থাৎ, আগামী মাসগুলোতে বহু অস্ট্রেলিয়ান আর্থিক টানাপোড়েনে ভুগবেন।


প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন । 

আরও দেখুন:

Share