সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস (COVID-19) নিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই, তবে এটি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিভ্রান্তির জালে আটকে আছেন। এর প্রধান কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রমাণবিহীন তথ্য বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ আজিজ রহমান।
তিনি বলেন, "সোশ্যাল মিডিয়াতে যে তথ্যগুলো আমরা দেখি তা অনেক সময় অথেনটিক সোর্স থেকে আসে না। এজন্য অস্ট্রেলিয়া সরকারের ওয়েবসাইটগুলো থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেতে পারেন।"
তবে আতংকের পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়ে অনেকের মধ্যে উদাসীনতাও আছে। ডঃ রহমান বলেন, "কেউ কেউ এটি প্রতিরোধের বিষয়টিকে একদমই পাত্তা দিচ্ছেন না। এক্ষেত্রে সচেতনতা খুবই জরুরি।"
তিনি বলেন, "প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাত পরিষ্কার রাখা। এছাড়া যারা পর্যবেক্ষণের মধ্যে আছেন তাদের থেকে দূরত্বে থাকা, সোশ্যাল আইসোলেশন বা ডিস্টেন্সিঙের বিষয়টিকে যতটুকু সম্ভব মেনে চলা, বিশেষ করে এক্ষেত্রে ১.৫ মিটার দূরত্বের কথা বলা হয়েছে।"করোনাভাইরাস ঠেকাতে সচেতনতার পাশাপাশি পার্সোনাল হাইজিনের ওপর জোর দেয়ার কথা বলা হয়েছে সবচেয়ে বেশি, যার মধ্যে আছে সঠিক ভাবে হাত ধোয়া, কিন্তু একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে মাত্র ৫ ভাগ মানুষ সঠিকভাবে হাত ধোয় এবং তারা সবাই হাত ধুতে ১৫ সেকেন্ডের কম সময় নেয়।
ফেডারেশন ইউনিভার্সিটি অফ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অফ পাবলিক হেলথ এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ আজিজ রহমান Source: Supplied
এ বিষয়ে ডঃ রহমান বলেন, "অন্তত ২০ সেকেন্ড আপনাকে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। এক্ষেত্রে যদি দৃশ্যমান কোন ময়লা না থাকে তবে স্যানিটাইজার বা এলকোহল রাব দিয়েই পরিষ্কার করা যাবে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ময়লা হাত দিয়ে যাতে নাক মুখ ধরা না হয়, এতে ভাইরাস লাঙসে প্রবেশ করতে পারে, তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে হাত ধোয়াকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।"
সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে অনেক অভিভাবক দ্বিধাগ্রস্ত, এবিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ আজিজ রহমান বলেন, "অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে এমন কোন প্রমান পাওয়া যায়নি যে স্কুল বন্ধ করা হলে ভাইরাস সংক্রমণ হবে না। বিশ্বের ৭০টি দেশে স্কুল বন্ধ আছে, কিন্তু তাতে সংক্রমণ বন্ধ হয়েছে এমন কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। বরং স্কুল বন্ধ হলে হাসপাতালের বা স্বাস্থ্যসেবার সাথে জড়িত ডাক্তার-নার্স থেকে শুরু করে আইটি, কুক, ক্লিনারসহ সকল পর্যায়ের কর্মীদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে, কারণ সন্তানদের দেখাশোনার জন্য তাদের বাসায় থাকতে হবে। তবে অনেককেই বাসায় থেকে কাজ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।"
গণ পরিবহণ ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি সম্ভব হয় তবে তা এড়িয়ে চলা ভালো।
"আমরা জানিনা আমরা কাদের সাথে চড়ছি, আর যদি চড়তেই হয়, সম্ভব হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা উত্তম।"
ফেডারেশন ইউনিভার্সিটি অফ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অফ পাবলিক হেলথ এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ আজিজ রহমান মাস্ক ব্যবহার প্রসঙ্গে বলেন, অনেকেই না জেনে মাস্ক ব্যবহার করছেন।
"যারা সুস্থ তাদের মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। কারো যদি রেসপিরেটরি সিনড্রোম যেমন, হাঁচি কাশি সর্দি থাকে তবে তারা মাস্ক ব্যবহার করবেন। তবে হেলথ কেয়ার ওয়ার্কারদের মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে কারণ তারা রোগীদের সাহায্য করছেন। "
একই সাথে তিনি গ্লাভস ব্যবহারের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা উল্লেখ করে বলেন, গ্লাভস ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা যদি নাকে মুখে সেটা দিয়ে স্পর্শ করি তা হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সাধারণ মানুষের গ্লাভস ব্যবহারের কোন প্রয়োজন নেই।
পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে ওপরের ছবিতে ক্লিক করুন।
আরো পড়ুন: