ট্রেজারারের বাজেট উপস্থাপনের প্রতিক্রিয়া সবার মধ্যে অনেকটাই মিশ্র। যেমন ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব স্টুডেন্টস এর প্রেসিডেন্ট বেইলি রাইলি এবারের বাজেট থেকে আরও বেশি কিছু আশা করেছিলেন। তিনি বলেন, সহায়তার পরিমাণ একেবারেই স্বল্প। বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্যে আরও সহায়তা দরকার।
অস্ট্রেলিয়ার বাড়ি-ভাড়ার সংকট প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, যদিও এ দেশের অপ্রতিসম সমাজে আদিবাসী ও নারীরাই এই সমস্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। মাল্টিকালচারাল সেন্টার ফর উইম্যান্স এর প্রধান নির্বাহী ডক্টর অ্যাডেল মরডলো এই সমস্যার আশু সমাধানে জোর দিয়ে বলেন, বিশেষ করে অধিবাসী নারীদের জন্যে টিকে থাকা খুব কঠিন।
ডক্টর মরডলো এই সুবিধা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেবার দাবি জানান।
সরকার অস্ট্রেলিয়ার দক্ষ জনশক্তির ঘাটতি মেটাতে কাজ করে চলেছে এবং উৎপাদনশীল জনশক্তি নির্মাণ করতে অর্থ বরাদ্দ করেছে।
এদিকে আশ্রয়প্রার্থীদেরকে স্থায়ী সুরক্ষা দিতে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ বছরের ১৪ই ফেব্রুয়ারীর পূর্বে আবেদন করা টেম্পোরারি প্রটেকশন ভিসা বা টিপিভি (সাবক্লাস ৭৮৫) এবং সেফ হ্যাভেন এন্টারপ্রাইজ ভিসাধারীদের (SHEV-790) সরকার পারমানেন্ট ভিসা দেবে৷
সরকার ইমিগ্রেশন এসেসমেন্ট অথোরিটির জন্য সামনের অর্থবছরে চার মিলিয়ন ডলার অর্থ বরাদ্দ করেছে। এই বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে নতুন একটি ফেডারেল মূল্যায়ন কর্তৃপক্ষ তৈরির মাধ্যমে অকৃতকার্য প্রটেকশন ভিসা পুনরায় মূল্যায়ন করা হবে।
সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কাজ করা সংগঠন এসাইলাম সিকারস রিসোর্স সেন্টার। সংস্থাটির এডভোকেসি এন্ড ক্যাম্পেইন বিভাগের পরিচালক জানা ফাভেরো জানান, আশ্রয়প্রার্থীরা সামাজিক পরিষেবা থেকে এখনো বঞ্চিত রয়ে গেছে।
মাল্টিকালচারাল হেলথ ফান্ডে অর্থ বরাদ্দকে স্বাগত জানিয়েছেন ফেডারেশন অব এথনিক কমিউনিটিস কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মেদ আল- খাফাজি। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে দ্রব্যমূল্যকে সহনশীল করার দিকে অধিক মনোযোগ দেওয়া হয়েছে, তবে সেই সাথে বহুসাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্যখাতেও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
মোহাম্মেদ আল খাফাজি আরও বলেন, ফেডারেল সরকার নিরবে মাল্টিকালচারাল হেলথ কানেক্ট লাইন এর জন্য অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করেছে। এটি ছিল কোভিড-১৯ সংক্রান্ত অনুবাদ পরিষেবা, যার মাধ্যমে বহুসাংস্কৃতিক সম্প্রদায় নিজ নিজ ভাষায় করোনাভাইরাস সংক্রান্ত তথ্যসেবা পেত।
ক্রনিক রোগ বা দীর্ঘদিন ধরে রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরা এ বছরের সেপ্টেম্বর থেকে কম দামে ওষুধ কিনতে পারবেন।
ডক্টর চামার্স জানান, ফেডারেল সরকার ফার্মাসিউটিক্যাল বেনিফিট স্কিম বা পিবিএস ফান্ডে ২.২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে যার মাধ্যমে ওষুধ পরিষেবা বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু ডক্টর অ্যাডেল মরডলো জানান উপরোক্ত পিবিএস ওষুধ পরিষেবা সবাই পাবেনা, বিশেষ করে যারা অস্থায়ী ভিসায় রয়েছেন।
দেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য পূর্বঘোষিত “ক্লোজিং দ্য গ্যাপ” উদ্যোগে কয়েকশ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এ বছরের শেষ দিকে ভয়েস টু পার্লামেন্টের জন্য গণভোট আয়োজিত হবে, তার জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকছে। এর মাধ্যমে একটি জাতীয় কমিটি গঠিত হবে, তবে তার আগে আঞ্চলিক কমিটি গড়ে তোলা হবে।
লেবার দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা মূল্যস্ফীতি কমানোর প্রতি অধিক গুরুত্ব দিয়েছে একই সাথে অন্যান্য খাতের প্রতিও ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করেছে। সরকার সামনের দিনগুলোতে এই ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।