দেশে থেকে বাবা-মাকে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে আসতে হলে কী করতে হবে? অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী স্থায়ী এবং অস্থায়ী অভিবাসীদের প্রায় সবাই এ বিষয়ে জানতে চান। ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্সের এ বিষয়ে জানা যাবে।
Source: SBS
ভিজিটর ভিসা
ভিজিটর ভিসা, (ট্যুরিস্ট স্ট্রিম) এর মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে আবেদন করতে হবে। ভিসা ফিজ ১৪০ ডলার। ১২ মাস পর্যন্ত থাকা যাবে। অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের যোগ্য বাবা-মা এর চেয়ে লম্বা সময়ের জন্যও থাকার অনুমতি পেতে পারেন।
(স্পন্সর্ড ফ্যামিলি স্ট্রিম) এর মাধ্যমে ১২ মাস পর্যন্ত থাকা যাবে। ভিসা ফিজ ১৪০ ডলার। স্পন্সরকে সিকিউরিটি বন্ড জমা রাখতে হতে পারে।
স্থায়ী ভিসা
ভিসা (প্যারেন্ট ভিসা) এবং (পার্মানেন্ট প্যারেন্ট কন্ট্রিবিউটোরি) ভিসার মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
সাবক্লাস ১০৩ (প্যারেন্ট ভিসা) এর ক্ষেত্রে বর্তমানে ছয় বছর থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত সময়কাল অপেক্ষা করতে হয়।
সাবক্লাস ১৪৩ (পার্মানেন্ট প্যারেন্ট কন্ট্রিবিউটোরি) ভিসার জন্য বড় অঙ্কের ফিজ জমা দিতে হয়। আগে এই ভিসার জন্য সময় লাগতো প্রায় ১৮ মাস। আজকাল চার বছরেরও বেশি সময় লাগে।
Immigration Minister David Coleman with Australian PM Scott Morisson. Source: AAP
টেম্পোরারি স্পন্সরড প্যারেন্ট ভিসা
২১ জুন ২০১৬ তারিখে অস্ট্রেলিয়া সরকার প্যারেন্টদের জন্য নতুন একটি ভিজিটর ভিসা চালু করার পরিকল্পনা পেশ করে।
বলা হয়েছিল The Temporary Sponsored Parent Visa নামের এই ভিসাটির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ও স্থায়ী অভিবাসীরা এবং নিউজিল্যান্ডের যোগ্য নাগরিকরা তাদের প্যারেন্টদেরকে লম্বা সময়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় এনে রাখতে পারবেন। তারা অস্ট্রেলিয়ার হেলথ কেয়ার সিস্টেমের ওপর বোঝা হবেন না।
এ সংক্রান্ত একটি বিল [The Migration Amendment (Family Violence and Other Measures) Bill 2016] গত ২৮ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে সংসদে পাশ হয়। ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স এর (সর্বশেষ আপডেট ২০ ডিসেম্বর ২০১৮) বলা হয়েছে যে, এই ভিসাটি চালু করা হবে ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে। তবে, এখন পর্যন্ত এটি চালু হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায় নি।
এই ভিসা চালু হলে একটানা পাঁচ বছর পর্যন্ত প্যারেন্টদেরকে অস্ট্রেলিয়ায় রাখা যাবে। দ্বিতীয় বার আরও পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন করা যাবে। পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি লাভের কোনো পাথওয়ে নেই। মেডিকেয়ার নেই। হেলথ ইনস্যুরেন্স লাগবে। ভিসা ফিজ:
তিন বছরের জন্য ৫ হাজার ডলার।
পাঁচ বছরের জন্য ১০ হাজার ডলার। একই ফিজ দিয়ে আরও পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন করা যাবে।
দু’টি ধাপে এই ভিসার আবেদন করতে হবে বলে জানা গেছে। প্রথমে সন্তানকে স্পন্সর হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। যারা প্যারেন্টদেরকে স্পন্সর করতে চান তাদেরকে প্যারেন্টদের ফাইনান্সিয়াল গ্যারান্টর হতে হবে এবং তাদের পেছনে মেডিক্যাল ইমার্জেন্সির ক্ষেত্রে সরকারের যে খরচ হবে সেসবও পরিশোধ করতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপে, মূল আবেদনকারী প্যারেন্টরা আবেদন করতে পারবেন।
এই ভিসা সম্পর্কে ইমিগ্রেশন মিনিস্টার ডেভিড কোলম্যান বলেছিলেন, এর মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে থাকতে পারবেন। বাবা-মা এবং দাদা-দাদী/নানা-নানীরাও এই পাথওয়ের মাধ্যমে তাদের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন।অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টি শুরুতে এই ভিসার পক্ষে ছিল। কিন্তু, পরবর্তীতে লিবারাল সরকার যখন কিছু সংশোধনীসহ এই বিলটি সংসদে উত্থাপন করে তখন তারা এর বিরোধিতা করে।
Source: AAP
লেবার দল এ সম্পর্কে বলেছে, তারা শুধু এই সংশোধনীগুলোরই বিরোধিতা করছে। তারা বিশেষভাবে ঋণ আদায়ের (ডেট রিকভারি পাওয়ার) বিষয়টির বিরোধিতা করছে।
এই ভিসার জন্য এতো বড় অঙ্কের ফিজ রাখায় তোপের মুখে পড়েছে সরকার। কেউ কেউ বলছেন, বাবা-মাকে দু’বছরের জন্য ভিজিটর ভিসায় আনতে এতো খরচ হয় না এবং সেক্ষেত্রে এতো ঝামেলাপূর্ণ শর্তাবলীও নেই। শুধু মোটা অঙ্কের ভিসা ফিজই নয়, এক্ষেত্রে প্রাইভেট হেলথ ইনস্যুরেন্সের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা হলো তা হচ্ছে, এই ভিসায় বিশ হাজার ডলার ফিজ দিয়ে, মোটা অঙ্কের হেলথ ইনস্যুরেন্স বিল দিয়ে দশ বছর সময়কাল অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করলেও এতে স্থায়ী অভিবাসনের কোনো পাথওয়ে রাখা হয় নি।
সরকার আশা করছে এর মাধ্যমে চাইল্ডকেয়ার খাতের খরচ কমানো সম্ভব হবে, কারণ, দাদা-দাদী/নানা-নানীরা শিশুদের দেখাশোনা করতে পারবেন।
কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, দুই বছরের জন্য ভিসার ফিজ যেখানে ১৭০ ডলার সেখানে তিন বছরের জন্য কেন মানুষ ৫ হাজার ডলার ফিজ দিবে?