সিডনির বিভিন্ন স্থানে পরিচ্ছন্নতা-কর্মী হিসেবে দু’বছর ধরে কাজ করছেন সৌরভ। নেপাল থেকে আসা এই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে কাজ করেন। কিন্তু, সরকারের আনা পরিবর্তনের কারণে, ২২ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থীকে এখন অন্য কাজ খুঁজতে হবে।
কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর আগে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি ছিল। কিন্তু, সীমান্তগুলো বন্ধ হওয়ায় এবং ব্যবসাগুলোতে কর্মী-সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় এ সংক্রান্ত নিয়মগুলো শিথিল করা হয়।
কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্বাস্থ্য-সেবা, বয়স্কসেবা, প্রতিবন্ধী-সেবা এবং শিশু-সেবা খাতগুলোতে শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক কাজের সর্বোচ্চ সীমা তুলে নেওয়া হয়। এসব খাতে তারা আনলিমিটেড আওয়ার কাজ করতে পারছেন।
মে মাসে, সরকার এই তালিকায় টুরিজম ও হসপিটালিটি খাত যুক্ত করে। কিন্তু, এতে ক্লিনিং ইন্ডাস্ট্রি অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি।
READ MORE
নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
বাণিজ্যিক ক্লিনিং কোম্পানি ক্লিনকর্পের লিসা ম্যাককুইন বলেন, এই সিদ্ধান্তের গুরুতর প্রভাব পড়েছে এই খাতটিতে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এটি অন্যতম বৃহৎ একটি খাত। এই খাতের অন্তত ৩০ শতাংশ পূরণ করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা।
ক্লিনকর্প বলছে, ইতোমধ্যে তারা তাদের ২০ শতাংশ কর্মী হারিয়েছে, যারা অন্য খাতে চলে গিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলছে যে, এসব পরিবর্তনের ফলে হোটেল ও অফিসগুলো কোভিড সংক্রমণের মুখে অসহায় অবস্থায় পড়বে।
ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের অ্যান্থোনি বার্ন বলেন, এটি সত্যিই উদ্বেগের বিষয়।
এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়টিতে, স্বাস্থ্য-সেবা, কৃষি এবং বয়স্ক-সেবা খাতের কর্মীদের মতো পরিচ্ছন্নতা-কর্মীরাও সম্মুখসারির কর্মী হিসেবে বিবেচিত। অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে এদের গুরুত্ব রয়েছে। তবে, সরকার যে-সব পরিবর্তন এনেছে, তাতে মনে হচ্ছে, ক্লিনিং ইন্ডাস্ট্রির কথা তারা ভুলে গেছে।
মিস্টার বার্নস বলেন, এই খাতের কর্মীদেরকে প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়।
বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
হোম অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র এসবিএস নিউজকে বলেন:
“স্টুডেন্ট ভিসাধারীদেরকে অন্যান্য খাতেও কাজের সীমার শর্ত তুলে দেওয়ার বিষয়ে সরকার হয়তো সিদ্ধান্ত নিবে। কর্মী-স্বল্পতা, অস্ট্রেলিয়ান কাজগুলোর স্থানচ্যূতি এবং কর্মীদেরকে ঠকানো বন্ধ করার বিষয়গুলো সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।”
ক্লিনিং ইন্ডাস্ট্রি ও এ খাতের কর্মীরা এত্থেকে কিছুটা আশাবাদী হতে পারেন।
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।