১৯৭০ সালে প্রথম যখন এটি চালু হয়, মেলবোর্নের অত্যাধুনিক বিমানবন্দরটি তখন আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল।
তবে টুলামারিন বিমানবন্দরের নিয়মিত যাত্রীরা খুব ভাল করেই জানেন এর মূল সমস্যা, এখানে পৌঁছাতে বা এখানে নেমে মূল মেলবোর্ন শহরে যেতে আস্থা রাখার মতন কোনো গণপরিবহন সার্ভিস নেই।
কিন্তু সম্প্রতি ভিক্টোরিয়ান সরকারের একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রকল্পের সিদ্ধান্ত সবুজ সংকেত পেয়েছে, যার ফলে এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি মূল শহরে ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রতিদিন বিমানবন্দরে আসা প্রায় এক লক্ষ যাত্রীর যাতায়াত ও ভ্রমণ সহজ হবে।
এই প্রকল্প প্রায় ৫১ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে, এবং বর্তমানে ফেডারেল সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় রানওয়ে সমাপ্তির পরে প্রতি বছর স্টেটের অর্থনীতিতে ৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার যুক্ত করবে।
মেলবোর্ন এয়ারপোর্টের প্রধান নির্বাহী লরি আরগাস বলেছেন, তারা স্টেশনটিকে আন্ডারগ্রাউন্ড হিসেবে তৈরির দাবি থেকে সরে এসেছেন।
বছরের পর বছর বিলম্ব এবং অচলাবস্থার পরে অবশেষে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ এই সমঝোতার ঘোষণা দিলো।
বিমানবন্দরে রেল স্টেশনের ব্যাপারটি এই বছর ভিক্টোরিয়ান স্টেট বাজেটের সময় নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে।
ট্রেজারার টিম প্যালাস টুলামারিনের পরিবর্তে ভিক্টোরিয়ার দ্বিতীয় ব্যস্ততম জিলংয়ের ডোমেস্টিক এয়ারপোর্ট অ্যাভালনের সাথে রেল সংযোগ নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করার হুমকি দিয়েছিলেন।
গত মাসে ফেডারেল সরকারের নিয়োগকৃত মধ্যস্থতাকারী নিল স্কেলস ভূগর্ভস্থ রেল স্টেশন নির্মাণের বিপক্ষে সুপারিশ করেন, যদি না বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এর সপক্ষে আরও শক্তিশালী যুক্তি দিতে পারে।
ভিক্টোরিয়ার প্রিমিয়ার জাসিন্টা অ্যালান বলেছেন,
সরকারের সোমবারের ঘোষণার ঠিক আগের দিন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে।
লরি আরগাস বলেন, রেল লাইন নির্মান সমাপ্ত হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ২০৩৩ হলেও, তাদের দাবি পরিবর্তনের কারণে স্টেট সরকার তার বহু আগেই প্রকল্পটি সমাপ্ত করার সম্ভাবনা বেড়েছে।
কিন্তু প্রিমিয়ার জাসিন্টা অ্যালান ১০ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্প সমাপ্তির তারিখ নিয়ে এখনি নিশ্চিত কিছু বলতে চান না।
এর ফলে মেলবোর্ন এখনও অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য স্টেটের রাজধানী শহরগুলির তুলনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে।
সিডনির বিমানবন্দর রেল লিংকের নির্মাণ কাজ ১৯৯৫ সালে শুরু হয়েছিল এবং ২০০০ সালের অলিম্পিকের আগেই ঠিক সময়মতো শেষ হয়েছিল।
ব্রিসবেন বিমানবন্দরের রেল লিংকটি ১৯৯৯ সালে শুরু হয়ে মাত্র দুই বছর পরে অর্থাৎ ২০০১ সালের মধ্যে শেষ হয়েছিল।
টুলামারিন এয়ারপোর্টের সর্বশেষ যাত্রী পরিসংখ্যান বলছে ২০৪২ সালের মধ্যে এই বিমানবন্দর ব্যবহারকারীদের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে বছরে ৭৬ মিলিয়নে উন্নীত হবে, যা মূল শহরের সাথে একটি রেল লিংক থাকার প্রয়োজনীয়তাকেই জোরালো করছে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারে ক্লিক করুন