অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারগুলোর অবস্থা নিয়ে কমনওয়েলথ অমবুডজম্যান উদ্বিগ্ন

Villawood Detention Centre signage and exterior

Villawood Detention Centre signage. Commonwealth Ombudsman report details concerns over detention compounds. Source: AAP

অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারগুলোর অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে কমনওয়েলথ অমবুডজম্যান একটি রিপোর্টে। আর এই রিপোর্টটিকে স্বাগত জানিয়েছেন শরণার্থী সমর্থকরা। অমবুডজম্যান মাইকেল ম্যানথ্রপ এই রিপোর্টটিতে বেশ কয়েকটি সুপারিশ পেশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে সিডনির ভিলাউড ডিটেনশন সেন্টারটি বন্ধ করার কথা।


অস্ট্রেলিয়ার অনশোর ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে জীবনধারণের পরিস্থিতি নিয়ে কমনওয়েলথ অমবুডজম্যান মাইকেল ম্যানথ্রপ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন। এই রিপোর্টটি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তুলে ধরেছে, যেসবের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে শরণার্থী সমর্থকরা।

২০১১ সাল থেকে ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারগুলো পরিদর্শন করছে কমনওয়েলথ অমবুডজম্যান অফিস এবং তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে এর সার-সংক্ষেপ তুলে ধরছে।

কিন্তু, এ বছর এই প্রতিবেদনটি জনসমক্ষে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন অমবুডজম্যান।

তিনি বলেন, জাতিসঙ্ঘের অধীনে Optional Protocol to the Convention against Torture and Other Cruel, Inhuman and Degrading Treatment or Punishment নামে পরিচিত একটি প্রটোকলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার দায়িত্বাবলীর সঙ্গতি রাখার জন্যই এ ব্যবস্থা।

২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়া এই প্রটোকলটি অনুসমর্থন করে। গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বেশ কয়েক দফা পরিদর্শন করার পর অমবুডজম্যান এই উপসংহারে পৌঁছান যে, ভিলাউডে ব্লাক্সল্যান্ড হাই সিকিউরিটি কম্পাউন্ডটিতে ছাড়া অন্যান্য সেন্টারে আটক-ব্যক্তিদের আবাসন-ব্যবস্থা যথাযথ।

এর প্রতিক্রিয়ায় ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স বলছে, ব্লাক্সল্যান্ড খালি করার কাজ এ বছর শুরু হবে। তবে, রিফিউজি অ্যাকশন কোয়ালিশনের ইয়ান রিন্টোল এ নিয়ে সন্দিহান।

ইমিগ্রেশন ডিটেনশন নেটওয়ার্কে বন্দিদেরকে ১১ ধরনের উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলে অমবুডজম্যান চিহ্নিত করেন। আবদ্ধ ব্যক্তিদের যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আরও ভালভাবে তথ্য সংরক্ষণ করার সুপারিশ করেন তিনি।

রিফিউজি অ্যাকশন কোয়ালিশনের ইয়ান রিন্টোল বলেন,  আটক ব্যক্তি যদি নিরাপত্তার জন্য কোনো ঝুঁকি না-ও হন তারপরও তাদেরকে নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত হাত-কড়া ব্যবহার করা হয়।

ডিটেনশনের বিকল্প স্থানগুলোরে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন অমবুডজম্যান।

ব্রিসবেন এবং মেলবোর্নের হোটেলগুলোতেও অনেক সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে বলেন তিনি।

মিস্টার রিন্টোল বলেন, বিকল্প স্থানগুলোর অবস্থা ডিটেনশন সেন্টারগুলোর চেয়েও খারাপ।

জেসুইট সোস্যাল সার্ভিসেস বলছে, ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারগুলোর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তারা চিন্তিত। দর্শণার্থীদের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এগুলোর নিয়ম-কানুন অস্বচ্ছ এবং এগুলো প্রয়োগ করা হয় ইচ্ছে মতো।

মেলবোর্ন, সিডনি এবং ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে যারা দেখা করতে গিয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে অ্যান্ড্রিউ ইয়ুল বলেন, কোনো কোনো বিধি-নিষেধ অনেক কঠোর।

ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে বন্দি ব্যক্তিদের জন্য অমবুডজম্যান উদ্বিগ্ন।  অদূর-ভবিষ্যতে এরা মুক্তি পাবেন এমন কোনো সম্ভাবনাও নেই।

মিস্টার ইয়ুল বলেন, ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে দীর্ঘ দিন ধরে লোকেরা বন্দি হয়ে আছে।

অমবুডজম্যানের রিপোর্টটিতে করা বিভিন্ন সুপারিশ সম্পর্কে অভিমত জানিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স। রিপোর্টটির শেষে সংযুক্ত অংশে এগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।

সামগ্রিকভাবে, ডিপার্টমেন্ট বলছে, বেশিরভাগ সুপারিশের সঙ্গে তারা একমত। আর, সবগুলো সুপারিশই তারা পুরোপুরি কিংবা আংশিকভাবে গ্রহণ করেছেন।

প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share