গত বছর সহস্রাধিক ভারতীয় শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে অস্ট্রেলিয়া

২০১৯ সালে সহস্রাধিক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে অস্ট্রেলিয়া। ভুয়া কাগজপত্র এবং ভিসার শর্তসমূহ মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়া সহ বিভিন্ন কারণে তাদের ভিসা বাতিল করা হয়। ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স-এর তথ্য মতে, ১,১০০ এরও বেশি ভারতীয় শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তালিকায় ভারতের পরেই রয়েছে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া।

Travel ban forced people to cancel their trip to Australia.

Travel ban forced people to cancel their trip to Australia. Source: SBS

অস্ট্রেলিয়ায় আসার ছয় মাস পর ভারতীয় শিক্ষার্থী লবপ্রীত সিং-এর ভিসা বাতিল করা হয়। কারণ, ভিসার শর্ত অনুসারে তিনি একটি রেজিস্টার্ড কোর্সে ভর্তি হতে ব্যর্থ হয়েছেন।

২০১৯ সালের মে মাসে তার ভিসা বাতিল করার সময়ে ট্রাইবুনাল দেখতে পেয়েছে যে, তিনি প্রকৃত শিক্ষার্থী ছিলেন না এবং পড়াশোনার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় বাস করাটা তার উদ্দেশ্য ছিল না।

ট্রাইবুনালের সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে বহাল রাখে ফেডারাল সার্কিট কোর্ট অফ অস্ট্রেলিয়া। কোর্ট পুনর্ব্যক্ত করে যে, মিস্টার সিং তার শিক্ষার্থী ভিসার শর্তাবলী ‘তাৎপর্যপূর্ণভাবে’ লঙ্ঘন করেছেন।

ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স-এর প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, অস্ট্রেলিয়া সরকার গত অর্থ-বছরে প্রায় ১৮,০০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে।
Australian Student Visa
Australian Student Visa. Source: AAP/Julian Smith
আরও জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থ-বছরে ১,১৫৭ জন ভারতীয় শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল হওয়ার দিক থেকে এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীন (৪,৬৮৬) এবং দক্ষিণ কোরিয়া (১,৫০৩)।

মেলবোর্ন-ভিত্তিক মাইগ্রেশন এজেন্ট নভজোত সিং কৈলায় এসবিএস পাঞ্জাবি-কে বলেন, ভিসা বাতিল হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো “ভিসা-শর্ত মেনে চলায় ব্যর্থ” হওয়া।

“আমরা যখন মেনে চলার কথা বলি তখন কাজ করার শর্তগুলো বড় বিষয়। ভারতীয় শিক্ষার্থীরা প্রায়ই অনুমোদিত সাপ্তাহিক ২০ ঘণ্টা কাজের চেয়ে বেশি কাজ করে, যা কিনা নিয়মের লঙ্ঘন।”

“শিক্ষার্থীরা আরও একটি নিয়মের লঙ্ঘন করে থাকে। এটা হলো তারা তাদের পরিবর্তিত পরিস্থিতি সম্পর্কে যথাবিধি ১৪ দিনের মধ্যে ডিপার্টমেন্টকে অবহিত করতে ব্যর্থ হয়।”

“এ ছাড়া, কখনও কখনও শিক্ষার্থীরা যথোপযুক্ত নয় এ রকম পর্যায়ের কোর্সে ভর্তি হয়। এর ফলেও তাদের CoE (Confirmation of Enrolment) বাতিল হয়।”

নভজোত সিং কৈলায় আরও বলেন, ভিসা-আবেদনের ক্ষেত্রে “ক্যারেক্টার রিকয়ারমেন্ট” এর শর্ত পূরণে ব্যর্থতা এবং ভুয়া কাগজ-পত্র জমা দেওয়ার কারণেও ভিসা বাতিল করা হয়ে থাকে।

তবে, ২০১৯ সালে ভিসা বাতিলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও এডুকেশন এবং মাইগ্রেশন এজেন্টরা এখনও এ নিয়ে শঙ্কিত হচ্ছেন না।

ভারত-ভিত্তিক একজন এডুকেশন এজেন্ট হরবিন্দার সিং খায়রা বলেন, যেসব ভারতীয় শিক্ষার্থী ভিসার শর্ত মেনে চলছেন তাদের ভিসা বাতিল হওয়া নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

এসবিএস পাঞ্জাবি-কে তিনি বলেন,

“২০১৮-১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ১০০,০০০ এর অধিক ভারতীয় শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। (এদের মধ্য থেকে) ১,১৫৭ জনের ভিসা বাতিল হওয়ায় শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”

“আর এদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো অফশোর এবং এমন শিক্ষার্থীরাও আছেন যারা স্বেচ্ছায় ভিসা বাতিল করিয়েছেন।”
93 per cent of international students suffering poor mental health due to no on-campus study, survey finds
International students studying in Australia. Source: AAP
বাতিল হওয়া ১৭,৮১৯ টি ভিসার মধ্যে ৮,৯১৩ জন পুরুষ এবং ৬,১২৯ জন নারী। এদের সবার বয়সই ১৮ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে।

মিস্টার খায়রা আরও বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন শিক্ষার্থীরা অবশ্যই জানেন যে, ভিসার নিয়মাবলীর লঙ্ঘন করা হলে তার ফল কী রকম গুরুতর হয়। তবে তিনি মনে করেন, যারা অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যয়ন করার জন্য আসতে চান, তাদের এ নিয়ে নিরুৎসাহিত হওয়া ঠিক হবে না।

মালয়শিয়া এবং ব্রাজিলেরও বহু শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে ইংরেজিতে আরও পড়ুন এই

Follow SBS Bangla on .

Share
Published 20 February 2020 1:14pm
Updated 21 February 2020 8:43am
By Avneet Arora
Presented by Sikder Taher Ahmad


Share this with family and friends