চীনের মন্ত্রীসভা ঘোষণা করেছে তারা লুনার নিউ ইয়ার হলিডে আরও তিন দিন বাড়িয়ে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিয়ে যাবে। নতুন ধরনের ভাইরাস করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই সিদ্ধান্ত।
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে এ পর্যন্ত অর্ধ-শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সেখানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২ হাজার লোক সংক্রমিত হয়েছে।
চীনের হুবেই প্রদেশে এই ভাইরাসটির উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাইরাস ছড়ানোর হার কমানোর জন্য সেই প্রদেশটিকে এখন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হচ্ছে।
প্রদেশটির রাজধানী উহান-এ অপ্রয়োজনীয় গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া, শ্যান ডং প্রদেশ, বেইজিং, সাংহাই, শিয়ান এবং তেইন জিং-এ দীর্ঘ পথের বাস-চলাচল বাতিল করা হয়েছে। আর, গুয়ান ডং ও জিয়াংশি-তে অভিবাসীদেরকে জনসমক্ষে ফেস-মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রী মিস্টার মা শাইওয়ে বলেন, মানুষের মাঝে কীভাবে এতো সহজে এই ভাইরাসটি বিস্তৃত হচ্ছে তা পরিষ্কার নয়।
তিনি বলেন, এই ভাইরাসটি SARS এর মতো শক্তিশালী না হলেও এর ঝুঁকি সম্পর্কে এখনো ভালভাবে জানা যায় নি।
নিউ সাউথ ওয়েলসে সোমবার পর্যন্ত ৩ ব্যক্তির এবং ভিক্টোরিয়ায় এক ব্যক্তির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা আরও একজন বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে নিউ সাউথ ওয়েলস হেলথ অথরিটি।
নিউ সাউথ ওয়েলস হেলথ মিনিস্টার Brad Hazzard বলেন, এ রাজ্যে তিন ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালে কোয়ারান্টাইন করে রাখা হয়েছে। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল।
তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণকারী চীনা ব্যক্তিদেরকে এই ভাইরাসের ফ্লুর মতো লক্ষণগুলোর জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
একই রকম মত পোষণ করেন অস্ট্রেলিয়ার চিফ মেডিকেল অফিসার Brendan Murphy.
উহানে এবং হুবেই প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত শত শত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিককে ঘরে ফিরিয়ে আনতে চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারাল সরকার।
হেলথ মিনিস্টার গ্রেগ হান্ট এবিসি-কে বলেন, ১১ মিলিয়ন লোক সেই শহরটিতে বসবাস করে, যাদের মধ্যে ১০০ জন তরুণ অস্ট্রেলিয়ানও রয়েছে।
এদিকে, বিশ্বের অন্যান্য দেশে থেকেও এই ভাইরাসটির সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৫ ব্যক্তির সংক্রমিত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তাইওয়ানে ৪ জন, পোল্যান্ড এবং কানাডায় একজন করে এবং সাউথ কোরিয়ায় ৩ জন।
সাউথ কোরিয়ার Disease Control and Prevention এর ডাইরেক্টর Jeong Eun-Kyeong বলেন, তাদের দেশে কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে।
ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানও চেষ্টা করছে উহান থেকে তাদের নাগরিকদেরকে সরিয়ে নিতে।
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।