বাংলাদেশের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আওয়ামী লীগের

Bangladesh Prime Minister Sheikh Hasina

Bangladesh Prime Minister Sheikh Hasina flashes a victory sign as she speaks to the media persons after casting her vote in Dhaka, Bangladesh, Dec. 30, 2018. Source: AP Photo/Anupam Nath

গত রবিবার বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংসদের মোট ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে ভোট গ্রহণ করা হয়। এতে ২৮৮টি আসনে বিশাল জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। এর মধ্যে ২৫৯টি আসনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেছে আওয়ামী লীগ।


গত রবিবার বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংসদের মোট ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে ভোট গ্রহণ করা হয়।

নির্বাচনের আগে গাইবান্ধা-৩ আসনের এক প্রার্থী নিহত হওয়ায় সেই আসনে ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ভোটের ফলাফল স্থগিত রাখে নির্বাচন কমিশন। বাকি ২৯৮টি আসনের ফল ঘোষণা করে কমিশন।

এতে ২৮৮টি আসনে বিশাল জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। এর মধ্যে ২৫৯টি আসনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেছে আওয়ামী লীগ। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২০টি আসন। বিএনপি পেয়েছে ৫টি আসন।
Ershad
Hussain Mohammad Ershad. Source: AFP
অন্যান্য দলগুলোর মধ্যে স্বতন্ত্র ৩টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, জাসদ ২টি, বিকল্পধারা ২টি, গণফোরাম ২টি, তরিকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টি জেপি পেয়েছে ১টি করে আসন।

নির্বাচনে বিশাল জয় লাভের ফলে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা।

এই নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া, সারা দেশে নির্বাচনী সহিংসতায় অসংখ্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

২১ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি-র নেতৃত্বাধীন জোট। এ ছাড়া কয়েকটি কেন্দ্রে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও তাদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার সমালোচনাও করেছে বিএনপি।

নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ফলাফল বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছে তারা।
Dr Kamal Hossain
Dr Kamal Hossain, Bangladeshi lawyer and leader of the National Unity Front Alliance, attends a media conference on the eve of the general election in Dhaka. Source: AFP
রবিবার রাতে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন,

“দেশের প্রায় সব আসন থেকে একই রকম ভোট ডাকাতির খবর এসেছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন দলের শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। এ অবস্থায় আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে এ প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক।”

তিনি এ নির্বাচনের ‘কথিত’ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনর্নির্বাচন দাবি করেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ নির্বাচন প্রমাণ করে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়া তাদের জন্য ভুল সিদ্ধান্ত ছিল না।

ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিবিসি বাংলাকে তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,

“এটা তো নির্বাচন হয় নি। এটা একটা প্রহসন। একটা তামাশা হয়েছে।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসি বাংলাকে আরও বলেন,

“কীভাবে শক্তি ব্যবহার করতে হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে, তার এক নতুন নমুনা দেখলাম আমরা। আমরা কখনোই এ রকম নির্বাচন অতীতে দেখি নি। যেখানে পুলিশ, র‌্যাব, প্রশাসন - সবাই মিলে নির্বাচন করছে। আওয়ামী লীগ তো গৌণ। মূল কাজ করেছে পুলিশ আর র‌্যাব।”
Bangladesh Nationalist Party (BNP) chairperson Khaleda Zia and Mirza Fakhrul Islam Alamgir (R) (File Image).
Bangladesh Nationalist Party (BNP) chairperson Khaleda Zia and Mirza Fakhrul Islam Alamgir (R). Source: AFP
ঐক্যফ্রন্টের লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে সরকার দলীয়দের হামলায় ১৭ প্রার্থী আহত, প্রায় ১৪ হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক আহত হন।

তারা আরও অভিযোগ করেন, নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সহায়তায়

নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্সে ভরে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এজেন্টদের বের করে দেওয়া, বুথ তালা মেরে রাখাসহ মারধরেরও অভিযোগ করেন তারা।

দেশের ছয়টি আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন অকেজো থাকায় ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার অভিযোগ করে ঐক্যফ্রন্ট।

প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম ভোটে কারচুপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।

প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share