শ্রেণিকক্ষে চ্যাট জিপিটি নিষিদ্ধ করা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষাবিদরা যা ভাবছেন

EDUCATION SCHOOL STOCK

The use of artificial intelligence in classrooms as learning tool has it pros and cons, according to educators. (AAP) Source: AAP / PAUL MILLER/AAPIMAGE

নকল আর প্লেজারিজম বা কুম্ভিলতার আশংকায় অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি রাজ্যে চ্যাট জিপিটির মত প্রযুক্তি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কী ভাবছেন তা নিয়ে এই প্রতিবেদন।


মানুষের জীবনের নানা ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। প্রযুক্তি নির্ভর আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমতার ব্যবহার অনেকদিন ধরেই হয়ে আসছে। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির ব্যবহার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত প্রযুক্তি হচ্ছে চ্যাট জিপিটি যা এই বিতর্ককে আরও উস্কে দিয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীরা চ্যাট জিপিটিকে ব্যাপক হারে ব্যবহার করছে। চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে গাণিতিক সমাধান, কোডিং, একাডেমিক রচনা সহ সৃজনশীল রচনা, যেমন ছোট গল্প নিমেষেই লিখে ফেলা যায়।

ফ্লিন্ডারস ইউনিভার্সিটির ক্রিয়েটিভ রাইটিং বা সৃজনশীল রচনার শিক্ষক এবং পুরস্কার বিজয়ী লেখক ডক্টর শন উইলিয়ামস বলেন, চ্যাট জিপিটির মত টুলের উপর অতি নির্ভরশীলতা মানুষের সৃজনশীলতাকে ধ্বংস করতে পারে। তিনি আরও যোগ করেন, চ্যাট জিপিটি মানুষের শেখানো ভাষা, জ্ঞান, প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে মানুষেরই অনুকরণ করতে পারে শুধু, জ্ঞান সৃজন করতে পারে না।
Artificial intelligence
Source: Pixabay / Pixabay/ sujins
ভিক্টোরিয়া, নিউ সাউথ ওয়েলস, কুইন্সল্যান্ড, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া এবং তাসমানিয়ার পাবলিক স্কুলগুলোতে চ্যাট জিপিটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্কুল প্রাঙ্গণে ইন্টারনেটে ফায়ারওয়াল ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট সাইটে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে।

 ডিকিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও কারিকুলাম ডিজাইনার ডক্টর লুসিন্ডা ম্যাকনাইট জানান,

অন্তত গত দুই বছর ধরে স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে একাডেমিক প্রবন্ধ লিখছে এবং তা জমা দিচ্ছে। এভাবে লেখা প্রবন্ধ শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব।
প্লেজারিজম নির্ণয় করার অনলাইন সার্ভিস টার্নিট ইনের এশিয়া প্যাসিফিক ভাইস প্রেসিডেন্ট জেমস থর্লি মনে করেন, এ আই প্রযুক্তিকে এড়ানোর কোন উপায় নেই। তাকে গ্রহণ করেই অগ্রসর হতে হবে।

এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর নৈতিক ও কার্যকর উপায় শেখানোর দায়িত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।

ডক্টর ম্যাকনাইট বলেন, “এ আই ” প্রযুক্তির উপকারীতা ও প্রায়োগিক দিক ভুলে যাওয়া যাবে না। এই প্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রিকে নতুন রুপ দিতে পারে।

System Artificial intelligence chatbot , Business woman using Smartphone With ChatGPT Chat Bot AI , Technology smart robot Ai Chat GPT application software , robot application Chat GPT
System Artificial intelligence chatbot , Business woman using Smartphone With ChatGPT Chat Bot AI , Technology smart robot Ai Chat GPT application software , robot application Chat GPT Source: iStockphoto / picture/Getty Images/iStockphoto

ডক্টর উইলিয়াম বলেন, যেসব শিক্ষার্থী ইংরেজী ভাষায় দক্ষতা অর্জন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের উপকারে আসতে পারে এআই প্রযুক্তি।

 “বানান যাচাই করার স্পেল চেকার, পকেট ক্যালকুলেটর এবং ওয়ার্ড প্রসেসর — এসব খুবই শক্তিশালী টুল বা ব্যবহার্য হাতিয়ার। মানব দক্ষতার সম্পূরক এসব হাতিয়ার ব্যবহার মানুষের উপকারে আসতে পারে বিশেষ করে ইংরেজী যাদের মাতৃভাষা নয়। তারা এই টুল ব্যবহার করে সঠিক ব্যাকরণে লেখা লিখতে সক্ষম হবে।“

 নিঃসন্দেহে "এ আই" বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সহ সর্বত্র কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে এনেছে। আমরা একে এড়ানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু আসলে কী আমরা একে এড়িয়ে চলতে পারি?

একাডেমিক ইন্টেগ্রিটি বা শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈতিকতার চর্চাকে সম্মুনত রেখে “এ আই” ব্যবহারের চ্যালেঞ্জ মুকাবিলা করা সম্ভব বলে মনে করেন ডক্টর ম্যাকনাইট। তাই প্রযুক্তির ব্যবহার বন্ধ না করে শিক্ষা গ্রহণ ও শিক্ষাদানে সংশ্লিষ্ট সবার নৈতিক মান উন্নত করা দরকার।

প্রতিবেদনটি শুনতে ক্লিক করুন উপরের অডিও প্লেয়ার বাটনে।

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।

রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 


Share