অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল বাজেট ২০২০, করোনাভাইরাসের মন্দা থেকে বের করে আনতে চান ট্রেজারার যশ ফ্রিডেনবার্গ

অস্ট্রেলিয়াকে করোনাভাইরাসজনিত মন্দা থেকে বের করে আনার প্রত্যয় নিয়ে ইতিহাসের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ফেডারেল বাজেট ঘোষণা চলছে। ইন্টারেস্ট রেট ০.২৫ শতাংশে স্থির থাকল।

Tresurer Josh Frydenberg and Prime Minister Scott Morrison

Source: AAP

এবারের বাজেটের মূল ফোকাস নারী ও তরুণদের কল্যাণ

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবারের বাজেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  এবারের বাজেটের মূল ফোকাস নারী ও তরুণদের কল্যাণ, বিশেষ করে যারা করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। 

এই বিরাট স্বাস্থ্য সংকটে যারা কাজ হারিয়েছেন তার ৫০ ভাগই নারী, তরুণ অস্ট্রেলিয়ানদের ৪০ ভাগই এখন বেকার।  

তাই এবারের বাজেটে নতুন একটি ওয়েজ সাবসিডি স্কীম চালুর ঘোষণা দেয়া হবে, যার লক্ষ্য হচ্ছে তরুণদের কর্মসংস্থান। 

ওয়েজ সাবসিডি প্রোগ্রামের আওতায় নারী ও তরুণদের নিয়োগ দেয়া হলে নিয়োগদাতাকে প্রণোদনা দেয়া হবে। করোনাভাইরাসের কারণে নারী সংশ্লিষ্ট কাজ যেমন আপ্যায়ন, রিটেল ইত্যাদি খাতগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, বেকারত্বের এই সময়ে সরকারের চিন্তা শুধু কর্মসংস্থানে। 

তিনি বলেন, "অস্ট্রেলিয়ানরা ট্রেজারারের আজকের ঘোষণায় ভবিষ্যতের জন্য প্রত্যাশা করতে পারে। তারা তাদের চাকরি রক্ষা, এবং চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে সাফল্য পাবে। তাদের চাকরি রক্ষা ও নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যতে চাকরি তৈরীই এই বাজেটের লক্ষ্য।"

ট্রেজারার যশ ফ্রিডেনবার্গ বলেন, সরকার দ্বিতীয়বারের মত নারীদের আর্থিক নিরাপত্তা বিবরন ( Women’s economic security statement ) প্রকাশ করবে যাতে নারীদের কর্মক্ষেত্রে সহায়ক পরিবেশ তৈরী হয়। 

মিঃ ফ্রিডেনবার্গ বলেন, আগের মন্দার অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে বেকারত্বের হার কমানো খুব কঠিন। 

তিনি বলেন, “বেকারত্ব এলেভেটর দিয়ে ওঠে, নামে সিঁড়ি দিয়ে। আশির দশকের মন্দায় বেকারত্ব যেখান থেকে শুরু হয়েছিল, সেখানে ফিরে আসতে লেগেছিল ৬ বছর, আর নব্বই দশকে লেগেছিল ১০ বছর। আমরা এই যাত্রায় দ্রুত এগুতে চাই, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নারী ও তরুণদের আবারও কাজে ফিরিয়ে আনতে চাই।”  

সরকারের বিরুদ্ধে কপটতার অভিযোগ বিরোধীদলের 

এদিকে ফেডারেল বিরোধীদল সরকারের বিরুদ্ধে কপটতার অভিযোগ এনেছে। তাদের অভিযোগ ফেডারেল বাজেটে সরকারের অতিমাত্রায় খরচ করার ব্যবস্থা থাকছে, যা সরকারের হিপোক্রিসি। এই বাজেটে রেকর্ড পরিমান ঘাটতি থাকবে এবং প্রচুর ঋণ করতে হবে, গত ৩০ বছরের মধ্যে এমন অর্থনৈতিক মন্দা এই প্রথম। 

লেবার লিডার এন্থনি আলবানিজি বলেন, সরকারকে তাদের সুর পাল্টানোর বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে হবে, ২০০৭ সালের বৈশ্বিক মন্দার সময়ে তারা লেবার সরকারের নেয়া বিভিন্ন প্রণোদনার কেন নিন্দা করেছে?

তিনি বলেন, “সরকারকে তাদের স্ববিরোধীতার ব্যাখ্যা দিতে হবে, এবং সত্যি কথা হল তারা কয়েক বছর ধরে অর্থহীন কথা বলছে । সরকারকে ব্যাখ্যা করতে হবে তারা কেন বৈশ্বিক আর্থিক মন্দার সময়ে আমাদের নেয়া অর্থনৈতিক প্রণোদনার ব্যবস্থাগুলোর বিরোধিতা করেছিল, অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের বিরোধিতা করেছিল। তারা সুযোগসন্ধানী এবং ধ্বংসাত্মক আচরণ করেছিল।”  

ইন্টারেস্ট রেট ০.২৫ শতাংশে স্থির থাকল

এদিকে রিজার্ভ ব্যাংক ইন্টারেস্ট রেট ০.২৫ শতাংশে স্থির রেখেছে যা এখনো পর্যন্ত সর্বনিম্ন রেকর্ড। আজকের মাসিক সভায় তারা এই রেটের পরিবর্তন আনেনি। 

কোন কোন অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন সরকারের সাথে যৌথভাবে করোনাভাইরাসজনিত অর্থনৈতিক মন্দা সামাল দিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক হয়তো আজকের ফেডারেল বাজেটের আগে আরো ইন্টারেস্ট রেট কমাবে।   গত মার্চ থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাদের ইন্টারেস্ট রেট ০.২৫ -এর মধ্যে স্থির রেখেছে। 

আরও দেখুনঃ



Share
Published 6 October 2020 7:56pm
Presented by Shahan Alam

Share this with family and friends