সরকারের কোভিডসেফ অ্যাপ ব্যবহার করবেন কিনা ভাবছেন? আমরা যা জানি তার সবই পাবেন এখানে

অস্ট্রেলিয়ার টেক কমিউনিটি সরকারের কোভিডসেফ অ্যাপ নিয়ে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করে দেখেছে এটি কীভাবে কাজ করে। এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখেছে তারা। এ পর্যন্ত তারা যে-সব বিষয় জেনেছে তা এখানে তুলে ধরা হলো।

The government's new COVIDSafe voluntary tracing app

The government's new COVIDSafe voluntary tracing app Source: AAP

গত রবিবার উদ্বোধন করার পর সরকারের কোভিড-১৯ ট্রেসার অ্যাপ

এই অ্যাপটি জনগণকে জরুরি ভিত্তিতে ইনস্টল করতে অনুরোধ করছে সরকার। এই অ্যাপটি তৈরি করার উদ্দেশ্য হলো কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরকে দ্রুত শনাক্ত করা।

ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করা হয় এই অ্যাপটিতে। অ্যাপ ব্যবহারকারী দু’ব্যক্তি যদি অ্যাপটি চালু রেখে এবং ব্লুটুথ অন রেখে নিকটবর্তী হন, তখন এটি তথ্য সংগ্রহ করে। শর্ত হচ্ছে, পরস্পরকে ১.৫ মিটারের মধ্যে আসতে হবে এবং অন্তত ১৫ মিনিট সময় অতিবাহিত করতে হবে। এই অ্যাপ ব্যবহারকারী যদি করোনাভাইরাসে সুনিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হন, তাহলে তিনি তার সাম্প্রতিক কন্টাক্টগুলোর বা সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তথ্যাবলী স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শেয়ার করার সম্মতি দিতে পারেন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পর্যাপ্ত সংখ্যক অস্ট্রেলিয়ান যদি এই অ্যাপটি ডাউনলোড করেন, তাহলে করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এদিকে, এই অ্যাপের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যাবলী নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রযুক্তি ও প্রাইভেসি বিশেষজ্ঞরা।

গত সপ্তাহে, এই অ্যাপটি উন্মুক্ত করার আগে, নিয়ে আমরা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলাম। কোভিডসেফ অ্যাপ এখন ডাউনলোড করা যাচ্ছে। এখানে আমরা উপস্থাপন করছি বিশেষজ্ঞদের মতামত, এটা কি পরিহার করতে হবে, নাকি ইনস্টল করা যাবে?

কোভিডসেফ অ্যাপ নিয়ে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করেছেন সফটওয়্যার ডেভেলপাররা। তারা যা পেয়েছেন তা এখানে তুলে ধরা হলো।

কোভিডসেফ উন্মুক্ত করার আগে, প্রযুক্তি ও গোপনীয়তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা অস্ট্রেলিয়ান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল এর পরিপূর্ণ সোর্স কোড উন্মুক্ত করার জন্য। নিরপেক্ষ ও স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা যেন সেটা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন এবং সমস্যাগুলো খুঁজে বের করতে পারেন ও সমাধানও প্রস্তাব করতে পারেন। আর এটাও যেন নিশ্চিত করতে পারেন যে, এই অ্যাপটি সেভাবেই কাজ করছে যেভাবে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সরকার এখনও সেই সেই সোর্স কোড উন্মুক্ত করে নি। যদিও ফেডারাল হেলথ মিনিস্টার গ্রেগ হান্ট এবিসি-কে গত সোমবার বলেছেন যে,

আমরা যখন সেই সোর্স কোডের জন্য অপেক্ষা করছি, তখন অস্ট্রেলিয়ার সফটওয়ার ডেভেলপাররা এই অ্যাপটির রিভার্স-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজ শুরু করেছেন এবং তাদের প্রাপ্ত ফলাফল সামাজিক-যোগাযোগ-মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।
রবিবার সফটওয়্যার ডেভেলপার ম্যাথিউ রবিন্স সাফল্যের সঙ্গে কোভিডসেফ অ্যাপের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনের সোর্স কোড ডাউনলোড এবং ডিকম্পাইল করেন।

প্রায় দশ বছর ধরে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ করছেন রবিন্স। আর, গত আট বছর ধরে তিনি অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের প্রতিই তার মনোযোগ নিবদ্ধ রেখেছেন। তিনি প্রাইভেসি বা গোপনীয়তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ নন। আমরা এ বিষয়েও পরে বলবো। তবে, কীভাবে অ্যাপ তৈরি করতে হয়, সে সম্পর্কে তিনি অনেক জানেন। সরকার যে রকম বলছে, এই অ্যাপটি সেভাবে কাজ করছে কিনা সেটা কীভাবে যাচাই করে দেখতে হবে, সে বিষয়ে তিনি ভাল জানেন। অ্যাপটি চালু হওয়ার পরের ২৪ ঘণ্টায় তিনি এবং অন্যান্য সফটওয়্যার ডেভেলপাররা এটি পরীক্ষা করে দেখেছেন। তারা এর কোড থেকে কী কী পাবেন সেটাও দেখেছেন।

প্রাপ্ত ফলাফলের মধ্যে অনেকগুলোই ইতিবাচক: টুইটারে রবিন্স নিশ্চিত করে বলেন যে, অ্যাপটি প্রত্যাশা অনুসারেই কাজ করছে, ফোনে ডাটা নিরাপদেই স্টোর করছে, অন্য ফোন সেটেও এই অ্যাপটি ইনস্টল করা থাকলে শুধুমাত্র তখনই সিগন্যাল রেকর্ড করছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২১ দিন পর সমস্ত রেকর্ড ডিলিট করে এবং ব্যবহারকারী যখন অনুমতি দেয় শুধুমাত্র তখনই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য সরবরাহ করে।

ব্যবহারকারীর লোকেশন ডাটা রেকর্ড করে না এই অ্যাপটি। (আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী হন, তাহলে এই অ্যাপটি ইনস্টল করার সময়ে আপনার লোকেশন ডাটা অ্যাকসেস করার জন্য মেসেজ পেতে পারেন। এটা মূলত ঘটে অ্যান্ড্রয়েডের দুর্ভাগ্যজনক ও অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যের জন্য। এই ধরনের কোনো অ্যাপের জন্য প্রয়োজনীয় ব্লুটুথ অ্যাকসেস যখন চাওয়া হয়, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে লোকেশন পারমিশনও চাওয়া হয়। কোভিডসেফ তারপরও লোকেশন ডাটা রেকর্ড কিংবা ব্যবহার করে না।)

দ্য ফিড-কে রবিন্স বলেন, তিনি যখন ফ্রি ছিলেন তখন কৌতুহলবশত তিনি এই অ্যাপটি ডিকমপাইল করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, তিনি যা দেখেছেন তাতে তিনি সন্তুষ্ট।

তিনি বলেন,

“যে-সব ডাটা তারা সংগ্রহ করছে, আরও ভাল শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না, সেগুলো আসলে বিনাইন (বিপজ্জনক বা ঝুঁকিপূর্ণ নয়)।”

“এই অ্যাপটি যেভাবে তৈরি করা হয়েছে, তা নিয়ে আমি পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী।”

কয়েকটি ছোটখাট ভুল-ত্রুটি লক্ষ করেছেন রবিন্স। তবে, সেগুলোর পেছনে কারণ হলো, এতো অল্প সময়ের মাঝে তড়িঘড়ি করে এটি তৈরি করার জন্য সরকারের চাপ ছিল।

তিনি এখনও চান যে, সরকার এই অ্যাপটির, iOS অ্যাপটি-সহ, সম্পূর্ণ সোর্স কোড উন্মুক্ত করুক। iOS অ্যাপের রিভার্স-ইঞ্জিনিয়ারিং করা অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন। সবকিছু মিলিয়ে রবিন্স বলেন, তিনি বড় ধরনের কোনো সতর্ক বার্তা দেওয়ার মতো কিছু পান নি।

তিনি বলেন,

“আমি মনে করি এটি ইনস্টল করা খুবই জরুরি।”
আরও বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ সফটওয়্যার ডেভেলপারও এর কোড পর্যালোচনা করে দেখেছেন। অস্ট্রেলিয়ানদেরকে এই অ্যাপটি ইনস্টল করতে তারা উৎসাহিত করেছেন।

আপনি যদি এই সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্রযুক্তির বিস্তারিত দিকগুলো সম্পর্কে আগ্রহী হন, তাহলে অস্ট্রেলিয়ান টেক কমিউনিটির লিংকটি দেখুন। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার জিওফ হান্টলে এক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন।

অ্যাপটি চালু হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে, কী কী সমস্যা দেখা গেছে?

কোভিডসেফ অ্যাপের এ পর্যন্ত অল্প কয়েকটি সম্ভাব্য সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে।

ফোন সেটে এই অ্যাপটি কাজ করছে কিনা, ব্যবহারকারী সেটি বোঝেন কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ ছিল। এই অ্যাপটি অবশ্যই ওপেন রাখতে হবে এবং চালু রাখতে হবে। অন্যথায় এটি কাজ করবে না। আপনি অন্যান্য অ্যাপও ব্যবহার করতে পারেন, কিন্তু, কোভিডসেফ অ্যাপটি ব্যাকগ্রাউন্ডে ওপেন থাকতে হবে, বিশেষত, আপনি যখন বাইরে যাবেন।

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, আই-ফোনে লো-পাওয়ার মোডে কিংবা অনেক বেশি সংখ্যক অ্যাপ যদি ব্লুটুথ ব্যবহার করে, তখন কোভিডসেফ কাজ না করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই অ্যাপটি কাজ করছে কিনা তা যাচাই করার জন্য ব্যবহারকারীর কী করা উচিত সে সম্পর্কে এ পর্যন্ত সরকার পরস্পর-বিরোধী পরামর্শ দিয়েছে। বর্তমানে সরকারের -এ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, iOS ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে যদি এই অ্যাপটি অন্তত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজ না করে, সেক্ষেত্রে তারা একটি নোটিফিকেশন পাবেন যেখানে এটি ট্রাবলশুট করার নির্দেশিকা থাকবে।

এই পর্যায়ে এটি বলা কঠিন যে, এই অ্যাপ ব্যবহার করা হলে ফোন সেটের ব্যাটারির চার্জ কতোটা ব্যয় হবে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মাঝে মত-পার্থক্য রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্কে আরও জানা যাবে।

অ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য এসব সমস্যা নিরাপত্তা বিষয়ক সমস্যা নয়। তবে, এসব সমস্যা নিয়ে কথা না বললে এই অ্যাপের কার্যকারিতার উপর প্রভাব পড়তে পারে। আবারও, iOS সোর্স কোড উন্মুক্ত করার জন্য বিশেষজ্ঞরা আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা পারফর্মেন্স ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন এবং যেখানে যেখানে দরকার এসব সমস্যার সমাধানও প্রস্তাব করতে পারেন।

কোভিডসেফ অ্যাপ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কি এখনও উদ্বিগ্ন?

কোভিডসেফ অ্যাপ নিয়ে নিরাপত্তা-বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা এখনও উদ্বিগ্ন। নিরাপত্তার কারণে কি এই অ্যাপটি কেউ ইনস্টল করা থেকে বিরত থাকবেন? বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটা মূলত নির্ভর করবে আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপরে। এর কারণগুলো সম্পর্কে এখানে বলা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে, এই অ্যাপটি চালু হওয়ার আগে, দ্য ফিড কথা বলেছিল প্রাইভেসি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডালি কাফার-এর সঙ্গে। তিনি অপ্টাস ম্যাকোয়েরি ইউনিভার্সিটি সাইবার সিকিউরিটি হাব-এর একজিকিউটিভ ডাইরেক্টর। নিয়ে বেশ কিছু দিক তুলে ধরেছিলেন প্রফেসর কাফার। সেগুলোর বেশিরভাগই এখন এই অ্যাপটির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

কাফার ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয় তুলে ধরেছেন: এই অ্যাপের মাধ্যমে সংগৃহীত ডাটা একটি কেন্দ্রীয় সার্ভারে আপলোড করা হবে। দ্য ফিড-কে প্রফেসর কাফার বলেন যে, এ রকম অ্যাপের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে তথ্যাবলী সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। সেসব তথ্য যখন কোনো কেন্দ্রীয় সার্ভারে রাখা হয়, তখন সে সার্ভারে যাদের অ্যাকসেস থাকবে তারা সবাই সেসব দেখতে পারবেন। আর সেই সার্ভারটি যদি কোনোভাবে হ্যাক করা হয় কিংবা খারাপ উদ্দেশ্যে কেউ যদি তাতে অ্যাকসেস করে, তখন এসব তথ্যের অপব্যবহার হওয়ার সুযোগ থাকবে।
এই অ্যাপটি ছাড়ার আগে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ভেনেসা টিগের মতো প্রাইভেসি বিশেষজ্ঞরা এই অ্যাপটির মাধ্যমে তথ্য রেকর্ড ও শেয়ার করা নিয়ে  প্রকাশ করেছিলেন।

যেমন, ভিন্ন ভিন্ন মডেলের ফোন সেটে এসব তথ্য নানাভাবে সংরক্ষিত হয়। কেউ যদি ফোন সেটে অ্যাকসেস করতে সক্ষম হয় এবং তার যদি সামান্য প্রযুক্তিগত জ্ঞানও থাকে, তাহলে এসব তথ্য সে পড়ে ফেলতে পারবে।

টিগ এবং তার সহকর্মীরা সোমবার একটি ব্লগে লিখেন,

“যদিও এটি নির্বিষ মনে হতে পারে, হুবহু একই রকম মডেলের ফোন সেটের কন্টাক্টগুলো [দেখা-সাক্ষাতের রেকর্ডগুলো] থেকে তথ্যাবলী খুব সহজেই প্রকাশ হয়ে যেতে পারে।”

“উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, অন্য কারও ফোন সেটে যার অ্যাকসেস রয়েছে, সে যদি দেখতে চায় যে, তাদের উভয়ের পরিচিত তৃতীয় কোনো ব্যক্তির সঙ্গে ফোন সেটের মালিক দেখা করেছে কিনা, তাহলে তা দেখা যাবে। সেটটি অ্যাকসেসকারী কোভিডসেফ অ্যাপটির (প্লেইনটেক্সট) লগগুলো পড়তে পারবে এবং [এভাবে] দেখতে পারবে যে তার ধারণার সঙ্গে সে-সব [লগগুলো] মিলে কিনা।”

“যদিও কোনো বিশেষ ব্যক্তির পরিচয় অনুমান করার ক্ষেত্রে এটি কাজে আসবে না; তথাপি কারও সঙ্গে দেখা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কিংবা খণ্ডন করার জন্য এটি অনেক মূল্যবান।”
প্রফেসর কাফার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, ব্যবহারকারী যে রকম চিন্তা করছে, তার চেয়েও অনেক বেশি তথ্য গ্রহণ করবে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, কোনো ব্যক্তি ‘এ’ এর যদি করোনাভাইরাস ধরা পড়ে এবং তিনি যদি সেই তথ্য তার কন্টাক্টদেরকে [যাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে] জানানোর জন্য সম্মতি দেন, তারা তখন বুঝতে পারবে যে, সম্প্রতি তারা ‘বি’ এবং ‘সি’ ব্যক্তির সঙ্গে কন্টাক্ট (দেখা-সাক্ষাৎ) করেছে। কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ এখন জানে যে, ‘বি’ এবং ‘সি’ কন্টাক্ট করেছে, কিন্তু তারা কেউই এ বিষয়ে অবহিত নয় যে, এ তথ্য শেয়ার করা হয়েছে।

প্রফেসর কাফার বলেন, এ রকম পরিস্থিতি হতে পারে।

“এই তথ্য হয়তো আসলেই বহু লোকের জন্য স্পর্শকাতর নয়। তবে, অন্যদের জন্য সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, দুটি ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের দু’জন রাজনীতিবিদ যদি দেখা করেন কিংবা একজন সাংবাদিকের সঙ্গে যদি একজন রাজনীতিবিদ মিটিং করেন এ রকম তথ্য।”

প্রফেসর কাফার বলেন, অ্যাপটিতে সামান্য পরিবর্তন আনার মাধ্যমে এ রকম বহু প্রাইভেসি ইস্যুর সমাধান করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের একটি আন্তর্জাতিক কোয়ালিশনও বলছে যে,

এসব পরিবর্তন আনার আগ পর্যন্ত, প্রফেসর কাফার দ্য ফিড-কে বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি এই অ্যাপটি ইনস্টল করবেন না। তবে, অন্যান্য অস্ট্রেলিয়ানের প্রতি তিনি কী পরামর্শ দিবেন সে সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত নন।

তিনি বলেন,

“এটা ইনস্টল করবেন কি করবেন না, এই পরামর্শ দেওয়ার ব্যাপারে আমি কি বলবো আমি জানি না। এই প্রশ্নটি আমার কাছে সত্যিই একটি চালাকিপূর্ণ প্রশ্ন মনে হয়েছে।”

“আমি মনে করি সরকার গোপনীয়তার বিষয়টি তাদের দৃষ্টিপটে কিছুটা রেখেছে। তবে, তারা কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে ভাবছে না। তারা যদিও সৎ উদ্দেশ্যে কাজ করছে, যেমন, লোকেশন বিষয়ক ডাটা সংগ্রহ না করা নিশ্চিত করেছে এবং ২১ দিন পর অবশ্যই ডাটা মুছে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে।”

“আমি মনে করি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গোপনীয়তার বিষয়টি খুবই ব্যক্তিগত। কোনো কোনো ব্যক্তির জন্য কো-লোকেশন ইনফরমেশন সত্যিকারভাবেই স্পর্শকাতর, আর অন্যদের জন্য এটি হয়তো পুরোপুরিই অপ্রাসঙ্গিক।”

“আমি আসলেই এখানে বাইনারি রিকমেন্ডেশন (হ্যাঁ/না-বোধক পরামর্শ) দিতে পারি না। তবে, আমি বসে অপেক্ষা করবো। প্রযুক্তি এবং আইনগত দিক থেকে আমাদের আরও একটু বেশি স্বচ্ছতার প্রয়োজন।”

আমি কি কোভিডসেফ ইনস্টল করবো?

এই আলোচনার ফলাফল এখানে। কোভিডসেফ অ্যাপ নিয়ে একটি কারণে তাড়াহুড়া করা হয়েছে: আমরা একটি বৈশ্বিক মহামারীর মাঝে রয়েছি। আমরা যদি সমাজকে আবারও উন্মুক্ত করতে চাই, সেক্ষেত্রে কোভিড-১৯ কেসে নতুনভাবে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরকে দ্রুত শনাক্ত করতে পারাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যদি পর্যাপ্ত সংখ্যক অস্ট্রেলিয়ান এই অ্যাপটি ডাউনলোড করেন এবং যদি এটি যথাযথভাবে ব্যবহার করেন, তাহলে এটি সম্ভবপর যে, এক্ষেত্রে এটি অনেক সহায়ক হবে। এই অ্যাপটি কার্যকর করার জন্য, সরকার বলছে, কমপক্ষে ৪০ শতাংশ অস্ট্রেলিয়ানকে এটি ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ, প্রায় ১০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ানকে নিবন্ধন করতে হবে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত দুই মিলিয়নের বেশি লোক এটি ডাউনলোড করেছে।

আপনি এই অ্যাপটি ব্যবহার করবেন কিনা তা নির্ভর করবে প্রাইভেসি বা গোপনীয়তা সম্পর্কে আপনি কী বোঝেন তার উপর। আর প্রফেসর কাফার যেভাবে জোর দিয়ে বলেন, এটি ব্যক্তিগত বিষয়।

তিনি বলেন,

“এ ধরনের বিতর্কের ক্ষেত্রে আমাকে যা সবচেয়ে বেশি হতাশ করে তা হলো ‘মানুষকে সাহায্য করা’ এবং ‘গোপনীয়তার’ মধ্যে দ্বন্দ্ব।”

“যে-সব লোক গোপনীয়তা রক্ষা করার বিষয়ে উদ্বিগ্ন তাদেরকে স্বার্থপর হিসেবে দেখানো আর বাকিরা ঠিক আছে হিসেবে দেখানো খুবই অন্যায়।”

ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যালেন্স হাব ফর টেকনোলজি, ল অ্যান্ড ইনোভেশনের স্ট্রিম লিড ফর ডাটা প্রটেকশন অ্যান্ড সার্ভেইলেন্স হিসেবে কর্মরত ডেভিড ভেইল বলেন,

“এ ধরনের কিছুর জন্য যেখানে সোশাল গ্রাফ ইনফরমেশন কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করার সম্ভাবনা থাকে, নীতিগতভাবে সেটি নির্ভর করে নিরাপত্তার জন্য আইনগত ও প্রযুক্তিগত সমাধানগুলোর উপরে। এগুলো নিয়ে আপনি সতর্ক হতে পরামর্শ দেবেন।”

“গণস্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগও অনেক গুরুত্বপূর্ণ, সেজন্যই এটি অনেক কঠিন।”

অবশেষে আপনি যদি সিদ্ধান্ত নেন যে, কোভিডসেফ এখন আপনার জন্য নয়, তাহলে মনে রাখবেন, অ্যাপটিকে আপগ্রেড ও আপডেটেড করার এবং বহুলাংশে পরিবর্তন করার সম্ভাবনা রয়েছে। আর যখনই তা করা হবে, তখনই আমরা আপনাদেরকে তা জানাবো।


alc covid domestic violence bangla
Source: SBS


অস্ট্রেলিয়ানদেরকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পরিবারের ও ঘরোয়া সদস্য ছাড়া অন্যদের সঙ্গে হলে দু’জনের বেশি একত্রিত হওয়া যাবে না।

 

আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে আপনার ডাক্তারকে কল করুন। ডাক্তারের কাছে যাবেন না। আপনি ন্যাশনাল করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইনেও কল করতে পারেন এই নম্বরে: 1800 020 080

 

alc covid shopping bangla
Source: SBS


 

আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।

 

আপনার ভাষায় কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ আপডেট জানাতে এসবিএস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৬৩ টি ভাষায় এ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য পাবেন। ভিজিট করুন: .

alc covid mental health bangla
Source: SBS


বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন:

 

alc covid ramadan bangla
Source: SBS
Follow SBS Bangla on .



Share
Published 28 April 2020 2:15pm
Updated 30 April 2020 4:41pm
By Sam Langford
Presented by Sikder Taher Ahmad


Share this with family and friends