সারা বিশ্বের মুসলমানরা রমজান মাস উদযাপন করতে শুরু করেছে। এই প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার প্রফেসর মাইকেল কিড মুসল্লিদের প্রতি এক জায়গায় জড়ো না হতে আহবান জানিয়েছেন।
বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলিম রমজানের মাসে সাধারণত তারাবীহের নামাজ পড়তে মসজিদে যান।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার COVID19-এ আক্রান্তের সংখ্যা কমে এসেছে, রাজ্য এবং ফেডারেল সরকার কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেস্ট্রিকশন শিথিল করছে, সামনে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে আরো সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসছে।
যদিও মসজিদগুলো বন্ধ আছে, এরপরেও প্রফেসর কিড জনগণকে প্রসন্ন হতে এবং বিধিনিষেধ না ভাঙতে অনুরোধ করেছেন।
তিনি এসবিএস এরাবিক২৪ কে বলেন, "আমাদের এখনো কমিউনিটিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ চলছে, আমরা প্রতিদিন অল্পসংখ্যক হলেও নতুন নতুন সংক্রমণের রোগী পাচ্ছি। আমাদের এখনো তাদের হসপিটালে নিতে হচ্ছে, ইনটেনসিভ কেয়ারে নিতে হচ্ছে, এখনো অস্ট্রেলিয়াতে মানুষ মারা যাচ্ছে।"
"আপনি যদি নিয়ম ভাঙেন এবং সংক্রমিত হন এবং সেই অবস্থায় আপনার বৃদ্ধ আত্মীয়দের দেখতে যান, আপনি তাহলে তাদের বিরাট ঝুঁকিতে ফেলবেন। তাই সবার কাছে অনুরোধ আপনারা আপনার কাজটি করুন, সবাই বিধিনিষেধ মেনে চলুন। "অস্ট্রেলিয়ার ইসলামী নেতাদের সাথে একমত হয়ে প্রফেসর কিড বলেন, আপনারা ঘরে নামাজ পড়ুন, এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবারের সদস্যদের সাথে যুক্ত থাকুন।
Australia's Grand Mufti, Dr Ibrahim Abu Mohammad, is planning to give lectures daily during Ramadan. Source: AAP
নামাজ ছাড়াও ইফতার পার্টি, একসাথে পানাহার যা রমজানে সাধারণত দেখা যায়, সেগুলোও পরিহার করতে বলেন তিনি।
''আমরা যদি মনে করি রেস্ট্রিকসনের এই নিয়ম আমাদের জন্য না, এবং বাচ্চাদের একসাথে খাবারের নিমন্ত্রণ করি কিংবা দাদু-নানুদের দেখতে যাই তাহলে আবারো প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকিতে পড়বো।"
তিনি বলেন, আমরা হয়তো আবার সংক্রমণের 'সেকেন্ড ওয়েভে' চলে যাবো।
"একই ব্যাপার আমরা সিঙ্গাপুরের বেলায় দেখেছি, সেখানে এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল মহামারী নিয়ন্ত্রণে আছে, তারা তাদের অনেক রেস্ট্রিকশন উঠিয়ে নিয়েছিল, এবং এতে হঠাৎ করেই 'সেকেন্ড ওয়েভ' শুরু হয়ে গেলো, সেখানে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ সংক্রমিত, অনেকে ভীষণ অসুস্থ হয়ে গেছে, হসপিটালে যেতে হচ্ছে, এবং মারাও যাচ্ছে।"
"তাই এই ব্যাপারে আমাদের প্রসন্ন হলে চলবে না, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। এটা খুবই মারাত্মক ভাইরাস, এটি আমাদের জন্য বিরাট স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরী করবে।"
করোনার এই সময়ে রোজা রাখা নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে ভীতি আছে যে এটি তাদের আরো ক্ষতি করবে কিনা। এই প্রসংগে প্রফেসর কিড বলেন, "এটি নিয়ে নানা চিন্তা বিরাজমান, তবে এটা তো সত্যি COVID 19 উপসর্গ নিয়ে কারো রোজা রাখা ঠিক হবে না, কারণ এই রোগের উপসর্গ হচ্ছে জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট, যা এতে আরো অবস্থা খারাপ করবে। রোগীদের যথেষ্ট পানি খেতে হবে, বিশ্রাম নিতে এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।"
"আবার এটাও অনেকে বলছেন রোজা রাখার কারণে ইমিউন সিস্টেম আরো জোরালো হতে পারে, তবে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে যে যারা অনেক দিন ধরে অসুস্থ তাদের বেলায় এটা আরো ক্ষতির কারণ হতে পারে।"
তিনি বলেন, রোজার সময় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাই প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায়।
আরো পড়ুন: