গত বছরের অক্টোবরে আইসিসির বোর্ড এই পরিকল্পনা করে। আগামী মার্চে দুবাইয়ে হতে যাওয়া আইসিসি বোর্ড সভায় আসতে পারে চূড়ান্ত ঘোষণা। পরবর্তী আট বছরের চক্রে (২০২৩-২০৩১) নতুন দুটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে আইসিসি। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে, দুই সংস্করণেই ‘চ্যাম্পিয়ন্স কাপ’ নামের প্রতিযোগিতার আয়োজনের কথা ভাবছে ক্রিকেটের এই সর্বোচ্চ সংস্থা।
প্রস্তাবিত টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন্স কাপে অংশ নিবে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা ১০ দল। মোট ৪৮ টি ম্যাচ হবে, যা গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের সমান। ২০২৪ ও ২০২৮ সালে হতে পারে এই টুর্নামেন্ট। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির নতুন প্রতিযোগিতার সঙ্গে ২০২৬ ও ২০৩০ সালে রয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০২৭ ও ২০৩১ সালে হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ।
২০২৩ পর্যন্ত আইসিসি ইভেন্ট সব ঠিক হয়ে আছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০২০ এবং ২০২১-এ পর-পর দু’টো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ হওয়ার কথা ভারতে। সেই বিশ্বকাপের পর থেকে ২০২৩ থেকে ২০৩১ পর্যন্ত নতুন টুর্নামেন্ট চালু করার কথা ভাবছে আইসিসি। ‘চ্যাম্পিয়ন্স কাপ’ নাম দিয়ে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ান ডে দুই ফর্ম্যাটেই সেরাদের নিয়ে নতুন টুর্নামেন্ট করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০২৪ এবং ২০২৮ সালে দু’বার টি-টোয়েন্টির চ্যাম্পিয়ন্স কাপ হবে। পঞ্চাশ ওভারের ওয়ান ডে ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন্স কাপ হবে ২০২৫ এবং ২০২৯ সালে। এর পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ান ডে বিশ্বকাপ যেমন চলছিল, চলবে। ২০২৬ এবং ২০৩০-এ হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২৭ এবং ২০৩১-এ হবে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ।
টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন্স কাপ ও ওডিআই চ্যাম্পিয়ন্স কাপ নামে যে দুটি নতুন টুর্নামেন্ট চালুর কথা বলছে আইসিসি সেই টুর্নামেন্ট দুটি পুরুষ এবং নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই আয়োজন করা হবে। অন্যদিকে, আইসিসির এই প্রস্তাবে রাজি নয় প্রভাবশালী বোর্ডগুলো। ২০২৩-২০৩১ সালের চক্রে হতে যাওয়া বৈশ্বিক আসরগুলো আয়োজনে নিলামে অংশ নেওয়ার আগ্রহ জানাতে সদস্য দেশগুলোকে আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছে আইসিসি। ছোট দেশগুলোর আয়ে ধারাবাহিক প্রবাহ আনতে প্রতি বছরে একটি আইসিসি টুর্নামেন্ট আয়োজনের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছে আইসিসি। তবে এই প্রস্তাবের পক্ষে নয় ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই), ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি), এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
বিসিসিআইয়ের এই প্রস্তাবে রাজি না থাকার পেছনে বোর্ডের লাভ-লোকসানের ব্যাপারটি যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ কিংবা ফ্র্যাঞ্চ্যাইজি টুর্নামেন্টগুলো সময়ের অভাবে আয়োজন করা না গেলে আর্থিক ক্ষতি হয়ে যাবে বোর্ডগুলোর। ভারতীয় বোর্ড কর্তারা অন্য দুই বড় ক্রিকেট শক্তি ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একজোট হয়ে আইসিসি-র বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করতে পারে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ এবং সচিব জয় শাহ ইংল্যান্ডে গিয়ে ত্রিশক্তির বৈঠকও করে এসেছেন বলে জানা যাচ্ছে। তাঁরা আইসিসির বিপরীতে চতুর্দেশীয় টুর্নামেন্ট চালু করার পরিকল্পনার কথা বলছে। আইসিসিকে চাপে ফেলতে তাদের এই পরিকল্পনা, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। নতুন টুর্নামেন্ট নিয়েও যে ভারতীয় বোর্ড তীব্র আপত্তি তুলবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।