টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার আলিসা হিলি ও বেথ মুনির দুর্দান্ত ব্যাটিং নাস্তানাবুদ করে বাংলাদেশের নারী দলকে। মাঠে দলের বাজে ফিল্ডিং ক্যাচ মিস বাংলাদেশের হারের কারণ বলে মনে করেন ক্রিকেট বোদ্ধারা। অস্ট্রেলিয়ার মাত্র একটি উইকেট নিতে সক্ষম হয় বাংলাদেশের মেয়েরা। অন্যদিকে, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারে নি অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে। সর্বোচ্চ ৩৬ রান করে আউট হন ফারজানা হক। ১৯ রান করেন নিগার সুলতানা। শামীমা সুলতানা এবং রুমানা আহমেদ- দু’জনই করেন ১৩ রান করে। এর বিপরীতে, অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার আলিসা হিলি ও বেথ মুনি উইকেটে রেকর্ড ১৫১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন ।
অস্ট্রেলিয়ার ছুঁড়ে দেয়া ১৯০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান করতে পারে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা, হেরে যায় ৮৬ রানে।ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে টানা দুই ম্যাচে দুই হারে ‘এ’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় সবার নিচে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ১৮ রানে হেরে সালমা খাতুনরা ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিলো। কিন্তু হার দিয়ে শেষ হলো দ্বিতীয় ম্যাচ। এই হারের ফলে বাংলাদেশের বিদায় প্রায়ই নিশ্চিত।
তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেকোনো আসরে ১৯০ রান তাড়া করা অনেক কঠিন কাজ। এই স্বল্প ওভারে এত বড় রানের পাহাড় টপকানো বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কখনোই অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি না হওয়া বাংলাদেশের মেয়েরা জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেটে ১০৩ রানের বেশি এগোতে পারে নি। সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেছেন ফারজানা হক। প্রায় দশ ছুঁইছুঁই রানরেটের পেছনে ছুটে শুরু থেকেই রানের জন্য ধুঁকেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে নিয়মিত বিরতিতে হারিয়েছে উইকেট। উদ্বোধনীতে শামীমা সুলতানা ৯ বলে ১৩, তার সঙ্গী মুর্শিদা খাতুন ১৬ বলে ৮, সানজিদা ইসলাম ৭ বলে ৩, রুমানা আহমেদ ১২ বলে ১৩ রানে ফেরেন। ফারজানা হক যা একটু লড়েছেন। কিন্তু তার ৪ চারে সাজানো ৩৫ বলে ৩৬ রানের ইনিংসটি ব্যাবধান মেটাতে পারে নি।
বোলিংয়ের পারফরমেন্স ছিল খুবই খারাপ। খাদিজাতুল কুবরা ২ ওভারে ২৯ রান দিয়েছেন। জাহানারা ও সালমা ৪ ওভারে দিয়েছেন যথাক্রমে ৪০ ও ৩৯ করে। অধিনায়ক সালমা ব্যাটিংয়ে বার্থ হলেও বোলিংয়ে এসে একমাত্র উইকেটটি তুলে নেন তিনি। রুমানা কিছুটা কম রান দিয়েছেন, ৪ ওভারে দিয়েছেন ৩০ রান। ফাহিমা ৩ ওভারে ২৩, নাহিদার ৩ ওভারে খরচ ২৬ রান। অন্যদিকে বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার মেগান ৪ ওভারে ২১ রান খরচে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ২ উইকেট নিতে ৪ ওভারে ১৭ ওভার খরচ করেছেন জোনাসেন। আর ১টি করে উইকেট নিয়েছেন অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড ও নিকোলা ক্যারি।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে প্রথম ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তাই শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে আরও বেশি করে ম্যাচ খেলতে আগ্রহী সালমা খাতুনেরা। যাতে এমন কন্ডিশনে ভালো করে অভ্যস্ত হওয়া যায়। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসেন ফারজানা হক। তিনি বলেন,
‘অস্ট্রেলিয়া বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ওদের সঙ্গে এবারই প্রথম খেললাম। যদি দলটির বিপক্ষে বেশ কিছু ম্যাচ খেলতে পারি, তাহলে ওদের অবশ্যই আমরা সামলাতে পারবো। একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে।’
বাজে খেলার কারণ হিসেবে তিনি বলেন,
‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আজকেই প্রথম ম্যাচ। ওদের বোলিং বিভাগ খুব শক্তিশালী। তার ওপর উইকেটটা খুব ভালো ছিল। বেসিক অনুযায়ী খেলতে পারলে ভালো কিছু করা সম্ভব ছিল। ওরা ১৮৯ রান করেছে। আমাদের কিছু দুর্বলতার জন্য ভালো ব্যাটিং করতে পারি নি।’
অন্যদিকে অধিনায়ক সালমা খাতুন শর্ট বল খেলতে না পারাকে হারের কারণ হিসেবে দেখছেন। ম্যাচের পর তিনি বলেছেন,
‘অস্ট্রেলিয়া খুবই ভালো দল। ১৯০ রানের লক্ষ্যটা খুব বড়। অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ের লাইন ও লেন্থ খুব ভালো। আমাদের ব্যাটসম্যানরা এই শর্ট বল খেলতে অভ্যস্ত নয়।’
আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি মেলবোর্নে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।