কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বাংলাদেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া

Anti-quota student protesters join in a coffin rally at the

UNIVERSITY OF DHAKA CAMPUS, DHAKA, BANGLADESH - 2024/07/17: Anti-quota student protesters join in a coffin rally at the University of Dhaka campus, a day after the clash with Bangladesh Chhatra League, the student wing of the ruling party Bangladesh Awami League, and anti-quota protesters. Source: LightRocket / K M Asad/LightRocket via Getty Images

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বাংলাদেশে শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে এক সপ্তাহের প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনার জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি ও জামায়াতকে দোষারোপ করেছেন। অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, তারা এই আন্দোলনে সরাসরি যুক্ত না হলেও সরকার প্রথম থেকেই চেষ্টা করেছে এটিকে রাজনৈতিক আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করার।


বাংলাদেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি

বাংলাদেশে জারি করা কারফিউ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে এবং সীমিত সময়ের জন্য অফিস-আদালত খুলেছে এবং সীমিত আকারে ইন্টারনেট সেবা চালু হয়েছে।

বুধবার কারফিউ শিথিলের সময়ে ঢাকার কোথাও গত কয়েকদিনের ‘অস্বাভাবিক’ পরিস্থিতির খবর পাওয়া যায়নি। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ। আরও কিছু সড়ক আংশিকভাবে বন্ধ থাকলেও জনসমাগম দেখা গেছে ঢাকার সর্বত্র।

বিবিসি বাংলা জানাচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে মঙ্গলবার কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তাসহ চার দফা দাবি জানিয়ে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গত কয়েকদিনে প্রায় ১১০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও দেখুন
A habib 250724 image

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক খবর,২৫ জুলাই, ২০২৪

SBS Bangla

25/07/202405:45
এদিকে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বাংলাদেশে সহিংসতা দেখতে চায় না।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার গতকাল মঙ্গলবার রাতে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

দৈনিক প্রথম আলো জানাচ্ছে, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, "যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের কাউকে ছাড় নয়, নৈরাজ্যবাদীরা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য দেশে ও বিদেশে অব্যাহতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।"

এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ী করে অভিমত প্রকাশ করে বলেন, "বিএনপি সচেতনভাবেই কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি যুক্ত হয়নি। কিন্তু ছাত্র আন্দোলনকে দমন করার জন্য সরকার প্রথম থেকেই চেষ্টা করেছে এটাকে রাজনৈতিক আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করার।"

সহিংস বিক্ষোভের সময় ঢাকার রাস্তায় বেশ কিছু ধ্বংসাবশেষ এবং গাছ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিক্ষোভ রোধে সেনাবাহিনী কর্তৃক কারফিউ জারি করা সত্ত্বেও বিপুল প্রাণহানি এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া

এ ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশি এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। অস্ট্রেলিয়া জুড়ে প্রধান প্রধান শহরগুলোতে বাংলাদেশিরা বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সহিংসতা সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমাবেশ করেছে।

সিডনির লাকেম্বার এক সমাবেশে আসা একজন বাংলাদেশি অস্ট্রেলীয় ডাক্তার মোহাম্মদ (ছদ্মনাম) বাংলাদেশের কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যে কারণে আন্দোলন সে সম্পর্কে বলছেন, বিভিন্ন শ্রেণি বা গোষ্ঠীর জন্য আলাদা কোটা ছিল যারা সরকারে চাকরি পেতে চায়, বিভিন্ন স্তরে অফিসার হিসাবে কাজ করার জন্য ১০০টি স্থানের মধ্যে ৫৫টি কোটায় বরাদ্দ করার বিধান ছিল, যার মধ্যে ৩০ ভাগই ছিল ৫৩ বছর আগে ১৯৭১সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোর জন্য।"

মোহাম্মদ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন যে, যারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তারা অনেক আগেই তাদের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন, বা মারা গেছেন।
আরও শুনুন
bangla_19072024_QuotaBD.mp3 image

বাংলাদেশে চলমান সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্বেগ, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ সমাবেশ

SBS Bangla

19/07/202406:53
বাংলাদেশের আন্দোলনকারীদের মতো, মোহাম্মদও মনে করেন কোটা ব্যবস্থা প্রত্যাহার করার এবং সমস্ত বাংলাদেশিদের ন্যায্য সুযোগ দেওয়ার সময় এসেছে।

তিনি বলছেন, "মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা হয়তো এখন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্রছাত্রী। তারা আর এর অংশ নয়, তাই (সরকারি চাকরির নিয়োগের বিষয়ে) বর্তমান শিক্ষার্থীদের এবং প্রত্যেকের জন্য আরও ন্যায্য হতে হবে যেটি কেবলমাত্র মেধার ভিত্তিতে হওয়া উচিত, কোটার ভিত্তিতে নয়, তা না হলে এটি হবে একটি ব্যাপকভাবে বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা৷"

মোহাম্মদ রায়হান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তিনিও ডাক্তার মোহাম্মদের অনুভূতির প্রতিধ্বনি করেন।

তিনি বলছেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্রজন্ম ইতিমধ্যে কোটা নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আমি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিলে এবং খারাপ কিছু ঘটলে তা আমার বা আমার সন্তানদের জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে, আমার নাতি-নাতনিদের নয়। তাই মুক্তিযোদ্ধারা একটা সময় পর্যন্ত সুবিধা পেতে পারেন, এবং তারা তা পেয়েছেন। তাই আমরা বলছি যে, আর কোনো সুবিধা থাকা উচিত নয়। তবে আমরা কোটা প্রথা বাতিলের কথা বলছি না, ব্যবস্থার সংস্কারের কথা বলছি।”

শুক্রবার থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সেখান থেকে খুব কম খবর আসছিলো, যা নিয়ে বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ান রুবায়ত হাসান খুব চিন্তিত ছিলেন।

তিনি বলছেন, "আমি খুব চিন্তিত। আমার ছোট ভাই, সেও একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, সেও প্রতিবাদে যুক্ত, তাই আমি আমার পরিবার এবং আমার বন্ধুদের মধ্যে যারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছে তাদের নিয়ে খুব চিন্তিত।"

বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট এবং জলকামান ব্যবহার করে।

সরকার নির্মমতার অভিযোগ অস্বীকার করলেও কারফিউ ভঙ্গকারীদের দেখলেই গুলি করার জন্য পুলিশকে অনুমোদন দিয়েছে।

কারফিউ শুক্রবার স্থানীয় সময় মধ্যরাতে শুরু হয়েছিল এবং এখনও পর্যন্ত বলবৎ রয়েছে। তবে দিনের বেলায় কয়েক ঘন্টা ধরে বিরতি দেয়া হচ্ছে।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ানদের বাংলাদেশে ভ্রমণের পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং 
পাওয়া যাচ্ছে। হ্যাঁ, আমরা আমাদের প্লাটফর্ম বিস্তৃত করছি। এসবিএস সাউথ এশিয়ান, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য।

এসবিএস বাংলা টিউন করুন এসবিএস অন ডিমান্ডে সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায়। দক্ষিণ এশীয় অন্যান্য ভাষায় সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো সরাসরি শুনতেও অন ডিমান্ডে টিউন করুন।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুনএসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন আর, এসবিএস বাংলার এবং ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস।

Share