প্রতি সোমবার রাতে মেলবোর্নের পশ্চিমে সালামা টি হাউসের কিচেনে হামাদ আল্লাহয়ারি অনলাইনে পার্সিয়ান রান্নার ক্লাস করান।
তিনি ইরানি রান্নার অতুলনীয় সুঘ্রানের মূল বিষয়গুলো শেখান, তার ক্লাসগুলো অবিশ্বাস্য রকমের জনপ্রিয়, তার প্রথম দশ সপ্তাহের ব্লক পুরোটাই বুক হয়ে গেছে।
এই ক্লাসগুলো থেকে পাওয়া আয়ে তার ব্যবসায় কিছুটা উপার্জন হচ্ছে, একসময় যেটি ছিল ভীষণ ব্যস্ত একটি ক্যাফে, এখন দ্বিতীয়বারের সেটি শুধু টেকওয়ে দিতে পারে।
তিনি গতবছরের জুলাইতে সালামা টি হাউস শুরু করেছিলেন, রেফিউজি এবং নতুন আসা অভিবাসীদের নিয়োগ দিয়ে এটিকে একটি সামাজিক ব্যবসা হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন।
তিনি একজন শেফ হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, কিন্তু ভালো ইংরেজি না জানায় এবং অস্ট্রেলিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় কাজ পাননি।
তিনি বলেন, সালামা টি হাউজে কাজ করে নতুন আসা অভিবাসীরা অস্ট্রেলিয়ান জব মার্কেটে ঢোকার সুযোগ পাবে।
কিন্তু মেলবোর্নের করোনাভাইরাস বিধিনিষেধের কারণে তার ব্যবসা শুধু টেকওয়েতে সীমাবদ্ধ, তার ব্যবসা ৯০% কমে গেল, বাধ্য হয়েই তিনি তার সাতজন ক্যাজুয়াল স্টাফ বিদেয় করে দিলেন।
তিনি একাই সাতদিন কাজ করে ব্যবসা চালাচ্ছেন, এবং জবকীপার সাবসিডি দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু তিনি চিন্তিত এজন্য যে এই স্কিমটি সেপ্টেম্বরেই শেষ হয়ে যাবে, এবং এটা ছাড়া ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠিত।
স্মল বিজনেস অম্বাডসম্যান কেইট কার্নেল বলেন, এটা এখন সময়ের দাবি যে সালামা টি হাউজের মতো ব্যবসাগুলোকে প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
দ্বিতীয় দফার লক ডাউনের জন্য ভিক্টোরিয়ান সরকার বিজনেস সাপোর্ট ফান্ড থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৫০০০ ডলার করে সহায়তা দিচ্ছে।
এছাড়া জাতীয়ভাবে ফেডারেল সরকার রাজ্যগুলোর সাথে জবট্রেইনার স্কিম চালু করেছে, যাতে শিক্ষানবীশ এবং স্কুলত্যাগীদের ও বিভিন্ন ট্রেডে শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এছাড়া জবকীপার প্রোগ্রামের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাগুলোর কর্মীদের পাক্ষিক ১৫০০ ডলার করে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন কর্মী জবকীপার থেকে সুবিধা পাচ্ছে, কিন্তু এটি বর্তমানে ট্রেজারিতে পর্যালোচনা করা হচ্ছে, এই স্কিমের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকার ২৩ জুলাই একটি ঘোষণা দিতে পারে।
কেইট কার্নেল বলেন, এই স্কিমটি ছাড়া ব্যবসাগুলো টিকে থাকতে প্রস্তুত নয়।
CNBsafe নামে একটি সেফটি ইনফরমেশন কন্সালটেন্সি গ্রুপ পরিচালনা করেন জেমস উড।
তিনি কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় চাক্ষুস ঘটনার শিকার এমন ব্যক্তিদের বিভিন্ন ব্যবসায় সেফটি লেকচারের জন্য নিয়োগ দেন।
মিঃ উড প্রায় বিশ বছর আগে তার কর্মক্ষেত্রে এক দুর্ঘটনায় পা হারিয়েছিলেন, তার প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ কর্মীই শারীরিক প্রতিবন্ধী।
যখন মহামারী শুরু হলো তার প্রতিষ্ঠান CNBsafe-এর বুকিং সব বাতিল হয়ে গেলো, এতে তাদের ক্ষতি হয়েছে ৭ শত হাজার ডলার।
তিনি বলেন, যখন ভিক্টোরিয়াতে রেস্ট্রিকশন উঠে গেছিলো, তখন আবার বুকিং আস্তে শুরু করলো, কিন্তু এখন আবার স্টেজ থ্রী চলছে।
যদিও ব্যবসাটি এখনো অনলাইনে সেফটি মেসেজ দেয়ার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে সচল, কিন্তু CNBsafe-এর শক্তির জায়গাটি হচ্ছে বক্তাদের সাথে মুখোমুখি আলোচনা।
তার কন্যা অ্যানিও শিশুদের জন্য অনলাইন সেফটি ভিডিও শুরু করেছেন, যার নাম সেফটি অ্যানি।
মিঃ উড আশা করছেন, তারা খুব শীঘ্রই কাজে ফিরে যাবেন, কারণ প্রতিবন্ধীদের জন্য জব মার্কেট খুবই প্রতিযোগিতামূলক।
পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন
আরো পড়ুনঃ