কর্ম-প্রত্যাশী ও স্কুল-ত্যাগীদের জন্য বিনামূল্যে জব-ট্রেইনার প্রকল্প শুরু করছে অস্ট্রেলিয়া

করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে অ্যাপ্রেন্টিস (শিক্ষানবিশ) ও ট্রেইনিদের (প্রশিক্ষণার্থী) জন্য ওয়েজ সাবসিডি স্কিমে সরকার ১.৫ বিলিয়ন ডলার যুক্ত করছে সরকার।

Prime Minister Scott Morrison at a press conference at Parliament House in Canberra, Thursday, July 9, 2020. (AAP Image/Mick Tsikas) NO ARCHIVING

Prime Minister Scott Morrison at a press conference at Parliament House in Canberra, Thursday, July 9, 2020 Source: AAP

অর্থনৈতিক এই মন্দার সময়ে কর্ম-জগতে প্রবেশ করতে যাওয়া প্রায় ৩৫০,০০০ অস্ট্রেলিয়ান তরুণ-তরুণী নতুন দক্ষতা অর্জন করার সুযোগ পাবেন বিনামূল্যে কিংবা নামে-মাত্র মূল্যে। রাজ্যগুলো যদি বিলিয়ন ডলারের নতুন একটি প্রশিক্ষণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে তাহলে এটা সম্ভবপর হবে।

স্কুল ছেড়ে যাওয়া এবং কর্ম-অনুসন্ধানীদের জন্য ফেডারাল সরকার আজ বৃহস্পতিবার নতুন একটি স্কিলস প্যাকেজ চালুর ঘোষণা করেছে। তারা হেলথকেয়ার, ট্রান্সপোর্ট, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং রিটেইলের মতো খাতগুলোর জন্য কোর্স করতে পারবেন।

প্রধানমন্ত্রী এই পরিকল্পনা সমর্থন করছেন। এর জন্য তিনি কমনওয়েলথ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করছেন। এই পরিকল্পনাটির নাম রাখা হয়েছে জব-ট্রেইনার।

তিনি বলেন,

“কোভিড-১৯ হলো নজীরবিহীন। তবে, আমি চাই পুনর্গঠন ও এসব ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য যে-ধরনের কাজগুলো করতে হবে, অস্ট্রেলিয়ানরা সেগুলোর জন্য প্রস্তুত হোক।”

“এই সঙ্কট থেকে পরিত্রাণের পর আমাদের যে-সব কাজ ও দক্ষতার প্রয়োজন হবে, সেগুলো সে রকম হবে না যে-সব কাজ তারা হারিয়েছেন।”
এমপ্লয়মেন্ট মিনিস্টার মিকেলিয়া ক্যাশ বলেন, সকল স্টেট ও টেরিটোরিকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চায় সরকার।

শ্যাডো ট্রেজারার জিম চালমারস উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, এই প্রোগ্রামটি হয়তো ‘আরেকটি মার্কেটিং এক্সারসাইজ’।

ব্রিসবেনে রিপোর্টারদেরকে তিনি বলেন,

“এটি যদি সত্যিকারভাবে শিক্ষানবিশদেরকে সহায়তা করে এবং এটি যদি সত্যিকারভাবেই মানুষকে কাজে নিয়োজিত রাখে তাহলে লেবার দল অবধারিতভাবেই এটাকে স্বাগত জানাবে এবং এর সমর্থন করবে।”

কমনওয়েলথের অর্থায়ন নির্ভর করবে রাজ্যগুলোর একটি নতুন ভোকেশনাল এডুকেশন চুক্তিতে স্বাক্ষর করার উপরে। যে-সব রাজ্য এখন স্বাক্ষর করবে তারা এই প্রকল্পটি সেপ্টেম্বর নাগাদ শুরু করতে পারবে।

কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার অ্যানেস্টেশিয়া প্যালাশে নিশ্চিত করেছেন যে, তার সরকার এই উদ্যোগের সঙ্গে রয়েছে। আর, বেশিরভাগ রাজ্য শুক্রবারের ন্যাশনাল কেবিনেট মিটিংয়ে এটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।

নির্মাণ শিল্পে আরও সহায়তা চান মাস্টার বিল্ডার অস্ট্রেলিয়ার চিফ একজিকিউটিভ ডেনিটা ওয়ান। তিনি বলেন,

“নির্মাণ শিল্প অনেক শিক্ষানবিশকে প্রশিক্ষণ দেয় এবং অর্থনীতির অন্যান্য খাতের তুলনায় বেশি পূর্ণকালীন কর্ম-সংস্থান করে।”

এই পরিকল্পনার মাধ্যমে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে নয় মাসের জন্য কোনো শিক্ষানবিশের বেতনের অর্ধেক প্রদান করা হবে।

এই অর্থের দ্বারা TAFE এবং প্রাইভেট প্রোভাইডারদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ছোট ছোট কোর্সের ব্যবস্থা করা হবে।
অন্যান্য যে-সব কোর্সের মাধ্যমে সার্টিফিকেট থ্রি, সার্টিফিকেট ফোর এবং ডিপ্লোমার মতো যোগ্যতা অর্জন করা যাবে, সেগুলো স্কুল লিভারদের জন্য ভর্তুকিসহ ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে দক্ষ ব্যক্তির অভাব রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করবে নুতন ন্যাশনাল স্কিলস কমিশন।

রাজ্যগুলোর সঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি সম্পাদিত হয় নি। এটা বোঝা যাচ্ছে যে, গত শুক্রবারের ন্যাশনাল কেবিনেট মিটিংয়ে যখন এই বিষয়টি আলোচিত হয়, তখন রাজ্যগুলো এটি সমর্থন করেছে।

কমনওয়েলথ অর্থায়ন নির্ভর করবে রাজ্যগুলো মরিসন সরকারের সঙ্গে একটি নতুন সার্বিক ভোকেশনাল এডুকেশন এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর করার উপরে।
মে মাসে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি চান কর্মক্ষেত্রে যে-সব দক্ষতার প্রয়োজন হয়ে থাকে সেসব বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হোক। সিস্টেম সহজ হোক এবং ভর্তুকি প্রদানে সমন্বয় ও স্বচ্ছতা থাকুক।

মার্চ মাসে ঘোষিত স্কিম বিস্তৃত করতে শিক্ষানবিশ এবং প্রশিক্ষণার্থীরদের জন্য ১.৫ বিলিয়ন ডলার বেতন ভর্তুকি প্রদান করতে যাচ্ছে মরিসন সরকার। এর মাধ্যমে মাঝারি আকারের ব্যবসাগুলো, যেগুলোতে কর্মী সংখ্যা ২০০ জনের কম রয়েছে সেগুলোকে সহায়তা করা হবে। আর এটি মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত ৬ মাসের জন্য বর্ধিত করা হবে।

প্রাথমিক পরিকল্পনাটি ঘোষণা করা হয়েছিল করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবং সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে নয় মাসের জন্য কোনো শিক্ষানবিশের বেতনের অর্ধেক প্রদান করার জন্য।

এখন মিস্টার মরিসন বলেছেন, এর মাধ্যমে ১২০,০০০ শিক্ষানবিশ এবং প্রশিক্ষণার্থীকে কাজে সহায়তা করা হবে।

সরকারি তথ্যে দেখা যায়, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে বর্তমানে ৪৭,০০০ ব্যবসাকে সহায়তা করা হচ্ছে, যারা প্রায় ৮১,০০০ শিক্ষানবিশ ও প্রশিক্ষণার্থীকে নিয়োগ দিয়েছে।

এটি বর্ধিত করা হলে ৯১,৩০০ এরও বেশি ব্যবসাকে এর আওতাভুক্ত করা সম্ভব হবে।

Follow SBS Bangla on .

Share
Published 16 July 2020 6:14pm
Updated 16 July 2020 6:19pm
Presented by Sikder Taher Ahmad
Source: AAP, SBS


Share this with family and friends