তিন কন্যা ও মা-বাবার ব্যান্ড এসেইস। একসময় অস্ট্রেলিয়ায় থাকা রাকিয়া এবং সাইফ দম্পতির পেশা ভিন্ন হলেও তারা গানের পাগল। রাকিয়া এবং সাইফ কথা বলেছেন এসবিএস বাংলার সাথে, শেয়ার করেছেন ব্যান্ড নিয়ে তাদের ভাবনাগুলো।
মিঃ সাইফ বলেন, ছোটবেলা থেকেই তাদের দুজনেরই ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে হাতেখড়ি হয়েছে।
"আমি বুয়েটে পড়ার সময়ে পাশ্চাত্য সংগীতে ঝুঁকে পড়ি এবং বন্ধুদের নিয়ে ব্যান্ড গড়ে তুলি। কিন্তু বুয়েট থেকে বেরিয়ে আমাদের সদস্যরা জীবিকার প্রয়োজনে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম।...তখন ভাবতাম এমন কি করা যায় না, কখনো আমাদের ব্যান্ড ভাঙবে না।"আর এভাবেই নিজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গড়ে উঠলো তাদের ব্যান্ড এসেইস।
Both Rakia and Saif grew up with Indian classical music. Source: ASEIS/Facebook
মিজ রাকিয়া (ইশরা) নিজে অকটাপ্যাড এবং ড্রামস বাজাতে জানতেন এবং অস্ট্রেলিয়া থাকার সময়ে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। পরবর্তীকালে তিনি নিজেও ড্রামসের ট্রেইনিং দিয়েছেন এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন গোল্ড কোস্টে।
তাদের নিজ তিন কন্যাদের সম্পর্কে মি: সাইফ বলেন, "আমি ওদেরকে গিটার শেখার জন্য টিচার দিলাম। সেসময় টিচাররা বলেছে ওরা অন্যরকম বাজায়, অন্য শিশুদের চেয়ে আলাদা, অন্য বাচ্চাদের চেয়ে ম্যাচিউরড বাজায়। এ থেকে আমার ধারণা হলো ওরা এমন কিছু নিয়ে এসেছে পৃথিবীতে, যা অন্য কারো মধ্যে নেই।"
প্রশ্ন করেছিলাম 'এসেইস' (ASEIS) নামটি কিভাবে এলো?
মিঃ সাইফ জানালেন, এটি তাদের সবার নামের আদ্যাক্ষর। এ-তে হচ্ছে আলিনা যে তাদের সবার ছোটমেয়ে এবং ভোকাল হারমোনাইজার, এস-এ সারওয়া যে মেঝো এবং লিড গিটারিস্ট, ই-তে ঈদ (বড়ো মেয়ে) বেইজ গিটার বাজায় এবং ভোকাল দেয়, আই-তে ইশরা (রাকিয়ার ডাকনাম) ড্রামস বাজায় এবং সবশেষে এস-এ সাইফ, তিনি কীবোর্ড বাজান, গান গেয়ে থাকেন এবং মিউজিক ডিরেকশন দেন।
গানের বাইরে মিঃ সাইফ পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার এবং বর্তমানে পিএইচডি করছেন। অন্যদিকে মিজ রাকিয়া পেশায় একজন চিকিৎসক।তাদের এই পারিবারিক ব্যান্ড গড়ে তোলার বিষয়ে মিজ রাকিয়া বলেন, "এজন্য আমি আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম, ওর (সাইফ) সাথে পরিচয় হবার পর থেকেই আমি লক্ষ্য করেছি যে ও ব্যান্ড করে, এবং মিউজিক খুব ভালোবাসে। তাছাড়া ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বড় হয়েছে। বিষয়টা আমারও খুব ভালো লাগতো, আমিও চাইতাম যে ওর জীবনে যাতে শিল্পবোধ ও সংস্কৃতি চর্চ্চার ব্যাপারগুলো থাকে। ....একসময় ও বললো আমাদের নিজেদেরই ব্যান্ড গড়ে তুলতে হবে।"
The family music band ASEIS is the acronym of the names of band members. Source: ASEIS/Facebook
মিজ রাকিয়া বলেন, ব্যান্ড চালিয়ে যাবার পাশাপাশি সন্তানদের বড় করতে প্রাথমিকভাবে কিছু কষ্ট করতে হয়েছে ঠিকই, তবে ওরা ছোটবেলা থেকেই সহযোগিতা করেছে।
রাকিয়া এবং সাইফ দম্পতি স্কীল মাইগ্র্যাশন নিয়ে ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়া আসেন। তারা সিডনি এবং গোলকোস্টে থেকেছেন।
বর্তমানে তারা বাংলাদেশে থাকলেও সাক্ষাৎকারে তারা অস্ট্রেলিয়ায় থাকার স্মৃতিচারণ করেন, বিশেষ করে পর্যটন শহর গোলকোস্টে থাকাকালীন সময়টি তারা অত্যন্ত আনন্দে কাটিয়েছেন বলে জানান।
রাকিয়া এবং সাইফ দম্পতির পুরো সাক্ষাতকারটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার রেডিও অনুষ্ঠান শুনুন প্রতি সোমবার এবং শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এবং আরও খবরের জন্য আমাদের ফেইসবুক পেইজটি ভিজিট করুন।
আরও দেখুনঃ