গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- অস্থায়ী ভিসাধারীদের অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসার অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী একটি তারিখ নির্ধারণ করেছেন
- বর্তমানে প্রায় ২০০,০০০ ভিসাধারী বাইরে আছেন যারা আগামী অর্থবছরে অস্ট্রেলিয়ায় আসার অপেক্ষায় রয়েছেন
- তবে অস্ট্রেলিয়ায় আসার আগে তাদের সম্পূর্ণ টিকা দিতে হবে এবং একটি নেগেটিভ পিসিআর কোভিড টেস্ট রেজাল্ট থাকতে হবে
দুই বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ার অস্থায়ী ভিসাধারীরা আটকে আছে, এবং কখন তাদের ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হবে তা নিয়ে যে এতদিন অনিশ্চয়তা ছিল তা এখন কেটে গেছে। প্রধানমন্ত্রী অবশেষে নির্দিষ্ট ভিসাধারীদের অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
তিনি বলেন, "১লা ডিসেম্বর, ২০২১ থেকে, সম্পূর্ণভাবে টিকাপ্রাপ্ত যোগ্য ভিসাধারীরা ভ্রমণের শর্ত ছাড়াই অস্ট্রেলিয়ায় আসতে সক্ষম হবেন। দক্ষ কর্মী এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মানবিক বা শরণার্থী ভিসাধারী, অস্থায়ী ওয়ার্কিং হলিডে মেকার, এবং অস্থায়ী ফ্যামিলি ভিসাধারীরা এর মধ্যে আছেন।"
আগামী মাস থেকে স্কীলড ওয়ার্কার ভিসা, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং যারা মানবিক ভিসা চাইছেন তাদের প্রবেশের জন্য আর বিশেষ ছাড়ের প্রয়োজন হবে না।
তবে স্কট মরিসন বলেছেন, তারা আসার আগে তাদের সম্পূর্ণ টিকা দিতে হবে এবং একটি নেগেটিভ পিসিআর কোভিড টেস্ট ফলাফল থাকতে হবে।
তিনি বলেন,"এটি অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য আরেকটি ইতিবাচক খবর যারা টিকা পেয়েছেন। এটি অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য আরেকটি জয় যারা অস্ট্রেলিয়াকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে দেখতে চান যেটি এই মহামারীর আগে ছিল।"
স্কট মরিসন বলেছেন যে বর্তমানে প্রায় ২০০,০০০ লোক রয়েছে যারা এই ভিসা ক্যাটাগরিতে আছেন, তারা আগামী অর্থবছরে অস্ট্রেলিয়ায় আসার অপেক্ষায় রয়েছেন।
তিনি বলেন, "আমরা আশা করছি প্রায় দু'লাখ দক্ষ এবং অন্যান্য ভিসা ক্যাটাগরিতে থাকা ভিসাধারীদের আমরা গ্রহণ করতে পারব। আমার কোন সন্দেহ নেই যে এয়ারলাইন্গুলি এতে ইতিবাচক সাড়া দেবে এবং কর্মসংস্থানও বাড়বে।"
অস্ট্রেলিয়ার সেটেলমেন্ট কাউন্সিলের সিইও সারাহ রাইটের মতো মানবিক সংস্থা এবং আইনজীবীরা বলছেন, এটি একটি সঠিক পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, "বিদেশী প্রায় দশ হাজার মানবিক ভিসাধারী আছেন যারা সত্যিই দীর্ঘ সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ায় আসার জন্য অপেক্ষা করছেন এবং তারা আসার পর আমাদের পরিষেবাগুলি তাদের এখানে সেটেল করতে সাহায্য করতে পারে, তারা আমাদের সাহায্যে নতুন জীবন শুরু করতে পারে। তারা ইংরেজি শেখা, যোগাযোগ তৈরির কাজ শুরু করতে পারে। তারাই হবে ভবিষ্যত অস্ট্রেলিয়ান তাই তাদের সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়া দ্রুত করা উচিৎ।"
জাপান এবং কোরিয়া থেকে টিকাপ্রাপ্ত যাত্রীদেরও ১লা ডিসেম্বর থেকে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
তবে এর আগে সিঙ্গাপুর থেকে ভ্রমণকারীদের আসতে দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে পুনরায় সীমান্ত খোলার ফলে অস্ট্রেলিয়ার মহামারী পরবর্তী অর্থনীতি শক্তিশালী হবে যা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, আজকে আমরা যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছি তা হলো আমাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করা, অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কমিটি (CEDA) অর্থনীতিবিদ গ্যাব্রিয়েলা ডি'সুজা ব্যাখ্যা করেছেন, অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি ওয়ার্কার ভিসাধারীদের ছাড়াই চ্যালেঞ্জ সামলাতে লড়াই করছে।
তিনি বলেন, "এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা আতিথেয়তা, বিশ্ববিদ্যালয়, নির্মাণ এবং প্রকৌশল সংস্থাগুলি থেকে জেনেছি যে তারা সত্যিই কর্মী সংকটে পড়েছে এবং দক্ষ কর্মী না থাকায় তাদের মূল প্রকল্পগুলি পিছিয়ে পড়ছে। তাই এই ঘোষণাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। "
তবে এই ঘোষণায় পুনরায় সবকিছু চালুর কাজ কীভাবে শুরু হবে সে সম্পর্কে স্পষ্টতার অভাব আছে বলে সমালোচিত হয়েছে।
বিরোধীদলীয় উপনেতা ক্রিস্টিনা কেনেলি বলেছেন, সরকার কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই কেবল একটি ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, "আজ আমরা স্কট মরিসনের কাছ থেকে যা শুনলাম তা কোনো বিশদ বিবরণ ছাড়াই একটি ঘোষণা। সীমান্তগুলো দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এবং আমাদের এখনও অভিবাসন শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আজকে আমরা যা দেখলাম তা ছিল কেবলমাত্র একটি নিস্ফলা ঘোষণা।"
অস্ট্রেলিয়ার ভিসাধারীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত উন্মুক্ত করার বিষয়ে পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
আরও দেখুন: