পূর্ণডোজ টিকাপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অস্ট্রেলিয়ায় প্রত্যাবর্তনে নতুন আশা

অস্ট্রেলিয়ায় চীনের সিনোফার্ম টিকা এবং ভারতের কোভ্যাক্স টিকার স্বীকৃতি না থাকায় সহস্রাধিক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি সরকার এইসব টিকার স্বীকৃতি দেওয়ায় তাদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া পড়েছে।

hopes for fully vaccinated international students to return to Australia

Students at Australian National University in Canberra, pre-COVID (SBS) Source: SBS

অস্ট্রেলিয়ার ঔষধি পণ্য প্রশাসন (Therapeutic Goods Administration) কোভিড-১৯ প্রতিরোধী চীনের সিনোফার্ম টিকা এবং ভারতের কোভ্যাক্স টিকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি জানিয়েছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরতে চাওয়া উক্ত টিকাপ্রাপ্ত সহস্র মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এই প্রতিবেদনে অংশগ্রহণকারী চীনের জোয়ে জু আর পল টিয়েন সেইসব হাজারো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যতম। 

জোয়ে জু সিডনী ইউনিভার্সিটিতে পিএইছচি করছেন। তার স্কুলের বন্ধু পল টিয়েন চীনে থাকাকালে ম্যাককোয়্যার ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স পড়ার সুযোগ পান। কিন্তু কোভিডের কারণে পলকে স্বশরীরে সিডনীর ক্যাম্পাসে এসে পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি, ফলে তাকে অনলাইনে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হয়।
জোয়ে জু জানান, তিনি পলের সাথে রোজ কথা বলেন। পল রোজ খবর নেয় কবে সীমান্ত খুলবে, কবে সে এদেশে ফিরতে পারবে। পলের মত তার অনেক বন্ধু থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার জন্য অধীর হয়ে অপেক্ষা করে আছেন।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া চীনের সিনোফার্ম এবং ভারতের কোভ্যাক্সিন টিকাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

জোয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এর ফলে দক্ষ অভিবাসী এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এদেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারবেন। তিনি আশা করছেন তারা দুই পুরোনো বন্ধু অচিরেই একত্রিত হতে পারবেন।
Un plan de cuarentena privada podría acelerar la llegada de trabajadores calificados y estudiantes internacionales hacia Australia
Un plan de cuarentena privada podría acelerar la llegada de trabajadores calificados y estudiantes internacionales hacia Australia Source: Getty Images/andresr
এদিকে ১৮ মাস ধরে দূরশিক্ষণের পর স্বশরীরে সিডনীতে নিজের শিক্ষাঙ্গনে ফেরার সুযোগ পাওয়াতে উৎফুল্ল পল টিয়েন। নিজের ক্যাম্পাসে পড়া আর অস্ট্রেলিয়ার জীবনধারাকে তিনি ভালোবাসেন।

বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক সীমান্ত খোলা আছে কেবলমাত্র অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক, স্থায়ী বাসিন্দা এবং তাদের পরিবারের নিকটজনদের জন্য।
টিকা বিষয়ক জটিলতা দূর হওয়াতে বাকি ভিসাধারীদের এদেশে প্রত্যাবর্তনে বাধা থাকবে না। এর ফলে ২০২২ সালে শুরু হওয়া শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা এদেশে ফিরতে পারবেন বলে আশা করা যায়।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এদেশে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া সহজ আর স্বচ্ছন্দ করতে গুরুত্ব আরোপ করেছেন ইউনিভার্সিটিজ অস্ট্রেলিয়া সংস্থার প্রধান নির্বাহী ক্যাটরিওনা জ্যাকসন। বর্তমানে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী যারা ধৈর্যের সাথে স্বদেশে থেকে অপেক্ষায় আছেন কবে এদেশে ফিরে পড়ালেখা চালিয়ে যাবেন, সারাদেশে তাদের সবার প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া একইরকম হওয়া উচিৎ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
International Students
Queensland plans to reopen its borders to fully vaccinated international students in time for the first semester next year. Source: AAP
পূর্ণ ডোজ টিকাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কোয়ারেন্টিন ছাড়া আন্তর্জাতিক ভ্রমণের পক্ষে মতামত দিয়েছেন এন্ড্রু ম্যাককেলার। তিনি অস্ট্রেলিয়ান চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

কোয়ায়েন্টিনে থাকা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যয়সাপেক্ষ এবং নিবর্তনমূলক বলে তিনি মনে করেন। অস্ট্রেলিয়ার ৪০ বিলিয়ন ডলারের উচ্চশিক্ষা শিল্পের স্বার্থে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন আবশ্যক।

বৈশ্বিক ক্ষেত্রে এই খাতে প্রবল প্রতিযোগিতা চলছে। উচ্চ শিক্ষায় অগ্রগণ্য অনেক দেশ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়াও পিছিয়ে থাকতে চায় না। অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ সর্বোচ্চ রপ্তানি খাত হচ্ছে আন্তর্জাতিক উচ্চশিক্ষা। দেশটি এই খাতে তার অবস্থান ধরে রাখতে চায় এবং শিক্ষার্থীদের ফিরে পেতে চায়।
485畢業簽證一生人一次
Chinese students studying abroad dressed in academic gowns pose during a graduation at Curtin University in Bentley, Perth. Source: Imaginechina
মিস্টার ম্যাককেলারের মতে, সামনের বছর শিক্ষাবর্ষের শুরুতে যদি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ফিরতে না পারেন, তবে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের উপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অস্ট্রেলিয়া তার শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশের কাছে হারাতে পারে।

মিস জ্যাকসন জানান, যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু তবুও অস্ট্রেলিয়াই সবার পছন্দের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। এদেশে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিরাপদ পরিবেশ থাকাই তার বড় কারণ বলে তিনি মনে করেন।

পল টিয়েন বলেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার জন্য তার ব্যাগ এরমধ্যে গুছিয়ে ফেলেছেন। পলের মত অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নিশ্চয় এদেশে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন।

Follow SBS Bangla on .


Share
Published 5 November 2021 8:24am
Updated 12 August 2022 3:01pm
By Arianna Lucente, Richelle Harrison Plesse, Sofija Petrovic
Presented by Pychimong Marma
Source: SBS News

Share this with family and friends