আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে, পর্যাপ্ত সংখ্যক পাইলট আছে কি?

A general view of Qantas planes at Brisbane domestic airport. Monday, September 20, 2021. A traveller has tested positive for COVID-19 after potentially being infectious at Brisbane Airport for four hours.(AAP Image/Jono Searle) NO ARCHIVING

A lineup of Qantas planes at Brisbane domestic airport. Source: AAP Image/Jono Searle

আন্তর্জাতিক সীমান্তগুলো খুলে দেওয়া হলে ভ্রমণ-চাহিদা বাড়বে। চাহিদা সামাল দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার এয়ারলাইন্সগুলো। নভেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সুযোগ পুনরায় চালু করার কথা রয়েছে। আর, ভ্যাকসিনেশন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সাপেক্ষে কোনো কোনো স্টেট ও টেরিটোরিও তাদের সীমান্ত নিষেধাজ্ঞাগুলো উঠিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু, হাজার হাজার পাইলটের একটি ইউনিয়ন সতর্ক করেছে যে, ক্রম-বর্ধমান ফ্লাইট-চাহিদা সামাল দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত-সংখ্যক পাইলটের ব্যবস্থা করা মুশকিল হবে।


আগামী নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। তখন পরিপূর্ণভাবে টিকাগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ও স্থায়ী অভিবাসীরা দেশে ফিরতে পারবেন। এদিকে, ভ্যাকসিনেশন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সাপেক্ষে কোনো কোনো স্টেট ও টেরিটোরিও তাদের সীমান্ত নিষেধাজ্ঞাগুলো উঠিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তখন ক্রম-বর্ধমান ফ্লাইট-চাহিদা সামাল দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো।

কিন্তু, পর্যাপ্ত-সংখ্যক পাইলট সংগ্রহ করা, যারা তুলনামূলকভাবে দ্রুত কাজে যোগদান করতে পারবেন, এটা খুব বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেশন অফ এয়ার পাইলটস (AFAP) হলো কমার্শিয়াল বা বাণিজ্যিক পাইলটদের একটি ইউনিয়ন।

AFAP-এর প্রেসিডেন্ট, ক্যাপ্টেন লুইস পল বলেন, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর সময়টিতে প্রায় ১,০০০ পাইলট গ্রাউন্ডেড বা কর্মহীন হয়ে আছেন। তাদেরকে পুনরায় কাজে ফিরিয়ে নিতে কয়েক মাস সময় লাগবে।

ক্যাপ্টেন পল বলেন, গ্রীষ্মকালীন ছুটির মওসুমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে-রকম সমস্যা দেখা দিয়েছিল, সে-রকম পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়াও খুব সহজেই নিপতিত হতে পারে।

যাত্রীবাহী বিমান বহরের আকার ছোট করা ও হাজার হাজার পাইলট ও ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে কর্মহীন করার পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান সংস্থাগুলোকে কর্মী-সঙ্কটে ভুগতে হয়েছে। পূর্বানুমানের চেয়ে সিটের চাহিদা অনেক বেশি থাকায় গ্রীষ্মকালে হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয় তারা।

কোয়ান্টাসের একজন পাইলটের সঙ্গে কথা বলেছে এসবিএস নিউজ। নাম না প্রকাশ করার শর্তে তিনি বলেন, বিগত ৯০ দিনেরও বেশি সময়ে যে পাইলট বিমান চালান নি, তাকে আবারও আকাশে উড্ডয়নের জন্য তৈরি করতে আবশ্যকীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে কমপক্ষে তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগবে।

এ ছাড়া, পাইলট ঘাটতির কথাও বলেন তিনি। তার মতে, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর আগেই পাইলটের অভাবে কোয়ান্টাসের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছিল।
AFAP-এর ক্যাপ্টেন পল বলেন, বিশ্বজুড়ে পাইলট ঘাটতির প্রভাব পড়বে কোভিড-পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়ান অ্যাভিয়েশনের ওপরে।

সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য কোয়ান্টাস এবং ভার্জিন অস্ট্রেলিয়ার কোনো প্রতিনিধিকে পাওয়া যায় নি। তবে, উভয় প্রতিষ্ঠানই এসবিএস নিউজ-কে তাদের লিখিত বিবৃতি পাঠিয়েছে।

এই অক্টোবরে অতিরিক্ত নয়টি 737-800 এয়ারক্রাফট যুক্ত করেছে ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া। তারা কমপক্ষে ১৩০ জন পাইলটকে পুনরায় কাজে নিয়োজিত করবে বলে জানিয়েছে। এসব পাইলট এর আগে রিডানড্যান্সির শিকার হয়েছিল।

এই বিমান সংস্থাটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, পাইলট প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বিদেশে কী করা হচ্ছে তার প্রতি নজর রেখেছে তারা। তাদের পাইলটদেরকে বিগত কয়েক মাসে বিমান উড্ডয়নের সুযোগও দেওয়া হয়েছে।

কোয়ান্টাস বলছে, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর শুরুর দিকেই তারা বুঝতে পেরেছিল যে, পাইলটদের জন্য তাদের প্রোগ্রামে পরিবর্তন আনতে হবে।

তারা বলছে, কোয়ান্টাসের ৯৫ শতাংশেরও বেশি পাইলট অনুভব করেন যে, এই বিমান সংস্থার কাজে ফেরানোর পরিকল্পনাটি তাদেরকে দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে, যেন তারা দক্ষতার সঙ্গে ও নিরাপদে বিমান চালাতে পারেন।
দীর্ঘ সময়ের জন্য যে-সব পাইলট কাজের বাইরে ছিলেন, যেমন, A380-এর পাইলটেরা, যারা কোনো কোনো আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চালিয়েছেন, তাদেরকে পুনরায় কাজে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি প্রোগ্রাম রয়েছে বলে জানিয়েছে এই বিমান সংস্থাটি।

কর্মহীন বাণিজ্যিক পাইলটেরা যেন তাদের দক্ষতা এবং অ্যাভিয়েশন সার্টিফিকেট ধরে রাখতে পারে সেজন্য একটি প্রোগ্রামের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর অর্থায়নে আর্থিক সহায়তার জন্য ফেডারাল সরকারের সঙ্গে লবি করছে দ্য অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেশন অফ এয়ার পাইলটস।

কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাভিয়েশন খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি সিনেট তদন্ত কমিটিতেও বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে।

পাইলটদের ইউনিয়নটি বলছে, অর্থায়নের এই আহ্বানে কোনো প্রকার সাড়া দেয় নি ফেডারাল সরকার। সেজন্য তারা হতাশ।

ট্রান্সপোর্ট পোর্টফলিওর দায়িত্বে রয়েছেন ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার বার্নবি জয়েস।

তার অফিস থেকে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়টিতে ফেডারাল সরকার ৫.১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি আর্থিক সহায়তা করেছে অ্যাভিয়েশন খাতে; যার মধ্যে রয়েছে বিমান সংস্থাগুলো যেন তাদের মূল কর্মী-বাহিনী ধরে রাখতে পারে এবং কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে এবং নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়ার পর তারা যেন পুনরায় কার্যক্রম শুরু করতে পারে।

তার মুখপাত্র বলেন, কর্মী-বাহিনী বিষয়ক সিদ্ধান্তগুলো বিমান সংস্থাগুলোর বিষয়।

প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share