ইসলামোফোবিয়া কমছে, কিন্তু নতুন কিছু উদ্বেগজনক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে

Rear view of a veiled muslim woman walking in forest

More than three quarters of victims of Islamophobia are women. Source: Moment RF / Getty Images

অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্টেটে কোভিড লকডাউন থাকার কারণে দেশজুড়ে ইসলামবিদ্বেষী ঘটনার খবর কমে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে একটি নতুন প্রতিবেদনে দেখা গেছে অ্যাবিউজ বা নির্যাতন প্রত্যক্ষ করেও সে-বিষয়ে রিপোর্ট করার প্রবণতাও উদ্বেগজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে।


অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করাকে নিজের জীবনের ব্রত বানিয়েছেন শেরিন হাসান।

কেবলমাত্র ইসলামী বিশ্বাসের অনুসারী হওয়ার কারণেই তিনি ব্যক্তিগতভাবে এবং অনলাইনে অনেকবার অন্যায় আচরণের শিকার হয়েছেন।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে যেমন দোকানে গিয়ে কেনাকাটার সময় অবহেলার শিকার হওয়া, আবার অনলাইনে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ও আচরণের সামনেও পড়তে হয়েছে।
শেরিন হাসান, ইসলামিক মিউজিয়াম অব অস্ট্রেলিয়া
অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া মেডেল পাওয়া শেরিন হাসান নিয়মিত ভাবে অস্ট্রেলিয়ার ইসলামিক মিউজিয়াম পরিদর্শন করতে আসা শিক্ষার্থীদের সাথে তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন।

তাঁর মতো আরও অনেকের ঘটনাই ‘ইসলামোফোবিয়া ইন অস্ট্রেলিয়া’ রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে, যাতে দেখা গেছে যে নির্যাতনের ঘটনা ২০১৬-১৭ সালে ঘটেছিল প্রায় ৩৫০ টি, সেখান থেকে কমে ২০২০-২১ সালে তা ৯০ টিতে দাঁড়িয়েছে।

একই সাথে এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ইসলামোফোবিয়ার ফলে অন্যায় আচরণের শিকার ব্যক্তিদের তিন চতুর্থাংশেরও বেশি নারী এবং বেশিরভাগ অভিযুক্ত অপরাধী পুরুষ।

শারারা আত্তাই ‘ইসলামোফোবিয়া রেজিস্টার অস্ট্রেলিয়া’-র সঙ্গে যুক্ত আছেন।

তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় আক্রমণের শিকার ব্যক্তিরা কোনো না কোনোভাবে দুর্বল অবস্থানে ছিলেন।
যেমন ধরা যাক, হিজাব পরিহিতাদের মুসলিম বলে সহজেই চেনা যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে অনেক নারীই যখন ইসলামোফোবিক আচরণের শিকার হয়েছেন, তখন হয়ত তারা একা, বা শিশুদের সাথে বা অন্য নারীদের সাথে ছিলেন।
শারারা আত্তাই, ইসলামোফোবিয়া রেজিস্টার অস্ট্রেলিয়া
আগেরবারের প্রতিবেদনের মতই এবারও শপিং সেন্টার, নির্মানাধীন কোনো এলাকা, এবং পথচলার রাস্তাঘাটেই এ-ধরনের আচরণের আধিক্য দেখা গেছে।

সবচেয়ে বেশি যে-ভাবে এরকম আচরণ করা হয় তা হচ্ছে মৌখিকভাবে ভীতি প্রদর্শন করা।

কিন্তু প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এসব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী খুব কম মানুষই এগুলোয় হস্তক্ষেপ করছেন, বা থামানোর চেষ্টা করছেন।

ইসলামিক মিউজিয়াম অব অস্ট্রেলিয়া-র শেরিন হাসান বলেন, “এ ব্যাপারটি খুবই উদ্বেগজনক। যারাই এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করবেন, কর্তৃপক্ষের কাছে সেগুলো রিপোর্ট করা অত্যন্ত জরুরি। তা না হলে এগুলো বেড়েই যাবে।“

এ দেশের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাও ইসলামোফোবিয়ার আচরণ থেকে রেহাই পান না।

গ্রিনস সিনেটর মেহেরিন ফারুকি ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সংসদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

তিনি বলেন, “২০১৯ সালে ফেডারেল পার্লামেন্টে প্রবেশের পর থেকেই এরকম নির্যাতন ও অন্যায় আচরণ নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। মাঝে মাঝে এমনও হতো আমার স্টাফেরা কেউ আমাকে কাজ শেষে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসতে হতো।“

অ্যান আলি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে প্রথম নারী মুসলিম মন্ত্রী।

তিনি জানান, তাঁকেও একই ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।

“ইসলামোফোবিয়া নিয়ে কথা বলায় আমাকে প্রচুর বিদ্বেষমূলক বার্তা, চিঠি, এমনকি মৃত্যুর হুমকিও পেতে হয়েছে,“ তিনি বলেন।

সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে ক্লিক করুন উপরের অডিও প্লেয়ার বাটনে।

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত।

রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 


Share