গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- এখন সুদ হার ৩.৩৫ শতাংশ, যা ২০১২ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ।
- আরবিএ-এর এই সুদের হার বৃদ্ধি এই আশায় করা হয়েছে যাতে অস্ট্রেলিয়ানরা কম খরচ করতে বাধ্য হয়।
- অনেক অর্থনীতিবিদ আশঙ্কা করছেন যে এই পদ্ধতি অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদের হার বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় মর্টগেজ হোল্ডাররা আর্থিক চাপে পড়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (R-B-A) উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার মোকাবেলার চলমান প্রচেষ্টায় টানা নবম মাসে নগদ হার বাড়িয়েছে। ব্যাঙ্ক ইঙ্গিত করেছে যে এই হার আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
এখন সুদ হার ৩.৩৫ শতাংশ, যা ২০১২ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে এই হার বাড়তে থাকলে অনেক অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য বন্ধকী ঋণ পরিশোধ অসাধ্য হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কা তৈরী হয়েছে।
মর্টগেজ হোল্ডার কোয়েনি ওয়াং এখন তার বাড়িটি বিক্রি করার চেষ্টা করছেন। কারণ তিনি যে ফিক্সড রেটে ঋণ শোধ করতেন তা ভ্যারিয়েবল রেটে পরিবর্তিত করায় অনেক বেশি শোধ করতে হবে, যা তার সামর্থ্যের বাইরে।
Mortgage holders are feeling the pressure from the latest in a series of interest rate hikes from the Reserve Bank of Australia. Source: Pixabay
রেটসিটির রিসার্চ ডিরেক্টর স্যালি টিন্ডাল বলেছেন যে ব্যাঙ্কগুলির সাথে ঋণের হার নিয়ে দরদাম করা যেতে পারে, এবং এজন্য অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠানই ভালো অফার দেয়, এতে আরও সাশ্রয় হতে পারে।
আরবিএ-এর এই সুদের হার বৃদ্ধি এই আশায় করা হয়েছে যাতে অস্ট্রেলিয়ানরা কম খরচ করতে বাধ্য হয়। এতে প্রত্যাশা করা হচ্ছে যে মহামারী পরবর্তী মুদ্রাস্ফীতি কমে আসবে যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে দেখা গেছে।
গত মঙ্গলবার,৭ ফেব্রুয়ারী, এক বিবৃতিতে আর-বি-এ গভর্নর ফিলিপ লোই বলেন, "মূল্যস্ফীতি কমাতে যে লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করতে সামনের মাসগুলিতে সুদের হারের আরও বৃদ্ধির প্রয়োজন হবে।"
তবে, অনেক অর্থনীতিবিদ আশঙ্কা করছেন যে এই পদ্ধতি অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে।
শেন অলিভার, এএমপি ক্যাপিটালের প্রধান অর্থনীতিবিদ এসবিএস 'অন দ্য মানি' কে বলেছেন যে মুদ্রাস্ফীতির হার হয়তো ইতিমধ্যেই শীর্ষে পৌঁছেছে। এবং যদি ডেটা থেকে দেখা যায় যে আরবিএ-এর পদক্ষেপের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে, তবে তারা তাদের কৌশল সামঞ্জস্য করতে পারে।
তবে মি. অলিভার মনে করেন যে অস্ট্রেলিয়ানরা এখনও এই সুদের হার বৃদ্ধির সবচেয়ে অবস্থার চাপ অনুভব করতে পারেনি।
তিনি বলছেন, "প্রায় ১৪ শতাংশ বাড়ির মালিক মর্টগেজ ঋণ শোধ করছেন নির্দিষ্ট হারে, যাদের এই বছরে এই মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা প্রকৃত সমস্যা অনুভব করতে শুরু করবেন। তাই এখনও রেট বাড়ার সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাইপলাইনে আছে, এমনকি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখন থেকে সুদের হার বাড়ানো বন্ধ করে দিলেও।"
ফাইন্ডারের একজন ব্যক্তিগত অর্থ বিশেষজ্ঞ টেলর ব্ল্যাকবার্ন বলেছেন যে তাদের তথ্যে দেখা গেছে যে অস্ট্রেলিয়া জুড়ে মর্টগেজ হোল্ডাররা ইতিমধ্যে এই বৃদ্ধির চাপ অনুভব করছেন।
তিনি বলছেন, গত বছর এই সময় ২২ শতাংশ লোক বলেছিল যে তারা তাদের বন্ধকী ঋণ শোধ করা কঠিন মনে করছে, আর এখন ৩৩ শতাংশ ঋণ গ্রহীতা এই কথা বলছে।"
তিনি আরও মনে করছেন যে এই বৃদ্ধির ফলে চলমান ভাড়া সংকট আরো বাড়বে এবং অনেক বাড়িওয়ালা এই খরচ তাদের ভাড়াটেদের উপর চাপিয়ে দেবে।
তবে আরও সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। সেই সাথে আরবিএ এবং সারা দেশের নেতৃস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা মুদ্রাস্ফীতির মাত্রা পর্যবেক্ষণ করবেন এই আশায় যে এই বছর মুদ্রাস্ফীতির কারণে আর্থিক চাপ কমবে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: