খ্যাতিমান অভিনেত্রী ডলি জহুর বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের সাথে আছেন মেলবোর্নে, তিনি কথা বলেছেন এসবিএস বাংলার সাথে, শুনিয়েছেন তার অভিনয় জীবন নিয়ে নানা অভিজ্ঞতার কথা।
ডলি জহুর ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলেন। তবে নিয়মিত অভিনয়ের শুরু সত্তর দশকে (১৯৭৪-৭৫) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রী থাকার সময় থেকে।তখনও বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামাল জীবিত, তিনি তার নাটকে অভিনয়ের অভিজ্ঞতার কথা আগে থেকেই জানতেন। সেসময় সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একটি নাটক মঞ্চস্থ করা হয়, যেখানে শেখ কামাল তাকে অভিনয়ের আহবান জানিয়ে বলেন, "ডলি তুই তো অভিনয় করিস, তুই আয় আমাদের এই নাটকটাতে অভিনয় কর।"
বিটিভির পুরনো একটি নাটকে সহ-অভিনেত্রী বিপাশা হায়াতের সাথে ডলি জহুর Source: ডলি জহুর / ফেসবুক
এরপর বিভাগের এই নাটকে অভিনয়ের পর ম. হামিদের হাত ধরে তিনি থিয়েটার গ্রূপ ‘নাট্যচক্র’-এর সাথে যুক্ত হন।
ডলি জহুর বলেন, "সেখানে আমি প্রথম ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ নাটকে এবং পরে প্রয়াত মমতাজউদ্দিন আহমেদ রচিত নাট্যচক্রের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ম. হামিদ ভাই আর ভাবী আমাকে ‘অনুস্বারের পালা’ নাটকে অভিনয় করতে বললেন। মাত্র পনের দিনের প্রস্তুতিতে এ নাটকে অভিনয় করি।"
তিনি বলেন, এরপর তিনি কথক নাট্যগোষ্ঠী এবং নাট্যকার নির্দেশক মামুনুর রশীদের আহবানে বাংলা থিয়েটারে কাজ করেন।তার প্রয়াত স্বামী অভিনেতা-নির্দেশক জহুরুল ইসলামের নির্দেশনায় 'প্রাগৈতিগাহিক' নাটকে অভিনয় করেন। এরপর আরো বেশকিছু মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের পর টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ১৯৯২ সালে ‘শঙ্খনীল কারাগার’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
বিটিভির পুরনো একটি নাটকে সহ-অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির সাথে ডলি জহুর Source: ডলি জহুর / ফেসবুক
তবে ডলি জহুর আশির দশকে প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদের ‘এইসব দিন রাত্রি’ নাটকে অভিনয় করে শুধু বিপুল পরিচিতিই লাভ করেননি, এটি তার সামাজিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিলো।
তিনি বলেন, টিভি প্রযোজক মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন এই ধারাবাহিকটির নির্দেশক, তার সাথে আগে কাজের সুবাদে তিনি এতে যুক্ত হন। এরপর হুমায়ন আহমেদের আরো কিছু ধারাবাহিকে কাজের প্রস্তাব পেলেও ‘এইসব দিন রাত্রি’র জনপ্রিয়তা এবং 'নীলু ভাবি' চরিত্রটির গভীরতা, সব মিলিয়ে এর প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে অন্য কাজগুলোতে যুক্ত হওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে ডলি জহুর বলেন, "সবাই আমাকে ভাবি বলতো তখন, সবাই ভাবতো বিয়ে করাতে হলে এমন মেয়ে দেখে বিয়ে করাতে হবে, বাস্তবেও মানুষ আমার বাসায় চলে আসতো, আমার কোন বোন আছে কিনা খোঁজ নিতে, তাদের ভাইদের বিয়ে করাবে।"নানা ঘটনার মধ্যে তিনি একজন অসুস্থ বৃদ্ধের কথা বলেন যার সাথে তার মৃত্যুর কয়েকদিন আগে হাসপাতালে দেখা হয়েছিল।
অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফা এবং অভিনেতা তারিক নামের সাথে ডলি জহুর Source: ডলি জহুর / ফেসবুক
তিনি বলেন, "বয়স্ক-অসুস্থ মানুষটি আমাকে না দেখে মারা যাবেন না, তিনি রংপুর থেকে ঢাকায় এসেছিলেন কারণ তিনি আমাকে দেখবেন, আমাকে কাছ থেকে দোয়া করবেন।"
ডলি জহুরের পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন:
আরও দেখুন: