Dr.Bayzidur Rahman Source: Bayzidur Rahman
এসবিএস বাংলাকে তিনি বলেন,
“১২ আগস্ট ২০২০ বুধবার রাতের ঘটনা। আমার দোতলা বাড়ি। ছোট বাচ্চা হওয়ার পর আমরা নিচতলায় সবাই ঘুমাই। উপরে স্টাডি। রাস্তার সবকিছু দেখা যায়। রাত সওয়া ১১টার দিকে। বাচ্চারা ঘুমিয়ে যায়। আমি স্টাডিতে কাজ করতে যাই। তখন আমি দেখতে পেলাম যে, তিনটা জাঙ্কি টাইপের কিডস। ওরা রাস্তায় অন্য কারও গাড়ির দরোজা টানাটানি করছিল। হইচই করছিল। এর আগের রাতেও তারা হইচই করেছিল।”
“তাদের একজন আমার ড্রাইভ ওয়েতে ঢুকে পড়ে এবং আমার গ্যারেজের দিকে হেঁটে আসছিল। আমার সন্দেহ হলো সে হয়তো বা আমার গ্যারেজে ঢোকার চেষ্টা করবে।”
“আমি বারান্দায় গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম What's happening?"
"তাদের একজন বলল, come down. I'll show [you] what's happening."
এরপর ড. বায়োজিদ তার স্টাডি রুমে গিয়ে কম্পিউটারে কাজ করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়েন বলেন তিনি জানান।
“আমি কাজ করে চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়ি। ঘণ্টা খানেক পর যখন টের পেলাম মনে হলো আমি চেয়ার থেকে পড়ে গেছি। কতোক্ষণ পড়েছিলাম জানি না। আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।”
তিনি কতোক্ষণ অজ্ঞান ছিলেন তিনি জানেন না। জ্ঞান ফেরার পর তার মনে হলো, তার স্ট্রোক হচ্ছে, তিনি মারা যাচ্ছেন। তার নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল। তিনি বলেন যে, তিনি মনে করেছেন, পড়ে গিয়ে তার মাথা ফেটে গেছে। পরে তিনি টয়লেটের বেসিনের সামনে গিয়ে দেখতে পান অনেক রক্ত ঝরছে।
তিনি আরো বলেন,
“তখন আমি আমার ওয়াইফকে ডাক দিলাম।”
"কিছুক্ষণ পর শুনি প্রচণ্ড আওয়াজ হচ্ছে, মানে বোমা ফাটার মতো আওয়াজ হচ্ছে। চারিদিক থেকে, গ্লাস ভাঙার আওয়াজ।”
"তারা আমার কিচেন, মেইন ডোর ও ওয়াকিং প্যান্ট্রির গ্লাস ভাঙে।"
“নিচে চলে আসলাম। কিছুক্ষণ পর আবার আমার দরোজায় আঘাত হলো।”প্রতিবেশিকে ফোন করা হলে তারা পুলিশ এবং অ্যাম্বুলেন্স কল করে।
Attackers have broken into the home of a Bangla-speaking man in the suburbs of Claymore in Campbelltown, Western Sydney. Source: Dr Bayzidur Rahman
“অ্যাম্বুলেন্স এসে বলল, তোমাকে তো পিক-অ্যাক্স দিয়ে মারা হয়েছে। তারপর আমি হাসপাতালে চলে গেলাম।”
লিভারপুল হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সিটি স্ক্যান করে গুরুতর কিছু পাওয়া যায় নি, বলেন বায়োজিদ।
তিনি আরো বলেন,
“সব প্রতিবেশির ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, তারা অ্যাক্স (কুড়াল) নিয়ে ঘুরঘুর করছে।”
“তারপর কুড়াল নিয়ে আমার বাসায় তারা এক সাইড দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেছে। ব্যর্থ হয়ে পরে আরেক সাইড দিয়ে ঢুকেছে। ঐ সাইডে আমার গেটটা আনলকড ছিল। আটকানো ছিল, কিন্তু তালা দেওয়া ছিল না।"
“তারা ১০ মিনিটের মতো ছিল, যেটা ভিডিওতে দেখা গেছে।”
“তারা আবার বের হয়ে আসে। কিছুক্ষণ পর আবার ঢুকে। তারপর দুই মিনিটের মাথায় আবার বের হয়ে আসে। তখন ভাঙচুর করে।”
এই ঘটনাটি পুলিশ আমলে নিয়েছে। ক্যাম্পবেলটাউন পুলিশ একটি ইনসিডেন্ট নম্বরও রেকর্ড করেছে। পুলিশের মিডিয়া বিভাগের কাছে এ সম্পর্কে জানতে চেয়ে এসবিএস বাংলার পক্ষ থেকে একটি ইমেইল পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে ড. বায়োজিদকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,“পুলিশ কয়েকবার এসেছে, এলাকার সব মানুষের কাছ থেকে ভিডিও ফুটেজ নিয়েছে। সকল প্রতিবেশির কাছ থেকে তারা ভিডিও ফুটেজ নিয়েছে। তারা ফিঙ্গার-প্রিন্ট নিয়েছে। বাসায় সারা রাত ছিল।”
“ডিটেকটিভ আমার বাসায় এসেছে, আমার সঙ্গে দেখা করতে। বলেছে, হ্যাঁ, আমরা আইডেন্টিফাই করেছি, এটা একটা গ্রুপ। আশেপাশের কয়েকটা সাবার্বে এরা এগুলো মেস অ্যারাউন্ড করে বেরাচ্ছে। এটা আমাদের নোটিসে আছে। We are expecting speedy arrest.”
ড. বায়োজিদের পাশে স্থানীয় কমিউনিটিও দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন,
“আমার কমিউনিটির সব লোকজন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।”
“তাদের সবার ভিডিও ফুটেজ দিয়েছে।”
তাদের কেউ কেউ সাক্ষী হতে সম্মত হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, কমিউনিটির লোকজন খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। তারা পুলিশ, মেয়র এবং এমপির কাছে একটি সাবমিশন দিতে চাচ্ছে।
তাদের সঙ্গে যে কথা হয় তার প্রতিশোধ হিসেবে হয়তো তারা এটা করেছে বলে মনে করেন বায়োজিদ।
তিনি বলেন “আমার সাথে কারও শত্রুতা নেই।”
এ রকম ঘটনা “আগেও ঘটেছে। এটা খুব কমন। ছয়/সাত মাস ধরে সেই অঞ্চলে এ রকম ঘটনা আরও ঘটেছে,” বলেন তিনি।