৩২ বছর বয়সী জেফরি কিটন এবং ৩৬ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু ওডওয়ের নিউ সাউথ ওয়েলস রুরাল ফায়ার সার্ভিসের সিডনির পশ্চিমাঞ্চলের Horsley Park ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন।
দীর্ঘ সময় কর্মরত এই দুই স্বেচ্ছাসেবী অগ্নি-নির্বাপক কর্মী একটি ট্রাকে করে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাক্সটন শহরের কাছে তাদের ট্রাকের সামনে একটি গাছ পড়ে গেলে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে ঐ দু’জন মারা যান। ঐ ট্রাকে থাকা অন্য তিন জন আরোহীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারা Green Wattle Creek এর বুশফায়ারের আগুন নেভানোর কাজ করছিলেন।
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার গ্লাডিস বেরেজিক্লিয়ান বলেন, জেফরি কিটন এবং অ্যান্ড্রু ওডওয়ের মৃত্যু সকল স্বেচ্ছাসেবক দমকল কর্মীর প্রতীক হয়ে থাকবে। এই দুই সাহসী যুবক হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক দমকল কর্মীর অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। অন্যের জীবন বাঁচাতে তাদের এই মৃত্যু স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
রুরাল ফায়ার সার্ভিসের কমিশনার শেন ফিটজ সিমন্স নিহত ঐ দুই ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে বেশ কিছু সময় অতিবাহিত করেন এবং বলেন, তারা দু’জনই বীর।
নিহত দু’জনেরই ১৯ মাস বয়সী সন্তান রয়েছে।
ফেডারাল বিরোধী দলীয় নেতা অ্যান্থোনি অ্যালবানিজ বলেন, জেফরি কিটন এবং অ্যান্ড্রু ওডওয়ের মতো মানুষেরা অস্ট্রেলিয়ার শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি এটাকে হৃদয়বিদারক ঘটনা বলে উল্লেখ করেন।
কোনো স্বেচ্ছাসেবক দমকলকর্মী তাদের দায়িত্ব পালনের পর যেন শূন্য পকেটে ফেরত না যান তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান মিস্টার অ্যালবানিজ।
তিনি বলেন, তাদেরকে অবশ্যই ট্যাক্স ব্রেকস, ওয়ান-অফ পেমেন্টস বা স্পেশাল লিভ এনটাইটলমেন্টস-এর মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সপরিবারে হাওয়াই-এ ছুটি কাটাতে যাওয়ার এক সপ্তাহ পর যখন বুশফায়ার সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে তখন এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
দু’জন স্বেচ্ছাসেবক দমকল-কর্মী নিহত হওয়ার সংবাদ জানার পর প্রধানমন্ত্রী তার ছুটি সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরার ঘোষণা দেন। তিনি ম্যাকোয়েরি রেডিওকে বলেন, তিনি এবং তার স্ত্রী জেনি তার অনুপস্থিতিতে বুশফায়ারে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
২০১০ সালে ভিক্টোরিয়ার ব্ল্যাক স্যাটারডে বুশফায়ারের সময় তৎকালীন ভিক্টোরিয়ার পুলিশ প্রধান ক্রিস্টিন নিক্সনের পাবে বসে ডিনার খাওয়ার ভিডিও চিত্রটি এ সপ্তাহে নতুন করে তুলে আনা হয়েছে মিস্টার মরিসনের সমালোচনা করার জন্য।
এবিসি-র কিউ-অ্যান্ড-এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার যে আহ্বান করা হয় তার সমালোচনা করে মিস্টার মরিসন বলেন, এটা একটা অবিবেচক মন্তব্য।
অন্যদিকে, নিউ সাউথ ওয়েলস ফায়ার ব্রিগেড এমপ্লয়ী ইউনিয়ন বলছে, স্টেট গভার্নমেন্ট তাদের বরাদ্দ কমাচ্ছে।
স্টেট সেক্রেটারি লেইটন ড্রুরি বলেন, তিনি জানতে পেরেছেন যে, সরকার দমকলকর্মীদের দু’টি প্রধান খাতে বরাদ্দ কমাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাজেট কাটের ফলে মানুষদেরকে ঝুঁকির মুখে ফেলা হচ্ছে।
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য জুড়ে সম্পূর্ণ ফায়ার ব্যান এখনও কার্যকর রয়েছে।
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
READ MORE
অস্ট্রেলিয়া জুড়ে বুশফায়ারের এক ঝলক