মেলবোর্নবাসী ক্রিকেটভক্ত সুন্নাহ আব্দুল্লাহ সপরিবারে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন এডিলেইড ওভালে। খুব অল্প ব্যবধানে বাংলাদেশ হেরে যাবার পর তার কন্যা তাকে জড়িয়ে কেঁদে ফেলে।
সেই দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়ার মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ পুরো ক্রিকেটে বিশ্বে।
এসবিএস বাংলাকে সেই অনুভূতির কথা জানাতে সুন্নাহ আব্দুল্লাহ বলেন, এটা আসলে ভাষায় প্রকাশ যায় না, এই প্রতিক্রিয়া আবেগের এবং ভালো লাগার। বাংলাদেশ দলকে মাঠে থেকে সমর্থন দেয়া অনেক আনন্দের বিষয়, আর সেসময় আমরা খেলার মধ্যে একাত্ম হয়ে যাই।
'সেসময় আমি আমার মেয়েকে স্বান্তনা দিচ্ছিলাম, আমি বুঝতে পারিনি ছবিটা এভাবে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে, অনেকে দর্শকদের কমেন্ট থেকে বুঝতে পেরেছি যে এটা তাদেরও আবেগের প্রতিচ্ছবি।'
Sunnah Abdullah and his daughter Jafrin Anjum in Adelaide. Credit: Sunnah Abdullah
অস্ট্রেলিয়ায় কোন ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ থাকলে সবসময়েই নিজ পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধুদের নিয়ে ইন্টারস্টেট ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন মি. আব্দুল্লাহ।
অস্ট্রেলিয়ায় বেড়ে ওঠা সন্তানদের প্রসঙ্গে বলেন, 'আমাদের বাচ্চারা সবসময়েই ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নিয়ে উচ্ছ্বসিত থাকে, ওরা যখন গ্যালারিতে বাংলাদেশের পতাকা ওড়াতে থাকে তখন সেটা দেখতে খুব ভালো লাগে, ...আমরা প্রবাসে থাকলেও গ্যালারি থেকে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকি।"
ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচটি এমসিজিতে গিয়ে দেখেছেন মেলবোর্নের বাসিন্দা রাশেদ সরকার।
ম্যাচটি বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল বলে উল্লেখ করে মি. সরকার বলেন, 'অনুভূতি ছিল অনেকটা ফাইনালের মতই, এমনকি ফাইনালের চেয়েও ভাল, প্রায় ৯০ হাজার দর্শক খেলাটি দেখেছে।'
তবে মাঠে না থাকলেও বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি দেখেছেন রাশেদ সরকার। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ম্যাচের ফলাফল আমাদের বিরুদ্ধে গেছে, তারা যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতো হয়তো ম্যাচের ফল অন্যরকম হতো।
ফাইনালে যে দলই খেলুক, রাশেদ সরকার একটি জমজমাট ফাইনাল ম্যাচের প্রত্যাশা করছেন।
বাংলাদেশের প্রতিটি ম্যাচই ছিল মেলবোর্নের বাইরে, এজন্য অনেক মেলবোর্নবাসীরা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ দলের খেলা দেখতে পারেননি।
Rashed Sarker and his family. Credit: Rashed Sarker
এদিকে ব্রিসবেনের মাহমুদুল হাসান পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের ম্যাচটি দেখেছেন সরাসরি মাঠে গিয়ে।
মি. হাসান জানান, ম্যাচটি দেখতে ব্রিসবেন, সানশাইন, গোল্ডকোস্ট, টুউম্বা থেকে অনেকে বাংলাদেশি এসেছিলেন।
'টিভি স্ক্রিনে দেখা যায় ম্যাচ দেখতে পাঁচ হাজার ৭০০ দর্শকের সমাগম ঘটে এবং বাংলাদেশি সমর্থকরা বাংলাদেশের জার্সি পড়ে মাঠে এসেছেন, তারা ঢাকঢোল বাজিয়ে, খেলনা বাঘ নিয়ে নেচে গেয়ে ম্যাচটি উপভোগ করেন।'
তিনি বলেন, 'তবে সবচেয়ে উল্লেখ করার মত বিষয় হচ্ছে ছোট্ট বাচ্চাদের উপস্থিতি, ব্রিসবেনে বা গ্যাবাতে যেহেতু খুব কম খেলা হয় বা বাংলাদেশের খেলা খুব একটা দেখার সুযোগ হয় না, তো এই উপলক্ষে অনেকেই এসেছিলেন, সিডনি, মেলবোর্ন থেকেও অনেকে এসেছেন এবং এছাড়া বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এসেছিলেন।'
Mahmudul Hasan with his family. Credit: Mahmudul Hasan
তিনি দক্ষিণ আফ্রিকাকেও শুরুতে ফেভারিট মনে করেছিলেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল তাদের ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি টুর্নামেন্টের বাকি খেলাগুলো দেখবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: