অস্ট্রেলিয়ার মনোরম শহর এডিলেইডে বাংলাদেশের দুটি খেলা, যার একটি ভারতের বিরুদ্ধে গত ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।
এডিলেইড ওভালে ম্যাচটি ঘিরে শান্ত ছিমছাম এডিলেইড সিটিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে, আর তাতে শামিল হয় এডিলেইড তো অবশ্যই, অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহর থেকে আসা বাংলাদেশিরাও।
এডিলেইডের বাংলাদেশি কমিউনিটির সুপরিচিত মুখ মাহবুব সিরাজ তুহিন ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে তার নিজের এবং বাংলাদেশী কমিউনিটির সদস্যদের অনুভূতির কথা জানান এসবিএস বাংলাকে।
তিনি বলেন, 'ম্যাচের আগে এডিলেইড ওভালের বাইরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এডিলেইডবাসি বাংলাদেশিদের সংগঠন সাবকা (SABCA)। নেচে গেয়ে পুরো জায়গাটি মাতিয়ে রাখে আমাদের ক্রিকেট ভক্তরা।'
Bangladeshi players are seen with crickets fans in Adelaide. Credit: Mahbub Siraz Tuhin
খেলা দেখতে আসা শারজিন শাম্মি বলেন, 'আমি এখানে এসে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দেখতে পারব, বিষয়টা আমাকে ভীষণ অভিভূত করেছে।'
মোহাম্মদ তারিক বলেন, 'আমরা জেতার আশা নিয়ে এসেছি, এই মাঠে এর আগে ২০১৫ ইংল্যান্ডকে হারিয়েছি, এবারও জিতবো।'
একই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন জাকির হোসেন এবং শৌভনিক দত্ত। তারাও ম্যাচের আগে বাংলাদেশ জিতবে বলে প্রত্যাশা করেছিলেন।
প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার এই ম্যাচ শেষে মাহবুব সিরাজ তুহিন বলেন, 'বাংলাদেশ এক পর্যায়ে জেতার মত অবস্থায় ছিলো, আমরা আশা করছি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আগামী ম্যাচে আরও ভালো করবে, আমরা একটা জয় প্রত্যাশা করছি।'
Bangladeshi and Indian cricket fans are seen in Adelaide. Credit: Mahbub Siraz Tuhin
সাবকার চেয়ারপারসন আসাদুজ্জামান সৌরভ বলেন, 'দুৰ্ভাগ্যবশত বাংলাদেশ টিম অনেক ভালো খেলেও হেরে গেছে, তারা যদি এই ফর্মটা ধরে রাখতে পারে আমার ধারণা এডিলেইড ওভালের পরবর্তী ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জয় ছিনিয়ে আনতে পারবে, এটাই আমার প্রত্যাশা।'
ক্রিকেট দেখতে ইন্টারস্টেট ভ্রমণ করছেন মেলবোর্নের মোর্শেদ আলম। তিনি হোবার্ট, ব্রিসবেন এবং সিডনীতে বাংলাদেশের খেলাগুলো দেখেছেন।
মি. আলম এডিলেইড ওভালে পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ দেখবেন বলে পরিকল্পনা করছেন।
তিনি বলেন, সাউথ এশিয়াতে ক্রিকেট হচ্ছে 'ধর্মের' মত।
Mr. Morshed Alam is travelling interstate to support Bangladesh team. Credit: Morshed Alam
বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ান টিমকে উন্মুক্ত সম্বর্ধনা
ম্যাচের পরদিন ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ান টিমকে উন্মুক্ত সম্বর্ধনা দেয় সাউথ অস্ট্রেলিয়া সরকারের পর্যটন বিভাগ। এতে দুই দলের খেলোয়াড় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মিনিস্টার ফর ট্যুরিজম এন্ড মাল্টিকালচারাল এফেয়ার্স জো বেটিসন এমপি এবং মাস্টার শেফ খ্যাত কিশওয়ার চৌধুরী।
মাহবুব সিরাজ তুহিন এই অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, 'একজন বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে হোস্ট সিটি ওয়েলকাম ফাংশনে বাংলাদেশি ক্রিকেট দল এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দলের সাথে দেখা করা এবং অভ্যর্থনা জানানোর অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ।’
‘অস্ট্রেলিয়ার এবরোজিনাল ও টরে' স্ট্রেইট আইল্যান্ডার শিল্পীদের এবং সাউথ অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশনের (সাবকা) শিশু-কিশোরদের মন মাতানো পারফরম্যান্স উভয় দলই প্রশংসা করেছে।'
Children are performing during the reception of Bangladeshi and Australian teams by Tourism South Australia. Credit: Mahbub Siraz Tuhin
মিনিস্টার বলেন, 'আমি গত রাতে এডিলেইড ওভালে (বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের সময়) সেখানে ছিলাম, সেখানে খুব ঠান্ডা থাকলেও ক্রিকেট ভক্তদের সমাগমে দারুন উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছিলো, এটা ছিল সত্যিই একটি দুর্দান্ত ম্যাচ।'
বাংলাদেশ দলনেতা সাকিব আল হাসান শিশু-কিশোরদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমার ক্রিকেট খেলার সবচেয়ে বড় প্রেরণা আমার বাবা, যিনি নিজেও খেলোয়াড় ছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ান দলনেতা অ্যারন ফিঞ্চ একজন কিশোরী ক্রিকেটারের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেশের সকলের নাগরিকদের মত মেয়েদেরও ক্রিকেট খেলার সমান অধিকার আছে।
মাস্টার শেফ খ্যাত কিশওয়ার চৌধুরী বলেন, আমরা অনেকেই ক্রিকেটের ভেতরে নিজেদের দেখে বড় হয়েছি, ভারত-বাংলাদেশের ঐতিহ্য ধারণ করেই ক্রিকেট আমার ডিএনএ-তে প্রোথিত হয়ে আছে।
'যখন বাংলাদেশ এখানে খেলতে আসে আমি আমার বাবার চেহেরায় এক ধরণের গর্বের অনুভূতি দেখতে পাই, ...অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট আমাদের সকলের মধ্যে একটি বন্ধন তৈরী করেছে।'
Bangladesh fans react during the T20 World Cup cricket match between India and Bangladesh in Adelaide, Australia, Wednesday, Nov. 2, 2022. (AP Photo/James Elsby) Source: AP / James Elsby/AP/AAP
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: