রিজিউমে লেখার ক্ষেত্রে কয়েকটি সাধারণ ভুল

CV and resume with glasses and pen.

Source: Getty Images/Peter Dazeley

অভিবাসনের পর নতুন একটি দেশে, নতুন সংস্কৃতিতে এসে কর্মসংস্থানের বিষয়টি বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। নানা ধরনের যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও সেগুলো কাজে লাগিয়ে ভাল একটি কাজের সুযোগ সবাই পান না। কেন? রিজিউমে লেখার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের লেকচারার ড. আতাউস সামাদ।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • সিভিতে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোই উল্লেখ করতে হবে।
  • যে কাজের জন্য আবেদন করছেন, সে কাজ সম্পর্কে জানতে হবে এবং সে অনুসারে সিভি তৈরি করতে হবে।
  • একই ধরনের সিভি দিয়ে সব জায়গায় আবেদন করা ঠিক নয়।

কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার কর্ম-সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা অর্জন করাটা গুরুত্বপূর্ণ বলেন মনে করেন ড. আতাউস সামাদ।

ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের এই লেকচারার বলেন,

“অস্ট্রেলিয়ান ওয়ার্ক-কালচারটা আমরা বুঝে উঠতে কিছুটা সময় নিই।”

নেটওয়ার্কিং, ভলান্টিয়ারিং এবং ক্যাজুয়াল কাজের গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন,

“নেটওয়ার্কিংটা এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভলান্টিয়ারিংয়ের মাধ্যমে অথবা কোনো ক্যাজুয়াল রোলে যোগদানের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিংটা ডেভেলপ করা যায়।”

ড. আতাউস সামাদ বলেন, সিভির ক্ষেত্রে আমরা অনেকটা উদাসীন।

“একই ধরনের সিভি দিয়ে আপনি সব জায়গায় আবেদন করতে পারবেন না।”
তার মতে,

“প্রত্যেকটা কাজের জন্যই ভিন্ন ভিন্ন সিভি থাকাটা আবশ্যক। আপনি যদি একটা সিভি দিয়ে বিভিন্ন কাজে আবেদন করেন, সেখানে আপনার কিন্তু সাফল্যের সম্ভাবনা অনেক কম।”

একটি মাস্টার সিভি তৈরি করার প্রতি জোর দেন তিনি।

“একটা মাস্টার সিভি তৈরি করতে হবে, যেখানে আমাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকুরির অভিজ্ঞতা, অন্যান্্য আনুষঙ্গিক তথ্যাদি, হার্ড এবং সফ্ট স্কিল, রূপান্তযোগ্য দক্ষতা— এসব কিছু একটি বড়, ড্রাফট সিভির মধ্যে লিখে রাখতে পারি। যারা রেফারি থাকবে তাদের তথ্যসহ।”

তার মতে, এই মাস্টার সিভি থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে পরবর্তীতে অন্যান্য সিভিগুলো তৈরি করা যাবে।
ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের লেকচারার ড. আতাউস সামাদ বলেন, সিভির ক্ষেত্রে আমরা অনেকটা উদাসীন।
ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের লেকচারার ড. আতাউস সামাদ বলেন, সিভির ক্ষেত্রে আমরা অনেকটা উদাসীন। Source: Dr Ataus Samad

সিভিতে কী থাকবে, কী থাকবে না?

ড. আতাউস সামাদ বলেন,

“সিভিতে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোই উল্লেখ করতে হবে।”

“সিভিতে অনেক বেশি কিছু লিখে আসলে নিয়োগদাতাকে মুগ্ধ করা যায় না।”

“যদি দেখা যায় যে, কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয় আপনি বেশি উল্লেখ করেছেন, তখনি সেটা আপনার জন্য অনেক ভাল কাজে দিবে।”

যে কাজের জন্য আবেদন করবেন সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

“আপনি যে কাজের জন্য আবেদন করছেন, সে কাজ সম্পর্কে জানতে হবে।”

“আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে ঐ কাজে কী চাচ্ছে এবং সে হিসেবে আপনার সিভিটা তৈরি করতে হবে।”
সিভি রাইটিংয়ে সততা অবলম্বন করতে হবে। ড. আতাউস সামাদ বলেন,

“সততা এখানে খুবই জরুরি। কারণ, আপনাকে তো অবশেষে প্রমাণ করতে হবে যে, আপনি সেটা করতে পারেন কিনা।”

সিভি ছাড়াও কভার লেটারে প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি উল্লেখ করা যায়। ড. আতাউস সামাদ বলেন,

“প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্যও আপনি প্রস্তুত, সে কথাটা কভার লেটারে উল্লেখ করা যেতে পারে।”

সিভি তৈরির পর পরিচিত কাউকে সেটা দেখিয়ে নেওয়া ভাল। এতে অনেক ধরনের ছোট ছোট ভুল-ত্রুটির সংশোধন করা যায় বলে মনে করেন তিনি।

পরিশেষে তিনি বলেন,

“লেস ইজ মোর। আপনি কত কম শব্দের মধ্যে এবং কত কম কথার মধ্যে কত বেশি প্রকাশ করতে পারেন আপনার সম্বন্ধে (সেটা গুরুত্বপূর্ণ)।”

ড. আতাউস সামাদের সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share