ক্যানবেরার কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি নিয়ে নতুন প্রতিবেদন: পার্লামেন্টে এক তৃতীয়াংশ নারী কর্মী যৌন হয়রানির শিকার

Naca Feature, Australian Federal Politics, workplace culture,

Sex Discrimination Commissioner Kate Jenkins. Source: AAP

কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি ওয়ার্কপ্লেসগুলিতে স্বাধীন পর্যালোচনার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রতিবেদনটি সংসদে পেশ করা হয়েছে।


প্রাক্তন লিবারেল কর্মী ব্রিটানি হিগিন্সের ধর্ষণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, এই প্রতিবেদনটি সারা দেশে সংসদীয় কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপীড়ন, হয়রানি এবং উত্পীড়নের সংস্কৃতির তদন্ত করেছে এবং একটি নিরাপদ, আরও অন্তর্ভুক্ত ভবিষ্যত নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে৷

আট মাস পর্যালোচনার পর, সংসদীয় সংস্কৃতিতে বহুল প্রত্যাশিত 'সেট দ্য স্ট্যান্ডার্ড' প্রতিবেদনটি জনগণের জন্য প্রকাশ করা হয়েছে।

সেক্স ডিসক্রিমিনেশন (লিঙ্গ বৈষম্য) কমিশনার কেট জেনকিন্স প্রতিবেদনটি পেশ করেন, যেটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রাক্তন রাজনৈতিক কর্মী ব্রিটানি হিগিন্সের উদ্বেগের প্রেক্ষিতে যেখানে বলা হয়েছিল সংসদ ভবন মহিলাদের জন্য একটি বিষাক্ত এবং অনিরাপদ কর্মক্ষেত্র।

মিজ হিগিন্স ২০১৯ সালে তার একজন সহকর্মীর দ্বারা ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন যেটি ঘটে একজন মন্ত্রীর অফিসে এবং বিষয়টি ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ্যে আসে।
মিজ জেনকিন্সের রিপোর্টটি প্রকাশ করে যে ক্যানবেরার সংসদীয় এলাকা এবং নির্বাচনী অফিসে কর্মরত এক তৃতীয়াংশ নারী কাজের ক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, কর্মচারীদের ৫১ শতাংশেরই কোন না কোন ধরনের নিগ্রহ, যৌন হয়রানি এবং যৌন আক্রমণ বা আক্রমণের চেষ্টার অভিজ্ঞতা হয়েছে।

৪৫৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ২৮টি সুপারিশ রয়েছে, যার মধ্যে কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি পরিবর্তন করার জন্য লিঙ্গ সমতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মতামত দেয়া হয়েছে।

রিপোর্টটি সংসদ সদস্য এবং তাদের কর্মীদের জন্য একটি নতুন আচরণবিধি তৈরি করার গুরুত্বও তুলে ধরে, যা একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডার্ডস কমিশন দ্বারা প্রয়োগ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন মিজ হিগিন্সের ঘোষণার কয়েকদিন পর মিজ জেনকিন্সকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এই রিপোর্টে উদঘাটিত তথ্যকে "চরম দুঃখজনক" বলে আখ্যায়িত করেছেন।

মিঃ মরিসন সুপারিশগুলির উপর অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে যৌন নিপীড়ন এবং অসদাচরণ নিয়ে কর্মীদের অভিজ্ঞতার বেশ কয়েকটি বেনামী বিবরণ রয়েছে, যার মধ্যে একজন বলেছেন যে সংসদ ভবনে আসা অল্প বয়স্ক মহিলাদেরকে পুরুষরা "ফ্রেশ মিট এন্ড চ্যালেঞ্জ" বলে মনে করে।

একজন একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন যেখানে একজন এমপি তাকে কিছু বলার জন্য ঝুঁকে পড়ার ভান করে তাকে ধরে ফেলেন এবং তার জিভ তার গলায় আটকে দেন।
ড: সোনিয়া পালমিরি, একজন লিঙ্গ ও নীতি বিশেষজ্ঞ যিনি এই পর্যালোচনায় অবদান রেখেছিলেন, তিনি এসবিএস নিউজকে বলেছেন সংসদে এই ধরণের বিষয়গুলির ব্যাপকতায় তিনি হতবাক।

মঙ্গলবার পার্লামেন্টে উত্থাপিত রিপোর্টটিতে ১,৭২৩ জন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে, যার বেশিরভাগই মহিলা এবং বর্তমান ও প্রাক্তন রাজনীতিবিদ এবং কর্মী, এছাড়া ৩৩টি প্রতিষ্ঠানেরও সাক্ষাত্কার এবং জরিপ প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে যে অল্পবয়সী নারী এবং যারা এলজিবিটিআইকিউ+ হিসাবে চিহ্নিত তাদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ড: পালমিরি বলেছেন এই সংস্কৃতির সত্যিকারের পরিবর্তনের জন্য, লিঙ্গ এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা জরুরী প্রয়োজন, এবং শুধুমাত্র নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়।

প্রতিবেদনটি প্রকাশের মাত্র কয়েক ঘন্টা পরে, গ্রীন পার্টির সেনেটর হ্যানসেন-ইয়ং পার্লামেন্টে সরকারী জোটের একজন সেনেটরকে চিহ্নিত করে অভিযোগ করেন যে স্বতন্ত্র সেনেটর জ্যাকি ল্যাম্বি যখন একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিলেন তখন তার দিকে ওই সেনেটর কুকুরের আওয়াজ ও শব্দ করেছিলেন।

অবশ্য কোনো সেনেটর ওই শব্দের জন্য দায় স্বীকার করেননি।

প্রতিবেদনে যৌনতাবাদী ভাষা ও আচরণ নির্মূল করার জন্য এবং প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেট উভয় স্থানে নিরাপত্তা ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য সংসদ যেভাবে কাজ করে তা পর্যালোচনা করার সুপারিশ করা হয়।

যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ যৌন নিপীড়নের শিকার হন, তাহলে 1800RESPECT বা 1800 737 732 এই নম্বরে কল করুন অথবা ভিজিট করুন। জরুরি প্রয়োজনে 000 নম্বরে কল করুন।

প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

আরও দেখুন:

 


Share