দক্ষ শরণার্থীদের অস্ট্রেলিয়ায় কর্মসংস্থানের উদ্যোগ

Jerry Cardoza at work at Australia Post (SBS).jpg

অস্ট্রেলিয়ায় দক্ষ জনবলের ঘাটতি রয়েছে, তবে অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন শরণার্থী এখনও উপযুক্ত চাকরি খুঁজে পেতে সংগ্রাম করছেন।একটি নতুন প্রকল্প সেই পরিস্থিতি পরিবর্তনের চেষ্টা করছে,যা এদেশে চাকরির অভিজ্ঞতা না থাকলেও সংশ্লিষ্ঠ বিভিন্ন পদে সুযোগ করে দিতে চেষ্টা করছে।


জেরি কারডোজা একজন বাংলাদেশি শরণার্থী, যিনি দুটি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তবুও, অস্ট্রেলিয়ায় একটি উপযুক্ত চাকরি খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে। কৃতজ্ঞতার সাথে তিনি ক্লিনার, ডিস ক্লিনার এবং কারখানার শ্রমিক হিসেবে একই সময়ে তিনটি অস্থায়ী কাজ নিয়েছিলেন। কিন্তু এসব কাজ ছিল অস্থায়ী এবং অসন্তোষজনক।
কারখানায় কাজ করা আমার জন্য একেবারে নতুন ছিল। মানসিকভাবে আমি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম, কারণ আমি ভাবছিলাম যে আমি ক্লাসরুমে একজন শিক্ষক ছিলাম, আর এখন আমি কারখানায় বিকেল ৩টা থেকে ভোর ৩টা পর্যন্ত কাজ করছি। আমি আসলে কাঁদছিলাম, মনে হচ্ছিল আমার জন্য স্বর্গ হারিয়ে গেছে।
জেরি ২০১৯ সালে তার স্ত্রী লোরেটা এবং কন্যা গ্লোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন এবং একই বছরে কাজের অধিকারসহ একটি প্রোটেকশন ভিসা পান। এর আগে তিনি বাংলাদেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষায় দুটি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

অস্ট্রেলিয়া পোস্টের একটি চাকরি প্রদান কর্মসূচির মাধ্যমে পরিবর্তন আসে তাঁর জীবনে, এটি একটি সামাজিক উদ্যোগ যা কমিউনিটি কর্পোরেশনের সাথে মিলে শরণার্থীদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদান করে। কমিউনিটি কর্পোরেটের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও কারমেন গার্সিয়া বলেন, শরণার্থীরা নিয়োগকারীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

জেরি বিশ্বাস করেন কর্মক্ষেত্রে তিনি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছেন। জেরির ম্যানেজার, রিস হাচিনসন-বলেন, এই অনুভূতি আমার সকল সহকর্মীর।
তিনি খুবই নম্র একজন মানুষ ছিলেন, এসে সঙ্গে সঙ্গেই কাজ শুরু করেছিলেন, সবসময় শিখতে এবং উন্নতি করতে আগ্রহী ছিলেন, এবং খুব দ্রুতই দলের একটি বড় অংশ হয়ে উঠেছিলেন।
প্রকল্পটি সফল হয়েছে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে ৪৩,০০০ কর্মীর মধ্যে শরণার্থীদের ১.৫ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এটি আরো প্রসারিত হচ্ছে। এবার তাদের সমর্থন করবে থ্রাইভ রিফিউজি এন্টারপ্রাইজ। রিস হাচিনসন বলেছেন, এটি উভয় পক্ষের জন্যই লাভজনক।

এই অর্থবছরে ২০,০০০ নতুন রিফিউজির আগমন আশা করা হচ্ছে, এবং গবেষকরা বলছেন নিয়োগদাতাদের জন্য এই প্রকল্পে আরও সহায়তা প্রয়োজন।

নিউক্যাসল স্কুল অফ বিজনেসের ম্যানেজমেন্ট প্রভাষক জিনি লি বলেন, “অনেক শরণার্থী যারা চাকরি পায়, তারা সাধারণত সেই চাকরি এবং নিয়োগদাতার সাথেই থাকে এবং তারা সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সংস্থার সাথে একীভূত হয়। তারা সংস্থায় একটি ভালো পরিবেশ নিয়ে আসে।”

 কারমেন গার্সিয়া বলেন, নিয়োগদাতাদের আরও উদ্যোগী হতে হবে।
শরণার্থীদের মধ্যে একটি বিশাল অপ্রত্যাশিত মেধার ভাণ্ডার রয়েছে, এবং সেখানেই আমি মনে করি এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা এই মিথগুলো ভাঙি এবং সুযোগ তৈরি করি যা এই অবচেতন পক্ষপাতকে হ্রাস করে।
 জেরির মনে করেন, এই কার্যক্রম তাকে একদিন তার প্রিয় শিক্ষকতা পেশায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এভাবে নতুন সুযোগ সৃষ্ঠির মধ্য দিয়ে আশাগুলো বেচে থাকে।
এসবিএস বাংলার আরও শুনতে ভিজিট করুন আমাদের 

আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং পাওয়া যাচ্ছে?

এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে।

এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে।ভিজিট করুন আর, এসবিএস বাংলার এবং ইউটিউবেও পাবেন।ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন চ্যানেল।উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় 

Share