মিয়ানমারের সামরিক প্রধানের বিরুদ্ধে আইসিসির পদক্ষেপ: রোহিঙ্গাদের আশার আলো

ICC-Myanmar

FILE - Senior Gen. Min Aung Hlaing, head of the military council, inspects officers during a parade to commemorate Myanmar's 78th Armed Forces Day in Naypyitaw, Myanmar, on March 27, 2023. (AP Photo/Aung Shine Oo, File) Source: AP / Aung Shine Oo/AP

বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। আইসিসি মিয়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইং-এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে, তিনি রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ, নির্যাতন ও বাংলাদেশে জোরপূর্বক বিতাড়নের জন্য দায়ী। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন।


আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান প্রসিকিউটর পাঁচ বছরের তদন্ত শেষে মিয়ানমারের সামরিক নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করেছেন।

প্রসিকিউটর বলেন: এটি প্রথমবারের মতো উচ্চপদস্থ মিয়ানমার সরকারের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আবেদন করা হচ্ছে এবং আরও আবেদন আসবে।

প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান বলেছেন, ২০১৬-২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত সহিংসতা এবং রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ঘটনাগুলো নিয়ে তার অফিস তদন্ত চালিয়েছে।

রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা শুরু হয় ২০১৭ সালে, যখন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের ৩০টির বেশি পুলিশ পোস্টে হামলা চালায়।

কারিম খান বলেন, প্রমাণ পর্যালোচনার পর তার অফিস এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেল এবং তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি মিন অং হ্লাইং রোহিঙ্গাদের উপর অপরাধের জন্য দায়ী। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, পুলিশ, বর্ডার গার্ড, এবং কিছু বেসামরিক নাগরিক এই অপরাধে জড়িত ছিল। এই অপরাধের মধ্যে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক দেশান্তর এবং নির্যাতন অন্তর্ভুক্ত।
জাতিসংঘ আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ঘটনাগুলোকে জাতিগত নিধনের উদাহরণ বলে অভিহিত করেছে। অভিযোগ রয়েছে যে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং বৌদ্ধ বাসিন্দারা গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে, বাসিন্দাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, গণহত্যা এবং ধর্ষণ করেছে, যার ফলে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।

মিয়ানমার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (ICC) সদস্য নয় বলে মামলা সম্ভব বলে মনে করা হয়নি। কিন্তু আইসিসির সদস্য বাংলাদেশে, কিছু অপরাধ ঘটেছে বলে দাবি করে ২০১৮ সালে আদালত নতুন করে বিষয়টি মূল্যায়ন করে।

বেশিরভাগ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ৫২ বছর বয়সী রোহিঙ্গা শরণার্থী মোহাম্মদ আলম জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন বলে আশা করছেন।

শরণার্থী এবং রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্য শমসু আলম বলছেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) আবার কাজ শুরু করায় তারা কৃতজ্ঞ। তিনি জানান, মামলাটি অনেক দিন আগেই দায়ের করা হয়েছিল, কিন্তু দীর্ঘদিন কোনো অগ্রগতি না দেখে তারা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন এবং মনে করেছিলেন আইসিসি হয়তো এ মামলা ছেড়ে দিয়েছে। তবে এখন আইসিসি’র উদ্যোগ তাদের ন্যায়বিচারের আশা ফিরিয়ে এনেছে।

মিয়ানমারের সামরিক নেতা ২০২১ সালে অং সান সু চি-কে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। এতে সীমান্ত অঞ্চলে জাতিগত সংখ্যালঘুদের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ বাড়ে, যারা দীর্ঘদিন ধরে স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই করছে।

২০২২ সালে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গাম্বিয়ার করা একটি মামলা এগিয়ে নিয়ে যায়। মামলাটি মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করে। পাঁচটি ইউরোপীয় দেশ এবং কানাডা এই মামলায় গাম্বিয়াকে সমর্থন করেছে।

সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার আরও শুনতে ভিজিট করুন আমাদের 

আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং পাওয়া যাচ্ছে?

এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন  

আর, এসবিএস বাংলার এবং ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় 


Share