অস্ট্রেলিয়ায় প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে, প্রবীণ সেবা খাতে প্রয়োজন অনেক কর্মীর

Funcionários dos lares de idosos na Austrália estão insatisfeitos com o seu salário e condições de trabalho

How much funding actually goes to the care and quality of life for residents Source: Getty Images/Dean Mitchell

অস্ট্রেলিয়ায় বৃদ্ধদের সংখ্যা বাড়ছে আর এজন্য প্রবীণ সেবা খাতে প্রচুর কর্মী প্রয়োজন। এখনও, এই খাতটি কর্মীদের তীব্র ঘাটতির মুখোমুখি, শূন্যস্থানগুলি পূরণ করতে অস্থায়ী অভিবাসীদের উপর আগের চেয়ে বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে।


স্থানীয় কর্মীদের উৎসাহ  দেওয়ার জন্য ফেডারাল সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে, তবে সেই সাথে দাবি করা হয়েছে যে অস্থায়ী শ্রমিকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মজুরি ও শর্তের উন্নতির জন্য কোনও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে না।

নিউক্যাসল-এ ফ্রন্ডিঠা এইজ কেয়ার কেন্দ্রে গ্রীক ব্যক্তিগত পরিচর্যা কর্মী দেশপিনা জাউন্টুরিডোর দুটি ভাষা জানা অত্যন্ত মূল্যবান।

পঞ্চাশোর্ধ এই কর্মী  এ বছর অস্ট্রেলিয়ায় একটি বিশেষ ফেডারেল গভর্নমেন্ট ভিসা চুক্তির আওতায় এসেছিলেন, যার উদ্দেশ্য ফ্রন্ডিঠার গ্রীক বাসিন্দাদের যত্ন নেওয়ার জন্য স্থানীয়  গ্রিকভাষীদের শূন্যতা পূরণ করা।

সাধারণতঃ  'বুটিক'  চুক্তির লোকেরা টেম্পোরারি স্কিল  শর্টেজ ভিসায় আসে এবং তবে কিছু ক্ষেত্রে তাদের নিয়োগকর্তা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য স্পনসর করতে পারেন।

তবে বেশিরভাগ বিদেশে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিগত পরিচর্যাকারীরা অস্থায়ী মর্যাদার বাইরে চলে যেতে পারে না, কারণ এই চাকরিটি অর্ধ-দক্ষ হিসাবে বিবেচিত হয়।

প্রোডাক্টিভিটি কমিশন হিসেবে  করেছে যে চাহিদা পূরণের জন্য অস্ট্রেলিয়াকে ২০৫০ সালের মধ্যে তার বর্তমান এজেড কেয়ার কর্মীদের প্রায় তিনগুণ বাড়িয়ে তুলতে হবে।

কর্মীদের ঘাটতি এখনও অস্থায়ী অভিবাসীদের উপর ক্রমবর্ধমানভাবে নির্ভরশীল: ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী পরিচর্যা কর্মীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ বিদেশে জন্মগ্রহণকারী, যা ২০১৬ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ শতাংশে।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে অস্থায়ী অবস্থা শ্রমিকদের অনেককেই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে; তারা প্রায়শই ইউনিয়নের বাইরে এবং কম বেতন এবং শর্তাদি মানতে বাধ্য হয়।

শ্রম চুক্তি এবং আঞ্চলিক চুক্তির মধ্যে রয়েছে প্যাসিফিক লেবার প্রকল্প, যা অস্ট্রেলিয়ার আঞ্চলিক অঞ্চলে শ্রমিকদের তিন বছরের কাজ এবং ডেজিগনেটেড এরিয়া মাইগ্রেশন চুক্তি (ডা মা), যা মূলত এশিয়া থেকে আসা শ্রমিকদের জন্য।

এই খাতের একটি মূল উৎস প্রায় ৭০ শতাংশ খণ্ডকালীন কর্মরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা যারা এখন পার্সোনাল কেয়ার কর্মী হিসেবে কাজ করছে।

হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ইউনিয়ন বলেছে যে কেয়ারার দের পারিশ্রমিক দেওয়া হয় খুব কম এবং তাদের সুবিধাদিও কম। তবে ইউনিয়নের জাতীয় সচিব জেরার্ড হেইস বলেছেন যে সবচেয়ে খারাপভাবে শোষণ করা হয় মূলত পরিচ্ছন্নতা খাতে।

ফেডারেল সরকার রয়্যাল কমিশনের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে চিহ্নিত মূল ক্ষেত্রগুলিকে সহায়তা করার জন্য অতিরিক্ত অর্ধ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এগুলি যদিও ওয়ার্কফোর্স  সংক্রান্ত সমস্যাগুলি সমাধা করবে না - এটা বরং হোম কেয়ার প্যাকেজগুলির ঘাটতি, বৃদ্ধদের জন্য ওষুধের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে এবং অল্প বয়স্ক প্রতিবন্ধীদের এজেড কেয়ার কেন্দ্রের মধ্যে রাখার জন্য।

মাইগ্রেশন আইন বিশেষজ্ঞ জোয়ান্না হাওয়ে বলেছেন, অস্থায়ী অভিবাসীরা প্রায়শই অস্ট্রেলিয়ায় তাদের ক্যারিয়ারে বিনিয়োগ করতে চান তবে বর্তমান মাইগ্রেশন নিয়ম এগুলি প্রতিরোধ করে।

তিনি বলেন, এর  ফলাফল কর্মীরা এই পেশায় স্থায়ী হতে পারে না এবং  যা বাসিন্দাদের যত্নের ধারাবাহিকতা এবং গুণমানকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।

অলাভজনক এজেড কেয়ার সার্ভিসেস প্রতিনিধিত্বকারী কমিউনিটি সার্ভিসেস অস্ট্রেলিয়ার চিফ এক্সিকিউটিভ প্যাট স্প্যারো  বলেছেন উভয় কৌশলই গ্রহণ করা উচিত।

তিনি স্থায়ী অভিবাসনের সহজ পথের জন্য দক্ষ অভিবাসীদের তালিকায় পার্সোনাল কেয়ার কর্মীদের মতো পেশা যুক্ত করার পক্ষে।

ব্যক্তিগত পরিচর্যাকারীদের জন্য কোনও বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ নেই, যদিও অনেক নিয়োগকারী তাদের কর্মীদের যোগ্যতা কমপক্ষে সার্টিফিকেট থ্রী দাবি করেন।

বিদেশে জন্মগ্রহণকারী কর্মীদের অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণকারীদের তুলনায় সামগ্রিকভাবে উচ্চতর আনুষ্ঠানিক শিক্ষা রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে এজেড কেয়ার এডভোকেটরা ইংরেজি ভাষা দক্ষতা, সাংস্কৃতিক রীতিনীতি এবং কীভাবে অস্ট্রেলিয়ান সিস্টেম কাজ করে সে সম্পর্কে বর্ধিত প্রশিক্ষণের আহ্বান জানান।

হেলথ সার্ভিসেস ইউনিয়নের জেরার্ড হেইস এটি সমর্থন করে।

ফেডারাল অ্যাজড কেয়ার মন্ত্রী রিচার্ড কলবেক বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার এজেড কেয়ার  ওয়ার্কফোর্সকে সহায়তা করা প্রবীণ অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য উচ্চমানের যত্ন নিশ্চিত করার মূল বিষয়।

বিশেষত, তিনি মরিসন গভর্নমেন্টের অ্যাজড কেয়ার ওয়ার্কফোর্স স্ট্র্যাটেজিটির দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যা দক্ষতার প্রশিক্ষণ এবং ক্যারিয়ারের পাথওয়ের মতো অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলিতে আরও বেশি লোককে অ্যাজড কেয়ার খাতে কাজ করা উৎসাহিত করবে। 

মন্ত্রীর বিবৃতিতেও উল্লেখ করা হয়েছে যে সরকার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন এবং অন্যান্য শোষণের জন্য জরিমানা বাড়াতে আইন প্রয়োগ করেছে, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ফেয়ার ওয়ার্ক ওমবাড্সম্যানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে এবং ওমবাড্সম্যানকে ৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ ও ৬০ জন নতুন কর্মী বাড়িয়েছে।

পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন



Share