বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপুল জয়ের মাধ্যমে টানা তৃতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রিত্ব নিশ্চিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা আরও বলে, বিরোধী দল এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছে এবং ভোট ডাকাতির অভিযোগও তুলেছে।
ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে এ প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক”।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনি সহিংসতায় কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছে।
নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ২২১টি আসনে অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।এছাড়া, বিবিসির একজন করেসপন্ডেন্টের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বন্দর নগরী চট্টগ্রামের একটি ভোট কেন্দ্রে তিনি ব্যালোট পেপারে পূর্ণ ব্যালোট বক্স দেখেছেন। পোলিং অফিসার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করে নি।
First time Bangladeshi voters after casting shows their marked finger in a polling station in Dhaka, Bangladesh, on December 30, 2018. Source: SIPA USA
ভোট কেন্দ্রের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলের সমর্থক ভোটাররা বিবিসির ক্যামেরার সামনে খুশি মনে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বাকি লোকজন ভয়ে কথা বলতে চায় নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বিবিসি-কে বলেন, তার বৃহত্তর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কয়েকজন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখেন তাদের ভোট ইতোমধ্যে অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছে। তার মতে, এই নির্বাচন সুষ্ঠু ছিল না।
-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনের দিনে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনের দিনে ডজন খানেক প্রতিদ্বন্দ্বি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বিএনপি প্রার্থী সালাহুদ্দিন আহমেদের ছুরিকাহত হওয়ার কথা উল্লেখের পাশাপাশি তার ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৭১ বছর বয়সী শেখ হাসিনার গত এক দশকের শাসনামলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটলেও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবনতি হয়েছে।
নির্বাচনকালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুরক্ষায় সামরিক ও আধা-সামরিক বাহিনীর ৬০০ হাজার (৬ লাখ) নিরাপত্তা-কর্মী মোতায়েন করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে এবং ভোট-কারচুপির অভিযোগ উঠেছে।
তারা আরও বলেছে, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির অবনমনের কথা বললেও শেখ হাসিনা প্রতিবেশি পাকিস্তান এবং ভারতকে টেক্কা দেওয়ার জন্য উচ্চাশাপূর্ণ অর্থনৈতিক এজেন্ডার উপর জোর দিয়েছেন।বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সম্পর্কে তারা বলেছে, শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি, বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন নি। কারণ, দুর্নীতির অভিযোগে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
An woman casts her vote at a polling station on the 11th general election day in Dhaka, Bangladesh on December 30, 2018. Source: SIPA USA
এই দুই নেত্রী কয়েক দশক ধরে কখনও ক্ষমতায়, কখনও ক্ষমতার বাইরে এবং কখনও জেলে রয়েছেন।
বাংলাদেশের নির্বাচনের দিনের সহিংসতা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদনের শিরোনামে, ‘ডেডলি ভায়োলেন্স’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির নানককে উদ্ধৃত করে তারা লিখেছে, বিরোধী দল “বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে”।
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।