এক নজরে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল বাজেট ২০২০: লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন যারা

কোয়ালিশন গতকাল রাতে ২০২০ সালের ফেডারেল বাজেট ঘোষণা করেছে, গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে কেমন হলো এবারের বাজেট?

The government is spending record amounts, but not everyone is a winner from the 2020 federal budget.

The government is spending record amounts, but not everyone is a winner from the 2020 federal budget. Source: AAP

ফেডারেল সরকার গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাদের বড় খরুচে বাজেট ঘোষণা করেছে, উদ্দেশ্য করোনাভাইরাস সংকটে নিপতিত অর্থনৈতিক মন্দা থেকে উত্তরণ। 

এখন দেখা যাক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এই বাজেটে কারা লাভবান হলো, কারা ক্ষতিগ্রস্ত হলো।
Australian Treasurer Josh Frydenberg listens during a press conference inside the Budget lockup.
Australian Treasurer Josh Frydenberg listens during a press conference inside the Budget lockup. Source: AAP
ফেডারেল বাজেট ২০২০ যারা লাভবান হলেন 

করদাতা 

ব্যক্তিগত ইনকাম ট্যাক্স-এ ছাড় পাবেন করদাতারা যা কার্যকর হবে ১ জুলাই, ২০২০ থেকে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ট্যাক্স-অফসেট হিসেবে নিম্ন এবং মধ্যে আয়ের করদাতারা এককালীন আর্থিক প্রণোদনা পাবেন। 

ট্রেজারার যশ ফ্র্যাডিনবার্গ বলেন, নিম্ন এবং মধ্যে আয়ের করদাতারা একক আয়ের জন্য পাবেন সর্বোচ্চ ২,৭৪৫ ডলার এবং পার্টনারসহ আয়ের জন্য পাবেন সর্বোচ্চ ৫৪৯০ ডলার।  

প্রথম বাড়ী ক্রেতা 

ফার্স্ট হোম বায়ারদের জন্য ফার্স্ট হোম লোন ডিপোজিট স্কিম-এর অধীনে আরো ১০,০০০ অস্ট্রেলিয়ানদের নতুন তৈরী বাড়ী  কেনার জন্য প্রণোদনা। 

তাদের মাত্র শতকরা ৫ ভাগ ডিপোজিট দিতে হবে এবং এই সুযোগ আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।  

ম্যানুফ্যাকচারিং খাত 

ফেডারেল সরকারের বাজেট ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ১.৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে, যে সব শিল্প অগ্রাধিকার পাবে সেগুলো হচ্ছে-খাদ্য ও পানীয়, মাইনিং, মেডিকেল প্রোডাক্ট, রিসাইক্লিং এবং ক্লিন এনার্জি, ডিফেন্স এবং স্পেস। 

বয়স্ক পেনশনার 

বয়োবৃদ্ধ পেনশনাররা এপ্রিল ও জুলাইতে ৭৫০ ডলার করে পাবার পর আগামী ডিসেম্বর ও মার্চ মাসে অতিরিক্ত ২৫০ ডলার করে পাবেন।  

তরুণ জবসিকার 

জবসিকার পেমেন্ট গ্রহনকারীরা যাদের বয়স ১৬ থেকে ৩৫ তাদের নিয়োগ দিলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবমেকার হায়ারিং ক্রেডিট দেবে সরকার। 

এই ক্রেডিট অনুর্দ্ধ ত্রিশ বছর বয়সীদের নিয়োগের বেলায় প্রতি সপ্তাহে ২০০ ডলার করে, এবং ৩০-৩৫ বয়সীদের জন্য ১০০ ডলার করে, এটি নতুন নিয়োগের জন্য প্রযোজ্য এবং সপ্তাহে অন্তত ২০ ঘন্টা করে হতে হবে।
নারীদের জন্য যা আছে 

২৪০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের জন্য।  এর মধ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে নতুন ক্যাডেটশীপ এবং এপ্রেন্টিসশীপের খাতে - খাতগুলো হচ্ছে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গণিত। 

মানসিক স্বাস্থ্য 

এই অর্থবছরে অতিরিক্ত ১৪৮ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে মেন্টাল হেলথ সার্ভিসের জন্য যেখানে মেডিকেয়ার সাবসিডি সুবিধা ব্যবহার করে ১০ থেকে বাড়িয়ে ২০টি অতিরিক্ত সেশনের সুযোগ থাকবে।  ১৫টি 'বর্ধিত মানসিক স্বাস্থ্য ক্লিনিকের' জন্যও অর্থ বরাদ্দ থাকবে যার মধ্যে আছে বিয়ন্ড ব্লু, লাইফলাইন, কিডস হেল্পলাইন, এবং হেডস্পেস। 

বিশ্ববিদ্যালয় খাত 

২০২০-২১ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় খাতে ১ বিলিয়ন ডলার গবেষণা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, এর আগে ৩০০ মিলিয়ন ডলার দেয়া হয়েছিল ১২,০০০ নতুন আন্ডারগ্রাজুয়েট প্লেসের সহায়তার জন্য।
২০২০ সালের বাজেটে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলো 

সন্তানসহ অভিবাসন প্রত্যাশী

২০২০-২১ বছরে ফ্যামিলি ভিসা সীমা ৭৭,৩০০টি যার মধ্যে ৭২,৩০০ পার্টনার ভিসা, এর মানে হচ্ছে সন্তানসহ পরিবার ভিসার জন্য ৫,০০০টি স্থান থাকছে।  

পার্টনার ভিসার জন্য আবেদনকারীদের এবং তাদের স্পনসরদের ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টেস্টে পাশ করতে হবে।  

অদক্ষ অভিবাসন প্রত্যাশী

সরকার অদক্ষ অভিবাসীদের চেয়ে দক্ষদের অভিবাসনে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, এজন্য মোট ভিসার দুই তৃতীয়াংশ স্থান স্কীলড মাইগ্র্যান্ট ক্যাটাগরির জন্য রাখা হয়েছে। 

অফ-শোর অভিবাসন প্রত্যাশী 

সরকার অস্ট্রেলিয়ার ভেতর থেকে আবেদনকারীদের অগ্রাধিকার দেবে বিশেষ করে যারা রিজিওনাল এলাকায় বাস করছেন, এবং পার্টনার ভিসায় আবেদনকারীর স্পনসর যারা বড় শহরগুলোর বাইরে আছেন তাদের। অফশোর বা অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে যারা আবেদন করবেন তাদের সুযোগ সীমিত করা হয়েছে।  

আশ্রয়প্রার্থী 

এসাইলাম সীকার বা হিউম্যানিটেরিয়ান ভিসা প্রোগ্রামের সীমা ১৩,৭৫০ করা হয়েছে। হোম অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার পিটার ডাটন প্রতিজ্ঞা করেছেন তিনি অপারেশন সভেরেন বর্ডার কর্মসূচি চালু রাখবেন, এর মাধ্যমে আশ্রয়প্রার্থীরা স্থায়ীভাবে থাকতে অস্ট্রেলিয়ায় অবৈধভাবে বা নৌকায় করে প্রবেশের চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে। ইন্দোনেশিয়ার সাথে অস্ট্রেলিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা চুক্তির এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে অতিরিক্ত ৪১.৪ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। 

অর্থনীতি 

এবারের বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২১৩.৭ বিলিয়ন ডলার যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ, ২০২৪ সালে সরকারের ঋণ গিয়ে দাঁড়াবে ৯৬৬ বিলিয়ন ডলার, এসময়কালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার থাকবে ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম, এবং বেকারত্বের হার ডিসেম্বরে গিয়ে দাঁড়াবে ৮ শতাংশে। সার্বিক পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি সংকটের মধ্যেই থাকছে।  

আরও পড়ুনঃ 

Share
Published 7 October 2020 3:22pm
Updated 12 August 2022 3:16pm
By Maani Truu, Jodie Stephens
Presented by Shahan Alam


Share this with family and friends