যে-সব অস্থায়ী অভিবাসী অস্ট্রেলিয়ায় আটকে পড়েছেন এবং যাদের ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে অথচ তারা নিজের দেশে ফিরে যেতেও পারছেন না, তাদেরকে অচিরেই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন ইমিগ্রেশন মিনিস্টার অ্যালান টাজ।
করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারীতে অস্ট্রেলিয়ায় যারা নিজেদের ব্যয়-নির্বাহ করতে পারছেন না সে-সব অস্থায়ী অভিবাসীর প্রতি ফেডারাল সরকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, “এখনই ঘরে ফিরে যাওয়ার সময়”।
তবে, কোনো কোনো অভিবাসীর জন্য এটি কোনো বিকল্প সমাধান নয়। কারণ, ভারত এবং নেপালের মতো কোনো কোনো দেশ এখন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ স্থগিত রেখেছে।মিস্টার টাজ বলেন, এই পরিস্থিতিতে কেউ যদি “অস্ট্রেলিয়ায় আটকে পড়েন” এবং তার ভিসা স্ট্যাটাস নিয়ে যদি উদ্বিগ্ন হন যে, ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে, তাহলে তার উচিত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা।
Acting Immigration Minister Alan Tudge has told temporary migrants to contact the government if they have concerns. Source: AAP
তিনি বলেন,
“আক্ষরিক অর্থে যদি কোনো ফ্লাইট না থাকে এবং তারা যদি তাদের ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়, তাহলে তাদের উচিত জরুরী ভিত্তিতে ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টে কল করা।”
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনো কোনো অভিবাসী আটকে পড়েছেন
বিভিন্ন স্থানে আন্তর্জাতিকভাবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় প্লেনের টিকিটের দাম অনেক বেড়ে গেছে। সে কারণে এবং কোনো কোনো স্থানে ফ্লাইট একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আটকে পড়া অভিবাসীরা তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে পারছেন না।
যে-সব অভিবাসী নিরাপদে তাদের দেশে ফিরে যেতে চান তাদেরকে নিরাপদে দেশে ফিরতে সহায়তা করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফেডারেশন অফ এথনিক’ কমিউনিটিজ কাউন্সিলস অফ অস্ট্রেলিয়া (FECCA)।
মিস্টার টাজ বলেন, ভারত এবং নেপালের মতো দেশগুলোতে অভিবাসীদেরকে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করা হচ্ছে। এসব দেশের পরিস্থিতির প্রতি নিবিড়ভাবে নজর রাখছে সরকার।
তিনি বলেন,
“আমরা এর প্রতি ভালভাবে নজর রাখছি।”
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে হাজার হাজার ভিসাধারী তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে সরকারি পরামর্শের প্রতি মনোযোগ দিয়েছে।
“আজকের এই সুযোগে সার্বিক বাণী হলো, ঘরে ফেরার ফ্লাইট ধরা, যেখানে আপনি সহায়তা লাভ করবেন, বিশেষত, অস্ট্রেলিয়ায় যদি আপনার কোনো পারিবারিক সহায়তা না থাকে।”
অস্থায়ী ভিসাধারীদের সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারীতে সরকারি ওয়েলফেয়ার সহায়তা না পাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ায় বহু অস্থায়ী অভিবাসী ক্রমাগতভাবে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছেন।
তারা সরকারের আন-এমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট পাচ্ছেন না এবং সরকারের ১৩০ বিলিয়ন ডলারের জবকিপার ওয়েজ সাবসিডি প্রোগ্রামের কোনো সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম শুধু এদেশে বসবাসরত নিউ জিল্যান্ডের কতিপয় নাগরিক।
মিস্টার টাজ বলেন, বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা ও কাজের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ও স্থায়ী অভিবাসীরাই অগ্রাধিকার পাবেন।
তবে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, অস্থায়ী ভিসাধারীদের মধ্যে যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা মেডিকেল সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে “বৈষম্যের শিকার” হবেন না।
ফেডারাল সরকার আশা করছে যে, এসব ভিসাধারীরা অস্ট্রেলিয়ায় বাস করার সময়টিতে নিজেদের ব্যয় নিজেরাই বহন করবে।
তবে, FECCA সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, ভিসা স্ট্যাটাস নির্বিশেষে, যাদেরই কাজ আছে, তাদের সবাইকেই বেতনের ভর্তুকি প্রদান করতে।
অস্থায়ী অভিবাসীদের জন্য সরকারের সহায়তা
সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে যে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীসহ অস্থায়ী অভিবাসীরা যারা এদেশে ১২ মাসের অধিক সময় ধরে বসবাস করছেন, তারা তাদের সুপারঅ্যানুয়েশন ফান্ড থেকে অর্থ ব্যবহার করতে পারবেন।
“কি ইন্ডাস্ট্রিজ” বা গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো, যেমন, হেলথ, এজড কেয়ার, ডিজেবিলিটি কেয়ার, এগ্রিকালচার এবং ফুড প্রসেসিং-এ কর্মরত অস্থায়ী ভিসাধারীদের জন্য ভিসা ক্যাটাগোরিতে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
এজড কেয়ার এবং নার্সিং খাতে কর্মরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য পাক্ষিক সর্বোচ্চ ৪০ ঘণ্টা কাজের নিয়মও শিথিল করা হয়েছে।
মিস্টার টাজ বলেন, এসব পরিবর্তন নিয়মিত “পর্যায়ক্রমে পর্যালোচনা” করা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার বহু-সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়গুলোর জন্য কোভিড-১৯ বিষয়ক আপডেট প্রদানের সময়ে এসব বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য-বিষয়ক তথ্যাবলী অস্ট্রেলিয়ার সর্বত্র প্রচার করার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা সহায়ক হয়েছে।
“আমি আপনাদেরকে বড় রকমের ধন্যবাদ দিতে চাই। আপনারা বড় ধরনের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন। এসবের মাধ্যমে আপনারা জীবন ও জীবিকা রক্ষা করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, সিটিজেনশিপ সিরিমনি চালিয়ে যাবেন তিনি, অনলাইনে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে, একই সময়ে মাত্র একজন করে।
“আমি জানি যে, বহু লোক সত্যিকারভাবেই যত দ্রুত সম্ভব নাগরিক হতে চান। আমি এটি পুরোপুরিই বুঝি।”
মিস্টার টাজ বলেন, করোনাভাইরাস সম্পর্কিত গণ-স্বাস্থ্য-বিষয়ক তথ্যাবলী জনগণের কাছে ৬৩ টি ভাষায় পৌঁছে দিতে এসবিএস-এর সঙ্গে কাজ করছে সরকার।অস্ট্রেলিয়ানদেরকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্যদের সঙ্গে হলে দু’জনের বেশি একত্রিত হওয়া যাবে না।
Source: SBS
আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে আপনার ডাক্তারকে কল করুন। ডাক্তারের কাছে যাবেন না। আপনি ন্যাশনাল করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইনেও কল করতে পারেন এই নম্বরে: 1800 020 080
আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।
আপনার ভাষায় কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ আপডেট জানাতে এসবিএস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৬৩ টি ভাষায় এ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য পাবেন। ভিজিট করুন: .
Source: SBS
বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন: