অস্ট্রেলিয়ায় করোনা-সঙ্কটের কারণে টেলিহেলথ পরিষেবার ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, ইংরেজি যাদের দ্বিতীয় ভাষা তাদের জন্য এই পরিষেবা গ্রহণের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ফেডারাল সরকার জনগণকে ঘরে অবস্থান করতে বলেছে। এ রকম পরিস্থিতিতে গত দু’সপ্তাহে ১.৮ মিলিয়নেরও বেশি অস্ট্রেলিয়ান টেলিহেলথ পরিষেবা ব্যবহার করে স্বাস্থ্য-বিষয়ক পরামর্শ গ্রহণ করেছেন।
এই পরিষেবার মাধ্যমে রোগীরা তাদের ডাক্তার, সাইকোলজিস্ট কিংবা সাইক্রিয়াট্রিস্টের সাথে নিজের ঘরে থেকেই টেলিফোন কিংবা ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলতে পারেন। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ হ্রাস করতেই এই ব্যবস্থা।
তবে, যারা ইংরেজিভাষী নন, তাদের জন্য ট্রানস্লেশন সার্ভিসের মাধ্যমে টেলিহেলথ পরিষেবা গ্রহণ করাটা অনেক চ্যালেঞ্জিং।
ডাক্তার কুদসিয়া হাসনানি একজন জিপি। তিনি হিন্দি ও উর্দু জানেন এবং রাশিয়ান ভাষায়ও কিছুটা দখল রাখেন। তিনি বলেন, যেসব জিপি বহুভাষী, তারা টেলিহেলথের মাধ্যমে পরামর্শ দিতে পারেন।
কিন্তু, জিপি যদি বহুভাষী না হন, সেক্ষেত্রে ট্রানস্লেশন সার্ভিসের মাধ্যমে টেলিহেলথ পরিষেবা প্রদান করা অনেক কঠিন হয়ে যেতে পারে।
তাই, প্রায়শই দেখা যায় যে, রোগীর পরিবারের কোনো সদস্য দোভাষী হিসেবে সহায়তা করছেন।
তিনি বলেন,
“দুই-একজন রোগীর আত্মীয়রা পেছন থেকে তাদের জন্য তর্জমা করে দেন।”
“আমাদেরকে জন-দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তাই, শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যরা যারা একই বাড়িতে বাস করেন, তাদেরকে দোভাষী হিসেবে কাজ করতে দিতে হবে। বাইরে থেকে কোনো দোভাষী ঘরে এলে উভয় পক্ষের জন্যই এটি ঝুঁকিপূর্ণ হবে।”
ইংরেজিভাষী নন এ রকম রোগীদেরকে পরামর্শ প্রদানে সহায়তা করতে মেডিকেল প্র্যাকটিশনারদের জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকার বর্তমানে ৫০ টিরও বেশি ভাষায় ট্রানস্লেশন সার্ভিস দিচ্ছে।
মেলবোর্নের ওয়েস্টে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের একটি গ্রুপ হলো ‘ক্লাব ৬০’। এর প্রেসিডেন্ট সুনীল অ্যাবোট বলেন, কমিউনিটি গ্রুপগুলোর জন্য টেলিহেলথ ট্রানস্লেশন পরিষেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে বহু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
তিনি বলেন,
“স্থানীয় ভারতীয় সমাজের কোনো কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির জন্য টেলিফোনে জিপির সঙ্গে কথা বলাটা কোনো সুখকর অভিজ্ঞতা নয়।”
“যারা তাদের ডাক্তারের কাছে যেতে পারেন না তাদের জন্য ভাষাগত সমস্যাটি আরও বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়।”
“এ রকম লোকদের বেশিরভাগই তাদেরকে কী বলা হচ্ছে তা বোঝার জন্য তাদের সন্তানদের উপর নির্ভর করেন।”
“আমাদের এলাকায় ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানী পটভূমির বহু ডাক্তার আছেন। তাই, ভাষাগত ব্যবধানের বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিলে সবসময়েই বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে।”
তার গ্রুপের সদস্যদেরকে ভিডিও কলের মাধ্যমেও সহায়তা প্রদান করছেন মিস্টার অ্যাবোট। তাদেরকে তিনি নতুন করোনাভাইরাস বিষয়ক সাম্প্রতিক বিষয়গুলো বোঝাচ্ছেন এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিকেল সার্ভিস তারা পাচ্ছেন কিনা সেটা নিশ্চিত করছেন।
তিনি বলেন,
“বয়োজ্যেষ্ঠদের গ্রুপ হিসেবে আমরা বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি, আমাদের মধ্য থেকে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলো কিনা তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।”
“এ রকম সময়ে যোগাযোগ রক্ষা করা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে, আমি মনে করি এটা ভাল আইডিয়া যে, প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন কমিউনিটি মেম্বারকে চেক করা এবং এটা নিশ্চিত করা যে, এই লকডাউন ও বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার সময়ে তারা ভাল আছেন।”
“একটি কমিউনিটি গ্রুপ হিসেবে আমরা সবসময় একসাথে কাজ করছি, নিজেদেরকে সাহায্য করার জন্য। কারণ, এই মুহূর্তে এটি অন্য যে-কোনো সময়ের তুলনায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”অস্ট্রেলিয়ানদেরকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্যদের সঙ্গে হলে দু’জনের বেশি একত্রিত হওয়া যাবে না।
Source: SBS
আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে আপনার ডাক্তারকে কল করুন। ডাক্তারের কাছে যাবেন না। আপনি ন্যাশনাল করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইনেও কল করতে পারেন এই নম্বরে: 1800 020 080
আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।
আপনার ভাষায় কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ আপডেট জানাতে এসবিএস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৬৩ টি ভাষায় এ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য পাবেন। ভিজিট করুন: .
বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন: