Latest

তিন বছর পর সেপ্টেম্বরে ভারতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

তিন বছর পর সেপ্টেম্বরে ভারত সফরে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সময় কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লিতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, তিনি ভারতে আসছেন এবং তিনি আশা করেন সেই সফরে তাঁর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দেখা হবে।

India Monsoons

Boatmen stand by the rising water level of the River Yamuna after heavy rainfall in Prayagraj, in the northern Indian state of Uttar Pradesh, Saturday, Aug. 20, 2022. Source: AP / Rajesh Kumar Singh

পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশংসাবাক্যের জন্য শেখ হাসিনা ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন তাঁর চিঠিতে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি আসার সম্ভাবনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
অন্যদিকে, দীর্ঘ ১২ বছর পর দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে জয়েন্ট রিভার কমিশন বৈঠক শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গল ও বুধবার বৈঠকে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জেআরসি-র মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বৈঠকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের পানি-সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। প্রথম দু’দিন হয়েছে সচিব পর্যায়ের বৈঠক।
বাংলাদেশের পানি-সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জানিয়েছেন, একযুগ পর মন্ত্রী পর্যায়ে জেআরসি বৈঠক হচ্ছে। যদিও এর আগে সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু, মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক হয় নি ১২ বছর। উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ২৫ বছর মেয়াদি গঙ্গা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে বসেছে দুই প্রতিবেশী বন্ধু দেশ। দীর্ঘদিন ধরেই তিস্তা নদীর জল চাইছে ঢাকা। এ নিয়ে এর আগেও একাধিকবার আলোচনা হয়েছে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে। আগে মঙ্গলবার দিল্লিতে দু’দেশের জলসম্পদ মন্ত্রকের সচিব ও যৌথ নদী কমিশনের আধিকারীক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৬ সালে গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে এ নদীর জল বণ্টন ইস্যুটি প্রাধান্য পাবে। পাশাপাশি কুশিয়ারা, ফেনী, মুন, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার নদ নিয়ে আলোচনা করা হবে। বৈঠকে নদীতীর ব্যবস্থাপনা, বন্যার আগাম তথ্য-সহ নদী সংক্রান্ত সব বিষয়েই আলোচনা হবে।
জেআরসি বৈঠকে কোন বিষয় প্রাধান্য পাবে, জানতে চাইলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, বৈঠকটি প্রায় ১২ বছর পর হচ্ছে। দু’দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে, এটিই একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখতে চান। আর এ বৈঠকের সময়টিও ভাল। কারণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী মাসের প্রথমার্ধ্বে ভারত সফরের আগেই বৈঠকটি হচ্ছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, নদী বিষয়ে দুই দেশের অনেক ইস্যু রয়েছে। দু’দেশেরই সরকার চায় ইস্যুগুলো আলোচিত হোক। এবার বন্যার সময় পূর্বাভাসের তথ্য ভারত বাংলাদেশকে দিয়েছিল। এতে বাংলাদেশের লাভ হয়েছে। আগামীতে এটি আরও জোরদার করা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আগামী ৬ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার ভারত সফরের কথা রয়েছে। এর আগে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালে বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দিল্লির সুষমা স্বরাজ ভবনে দীর্ঘক্ষণ ধরে জেআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সচিব পর্যায়ের বৈঠকে জল সম্পদ বিষয়ে বৃহত্তর সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এদিন মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন পানি-সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এছাড়া, বাংলাদেশের জল সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমও বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।

আপডেট: তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারতকে আবেদন বাংলাদেশের

দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া থাকা তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ভারতকে অনুরোধ করল বাংলাদেশ। দু’দেশের মধ্যে প্রায় ১২ বছর পর হওয়া যুগ্ম নদী কমিশনের তিন দিনের বৈঠকটি শেষ হওয়ার পরে প্রকাশিত বিবৃতিতে এমনটাই জানানো হয়েছে।

ভারতের তরফে ঢাকাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, তারা এই চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য সব রকম চেষ্টা করবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের আগে এই বৈঠক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিস্তা ছাড়াও ভারত থেকে বাংলাদেশে বয়ে যাওয়া অন্য নদীগুলির নিয়ে কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে গঙ্গা, তিস্তা, মনু, মুহুরি, খোয়াই, গুমতি, ধরলা, দুধকুমার এবং কুশিয়ারা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বন্যার সময়ের তথ্য বিনিময় ছাড়াও নদী তীরবর্তী এলাকাকে সুরক্ষিত রাখা এবং সাধারণ অববাহিকা অঞ্চলের সংরক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কুশিয়ারা নদী থেকে জল প্রত্যাহার করে নেওয়া সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে সই করতে উদ্যোগী হতে বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী ভারতকে অনুরোধ করেছেন।

ভারতের মন্ত্রী জানিয়েছেন, বিষয়টি বিবেচনাধীন। সূত্রের খবর, ২০২৬ সালে গঙ্গা জল বণ্টন চুক্তির মসৃণভাবে পুনর্নবীকরণ করা এবং বাংলাদেশে যাওয়া গঙ্গাজলের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা নিয়ে সমীক্ষা করতে দু’পক্ষই সহমত হয়েছে।

এছাড়াও, তিতাসের দূষণ দূর করার উদ্যোগ, ফেনি নদীর জলকে ফিরিয়ে নিয়ে ত্রিপুরার সাবরুম শহরে বিশুদ্ধ জল সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করার মতো বিষয়গুলি নিয়ে ঐকমত্য হয়েছে দু’দেশ। সূত্রের খবর, এই বিষয়গুলি নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা পত্র সই হবে শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে।

Share
Published 26 August 2022 10:34am
Updated 26 August 2022 4:26pm
By Partha Mukhopadhyay
Source: SBS

Share this with family and friends