This article is more than 2 years old
৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে ভারতকে গণতন্ত্রের ধাত্রীভূমি বলে অভিহিত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
ভারত গণতন্ত্রের ধাত্রীভূমি, এমনই মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেছেন, ৭৫ বছর ধরে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে ভারত। অনেক সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা-প্রাপ্তি হয়েছে। মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, বাবাসাহেব অম্বেদকর, বীর সাভারকরের প্রতি কৃতজ্ঞ দেশবাসী। তাঁরা স্বাধীনতার জন্য নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন।
Published 16 August 2022 10:40am
By Partha Mukhopadhyay
Source: SBS
Image: A handout photo made available by the Indian Press Information Bureau (PIB) shows Indian Prime Minister Narendra Modi (C) inspecting troops at the Red Fort during the celebrations for the 75th Anniversary of Indian Independence, or Azadi Ka Amrit Mahotsav, in New Delhi, India, 15 August 2022. India declared its independence from British rule on 15 August 1947. EPA/PIB HANDOUT (AAP / PIB HANDOUT/EPA)
জাতির উদ্দেশে ভাষণে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, রাজেন্দ্র প্রসাদ, লাল বাহাদুর শাস্ত্রীদের অবদানের কথা তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলেছেন, মঙ্গল পাণ্ডে, তাতিয়া টোপে, ভগৎ সিং, সুখদেব, রাজগুরু, চন্দ্রশেখর আজাদ, আশফাকুল্লা খান, রামপ্রসাদ বিসমিলের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আজ ধন্যবাদ জানাচ্ছে দেশ। স্বাধীনতার বিষয়ে কথা বলার সময় দেশবাসী আদিবাসী সমাজের অবদানের কথা ভুলতে পারেন না। ভগবান বিরসা মুণ্ডা, সিধু-কানু, আল্লুরি সীতারাম রাজু, গোবিন্দ গুরু এমন অনেক সংগ্রামী স্বাধীনতার আওয়াজ হয়ে উঠেছিলেন।
সোমবার, ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সামিল হওয়ার আগে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর লালকেল্লায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সেখান থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেন।
একইসঙ্গে, লালকেল্লায় অনুষ্ঠিত হয়েছে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একাধিক অনুষ্ঠান। লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, স্মৃতি ইরানি-সহ অন্যান্য মন্ত্রীরা। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লায় কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হয় লালকেল্লা ও সংলগ্ন এলাকায়।
অন্যদিকে, দেশজুড়ে পালিত হয়েছে ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস। রাজ্যগুলির একাধিক জায়গায় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
আর এবারই টেলিপ্রম্পটার সরিয়ে কাগজে লেখা নোটে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী। লালকেল্লায় দেশবাসীর উদ্দেশে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ শুরুর আগেই টেলিপ্রম্পটার সরিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি সব ভাষণের সময় টেলিপ্রম্পটার ব্যবহার করতে দেখা যেত তাঁকে। সেই নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের মুখেও পড়েছেন তিনি। তাই দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে ফিরে এলেন পুরোনো অভ্যাসে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এমনকি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও কাগজে লেখা নোট দেখে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই নিয়ে নবমবার লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে, এই প্রথমবার জাতীয় পতাকাকে গান স্যালুট দেওয়া হয় ভারতের তৈরি হাউইৎজার বন্দুকে। অটোম্যাটিক কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম-সম্পন্ন এই হাউইৎজার বন্দুক বানিয়েছে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যে আওয়াজ এতকাল শুনতে চেয়েছিলেন তা আজ শুনলেন। আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন সশস্ত্র বাহিনীর আধিকারিক ও জওয়ানরা যেভাবে বাস্তবায়িত করেছেন তার জন্য তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আর তারপরই, আগামী ২৫ বছরের মধ্যে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশ হবে ভারত, এমনই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী দিনে পাঁচটি বড় সংকল্প নিয়ে এগোতে হবে ভারতকে। বড় সংকল্প নিয়ে এগোলেই স্বপ্নপূরণ হবে।
প্রথম সংকল্প হল ভারতের বিকাশ, দ্বিতীয় সংকল্প হল দাসত্ব থেকে মুক্তি, তৃতীয় সংকল্প উত্তরাধিকার নিয়ে গর্ব, চতুর্থ সংকল্প ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং পঞ্চম সংকল্প হল নাগরিক কর্তব্যে অবিচল থাকতে হবে। তাই, আগামী ২৫ বছর দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্নপূরণ করতে হবে। এখন নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার সময়।
তবে দেশে মহিলা-পুরুষ সমানাধিকার না পেলে অগ্রগতি সম্ভব নয়। একতা সম্ভব নয়। নারীকে অপমান করা যাবে না, এই সংকল্প নিতে হবে। পাশাপাশি, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে লালকেল্লা থেকে নতুন স্লোগান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এবং অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্লোগান মিশিয়ে তৈরি করেছেন, জয় জওয়ান, জয় কিষান, জয় বিজ্ঞান, জয় অনুসন্ধান। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছেন প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত হচ্ছে দেশ। বলেছেন, কৃষিকাজ থেকে শিল্প- দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই হয়েছে ব্যাপক উন্নয়ন। ধীরে ধীরে ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত হচ্ছে দেশ।
অন্যদিকে, দেশকে দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে, স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে এমনই মন্তব্য করেছেন নরেন্দ্র মোদী। বলেছেন, পরিবারতন্ত্রের রাজনীতিতে পরিবারের লাভ হয়। দেশের কোনও উপকার হয় না। তাই দেশ থেকে পরিবারতন্ত্র রাজনীতি দূর করতে হবে। দেশকে পরিবারতন্ত্রের বিরূদ্ধে লড়াই করতে হবে। চাচা-ভাতিজাতন্ত্র দেশের ক্ষতি করেছে। দেশে আর চাচা-ভাতিজাবাদ চলবে না। পাশাপাশি, দুর্নীতি দমন নিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার কথায়, দুর্নীতি করে রক্ষা পেয়ে যাবেন, এই ধারণা ভুল। দুর্নীতি করলে কেউ বাঁচতে পারবেন না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরও লড়াই করতে হবে। দুর্নীতিকে ঘৃণা করলে, তবেই দুর্নীতি রোখা সম্ভব। দেশ থেকে যত টাকা লুঠ হয়েছে, তা ফেরানোর চেষ্টা করতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্তদের করুণা দেখালে চলবে না। তাদের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখাতে হবে।
NEW DELHI, INDIA - AUGUST 5: Congress Interim President Sonia Gandhi and Congress MPs wearing black clothes, along with party MPs march Parliament House towards Rashtrapati Bhawan as part of partys nationwide protest over price rise, unemployment and GST hike on essential items on August 5, 2022 in New Delhi, India. The Congress is protesting against inflation and unemployment in the country, and has blamed the ruling BJP for the 'death of democracy'. (Photo by Sonu Mehta/Hindustan Times/Sipa USA) Source: AAP / Hindustan Times/Sipa USA
তিনি আরও বলেন, ভারত একটি দেশ হিসেবে নিজের পরিচয় তৈরি করেছে। গত ৭৫ বছরে কংগ্রেস অনেক কিছু অর্জন করেছে। কিন্তু বর্তমান আত্মতুষ্টিমূলক সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মহান আত্মত্যাগ এবং দেশের গৌরবময় অর্জনকে তুচ্ছ করতে উদ্যত। জাতীয় কংগ্রেস রাজনৈতিক লাভের জন্য ঐতিহাসিক তথ্যের ভুল উপস্থাপনের বিরোধিতা করবে। পাশাপাশি মিথ্যার ভিত্তিতে মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মত মহান জাতীয় নেতাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রতিটি প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করবে কংগ্রেস।
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী-সহ শীর্ষ নেতারা স্বাধীনতা দিবসে দিল্লিতে দলের আজাদি গৌরব যাত্রা-য় অংশ নিয়েছেন।
স্বাধীনতা ৭৫ উপলক্ষ্যে দেশ-বিদেশের রাষ্ট্রনায়করাও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভারত আমেরিকার অপরিহার্য সহযোগী, ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এমনটাই বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও ভারতকে ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের উন্নতিতে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রকে এবং ডিজিটালাইজেশনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিল গেটস। তিনি টুইট বার্তায় লিখেছেন, ভারতের এই অগ্রগতি অনুপ্রেরণাদায়ক। আর এই যাত্রায় অংশ হয়ে সৌভাগ্যবান তিনি।
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন থেকে ভারতীয় মহাকাশবিদ রাজা চারি স্বাধীনতা দিবস পালন করেছেন। সেই ছবি তিনি টুইটারে পোস্ট করে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস পালন হয়েছে সিঙ্গাপুর হাইকমিশন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ভারতীয় দূতাবাসেও।
কলকাতাতে তুমুল বৃষ্টি, তারই মধ্যে স্বাধীনতার ৭৫ বছরের রেড রোডে উদযাপনে আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে নাচের তালে পা মিলিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেড রোডে যখন এক এক করে স্কুলের বাচ্চারা তাদের নাচগানের অনুষ্ঠান দেখাচ্ছে, তখন তালে তালে তালি দিচ্ছিলেন মমতা। কিন্তু, আদিবাসী শিল্পীরা যখন তাঁদের অনুষ্ঠান করছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মূল মঞ্চের সামনে, তখন আর চুপ করে বসে থাকতে পারেন নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসন ছেড়ে উঠে মঞ্চের সিঁড়ির কয়েক ধাপ পেরিয়ে নেমে এলেন একেবারে মাটিতে। তালে তালে তাঁদের নাচে পা মিলিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত দর্শকরা হাততালি দিয়ে উঠেছেন।
রেড রোডে উদযাপনে তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করে রেনকোট পরে নাচগানে মাতায় কচিকাঁচারা। পুলিশের কুচকাওয়াজের কিছুক্ষণ পরেই যখন স্কুলের বাচ্চাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা, তার মধ্যেই ব্যাঘাত ঘটায় বৃষ্টি। কিন্তু তাতেও দমানো যায়নি খুদে পড়ুয়াদের। রংবেরংয়ের সাজগোজের উপর দিয়েই স্বচ্ছ রেন কোট পরে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তাদের নৃত্যগান করে দেখায়।
অন্যদিকে, স্বাধীনতা দিবসে পাঞ্জাবের আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে মিষ্টি বিনিময় করেছে ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী এবং পাকিস্তান রেঞ্জার্স। এছাড়াও, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশেষ বিটিং রিট্রিট পালন করা হয়েছে। সোমবার এক অন্য ছবি দেখা গিয়েছে আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্য বিনিময় করেছে। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি সীমান্তে ভারত ও বাংলাদেশের জওয়ানরা একে অপরকে মিষ্টি ও ফুল বিনিময় করেছে। পেট্রাপোল, বেনাপোল সীমান্তেও একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে বিএসএফের ১৮৯ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের বিশিষ্ট আধিকারিকেরা এবং দু'দেশের নাগরিকরা। এদিকে, সিয়াচেন হিমবাহে প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছে ভারতীয় জওয়ানরা। ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে লাদাখে প্যাংগং লেকের পাশে ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছেন আইটিবিপি-র জওয়ানরা। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে জলের তলায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছে ভারতীয় কোস্ট গার্ড বাহিনী।
আর, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে যখন দেশের বীর শহীদ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ করা হচ্ছে, তখন ৩৮ বছর পরে এক শহীদের দেহাবশেষ পাওয়া গেল সিয়াচেন হিমবাহের একটি বাঙ্কার থেকে। দেহাবশেষটি ল্যান্সনায়েক পদমর্যাদার সেনা জওয়ান চন্দ্রশেখরের। তিনি ১৯৮৪ সালের অপারেশন মেঘদূত-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন। বাঙ্কারে থাকা লোহার পাতে লেখা ক্রমিক সংখ্যা দেখে দেহাবশেষটি চিহ্নিত করা হয়। ল্যান্সনায়েকের বাড়ি উত্তরাখণ্ডের হলদোয়ানিতে। তাঁর স্ত্রী এবং দুই মেয়ে রয়েছেন। খুব শীঘ্রই তাঁর দেহাবশেষ হলদোয়ানিতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে সেনা সূত্রে খবর। সেখানেই তাঁর পরিবার এবং অন্যান্যরা ল্যান্সনায়েককে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। মেঘদূত অভিযানে ল্যান্সনায়েক চন্দ্রশেখর সেনাবাহিনীর যে দলে ছিলেন, সেই দলের প্রধান দায়িত্ব ছিল পাক সামরিক বাহিনীর হাত থেকে হিমবাহের পয়েন্ট ৫৯৬৫ অঞ্চলকে উদ্ধার করা। রাতে যখন এই দলটি ওই অঞ্চল থেকে পাক বাহিনীকে হঠিয়ে দেওয়ার পর রুটিন টহল দিচ্ছিল, তখন তুষারধসে ১৯ জন সদস্য নিহত হন। তাদের মধ্যে ১৪ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা গেলও পাঁচজনকে খুঁজে পাওয়া যায় নি। চন্দ্রশেখর এই নিখোঁজদেরই একজন। গ্রীষ্মকালে বরফ গললে প্রতি বছরই সিয়াচেন অঞ্চলে রুটিন তল্লাশি চালায় সেনা। তল্লাশি অভিযান চালানোর সময়েই বাঙ্কারটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Share