ন্যাশনাল এজিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সোশ্যাল জেরোন্টোলজির ডিরেক্টর এসোসিয়েট প্রফেসর বিয়াঙ্কা ব্রিজনাথ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ভিক্টোরিয়ার কঠোর লকডাউনের মধ্যে পরিবারগুলো আরো চ্যালেন্জিংয়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, সংক্রমন নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে যাতায়াত ভীষণ নিয়ন্ত্রিত।
তিনি শুনেছেন বেশ কিছু অভিবাসী পরিবার বৃদ্ধাশ্রমগুলো থেকে তাদের প্রিয়জনদের বাড়ীতে নিয়ে আসছেন, যাতে তাদের কভিড ১৯ প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা করা যায়।
কিন্তু তিনি মনে করেন যারা এরকম কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাদের আরও ভাবা উচিত, ডিমেনশা রোগীদের সেবার ক্ষেত্রে এমন কিছু চ্যালেঞ্জ আছে যেগুলো পরিবারগুলোর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।ডঃ ব্রিজনাথ লক্ষ করেছেন লকডাউনের মধ্যে ডিমেনশা আক্রান্তদের নিয়ে থাকা পরিবারগুলো বেশ অস্থিরতার মধ্যে থাকে।
Source: Getty Images/FG Trade
দিনরাত বাড়ীতে সেবা দিতে সেবাদানকারীদের মধ্যে যেমন প্রভাব ফেলে তেমনি ডিমেনশা আক্রান্তদেরও কষ্ট হয়।
ডঃ ব্রিজনাথ মনে করেন যারা সেবা দিচ্ছেন তাদের নিজেদের প্রতিও নজর দিতে হবে, যাতে রোগীদের সেবা দিতে তাদের মনোবল এবং সামর্থ্য অটুট থাকে।
তিনি মনে করেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও বাড়ীতে সেবা দেওয়ার জন্য সম্পৃক্ত করতে হবে।
ডিমেনশা অস্ট্রেলিয়ার সিইও মারি মেকাবে বলেন, কভিড ১৯ শুধু যে এজড কেয়ার কর্মীদের এবং পরিবারগুলোকেই শুধু নয়, এটি শতকরা ৫০ ভাগের বেশী বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে ডিমেনশা রোগীদেরও চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে। বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে কড়াকড়ির কারণে অনেকেই তাদের প্রিয়জনদের দেখতে যেতে পারছেন না।
Source: Getty Images/FG Trade
ভিক্টোরিয়ার নির্মাণকর্মী এডগার প্রয়কে তার বৃদ্ধ বাবা-মা'কে দেখতে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল, তিনি সপ্তাহে দুদিনের জন্য সেবার অনুমতি দিতে ফ্যাসিলিটি ম্যানেজারকে রাজি করিয়েছেন।
যদিও অস্ট্রেলিয়ার এই রাজ্যের ওল্ড হোমগুলোর ৯৫ ভাগ মৃত্যু ঘটেছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে, তারপরেও প্রয়ের বাবা-মা ভালোই আছেন এবং সম্প্রতি তারা তাদের ৫৪ বিবাহ বার্ষিকী পালন করলেন।
প্রয় তার বাবা-মায়ের জন্য প্রাইভেট সেবক নিয়োগ করেছেন সপ্তাহে ৫ দিন এবং নিজে দুদিন অতিরিক্ত সেবা দিচ্ছেন।
এই অতিরিক্ত ব্যবস্থা তাকে নিতে হয়েছে কারণ কর্মী সংকটের কারণে তার ডিমেনশা আক্রান্ত মা মনিকাকে অতিরিক্ত কেমিক্যাল রেস্ট্রেইন্ট ওষুধ দেয়া হয়েছিল, এই বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছিল তার মা যখন আগের ওল্ড হোমে ছিলেন।
হিউমান রাইটস ওয়াচের মতে, কভিড ১৯-এর আগে কেমিক্যাল রেস্ট্রেইন্ট ওষুধ দেয়া সাধারণ ব্যাপার ছিল, এক সমীক্ষায় দেখা গেছে নার্সিং হোমের এক তৃতীয়াংশ বাসিন্দাদের এ ধরণের সিডেটিভ দেয়া হতো, এছাড়া ৩২ ভাগ রোগীদের প্রতিদিন এন্টি সাইকোটিক ড্রাগ দেয়া হতো।
প্রোডাক্টিভিটি কমিশনের সাম্প্রতিক এক ডাটায় দেখা যায় যে হোম কেয়ার প্যাকেজের গড় অপেক্ষার সময় ছিল প্রাথমিক পর্যায়ের কেয়ারের জন্য সাত মাস থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কেয়ারের জন্য ৩৪ মাস।
এসোসিয়েট প্রফেসর ব্রিজনাথ বলেন, যদিও বহুভাষাভাষী পরিবারগুলো তাদের ডিমেনশা আক্রান্ত প্রিয়জনদের বাড়ীতে রেখেই সেবা দিতে পছন্দ করে, কিন্তু সিস্টেমিক সমস্যার কারণে তাদের হোম কেয়ার প্যাকেজ পেতে কয়েক বছর লেগে যায়।
প্রয় বলেন, তাকে তার বাবা-মায়ের সেবা নিয়ে চাপাচাপি করার জন্য ট্রাবল মেকার তকমা পেতে হয়েছে-তাকে অনেক শক্ত সিস্টেমের মধ্যে কাজ করতে হয়েছে।প্রায় ১০০-এরও বেশি রোগের কারণে ডিমেনশা হতে পারে, সেই সাথে আলঝাইমার রোগের অনুসঙ্গ একটি সাধারণ বিষয়। এতে ডিমেনশা রোগীর ৭০ ভাগেরই স্মৃতি লোপ পায়।
Source: Getty Images/RyanJLane
মারী মেকাবি পরিবারগুলোর প্রবীণ ব্যক্তিদের ওপর নজর রাখতে পরামর্শ দেন, যে কোন অস্বাভাবিক ব্যবহার ডিমেনশার জন্য প্রাথমিক সংকেত হিসেবে দেখা দিতে পারে।এ বিষয়ে আরো জানার জন্য বা সাহায্যের জন্য কল করুন 1800 100 500 - এই নাম্বারে, অথবা ১৮০০ ৯৫১ ৮২২ নাম্বারে।
Source: Getty Images/Geber86))
আপনার ভাষায় সাহায্য পেতে কল করুন 131450 - এই নাম্বারে।
পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুনঃ