বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার বার্ষিক সাধারণ সভা, ডিনার এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় সিডনির রকডেলের রেড রোজ ফাংশন সেন্টারে আয়োজিত এই ‘বুয়েট নাইট’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী সাবেক বুয়েটিয়ান িএবং তাদের পরিবারবর্গ।
বিকাল সাড়ে ছয়টায় আগত সবাইকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে শুরু হয় এই অনুষ্ঠান। এটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাকিল চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বুয়েটের ছাত্র নিহত আবরার ফাহাদের স্মরণে তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সবচেয়ে প্রবীণ ব্যাচ হিসেবে ১৯৫৮ সালের ড. আহমেদুল আমিন এবং সবচেয়ে নবীন ব্যাচ হিসেবে সিডনিতে পিএইচডি-রত ২০০৭ এর আশরাফুল আজম শায়ান উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ৫০ বছরের ব্যবধানে ভিন্ন দুই প্রজন্মের উপস্থিতি ও সেতুবন্ধন অনেক অনুপ্রেরণার বলে সঞ্চালক মতামত ব্যক্ত করেন।
এরপর, গত এক বছরে বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন কার্যক্রম ভিজ্যুয়াল ডিসপ্লের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।
বিজয় দিবস উদযাপন এবং একুশের প্রভাত ফেরিতে বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম অংশগ্রহণ সম্পর্কে বলেন যুগ্ম সম্পাদক সৌমেন চক্রবর্তী।
ইনার সার্কেল-এর ফারহানা রিফাত বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে অর্থ সংগ্রহের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করেন। এ বছর বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়া ক্যান্সার কাউন্সিল-এর জন্য সিডনির ওয়ালী পার্কে অনুষ্ঠিত দি বিগেস্ট মর্নিং টি এবং ওপেন এয়ার কনসার্টের মাধ্যমে ২৫০০ ডলার সংগ্রহ করেছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন যে, বুয়েটের ছাত্র রাফিদ নাবিলের কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট-এর জন্য ২০২৫ ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে।
মেম্বারশিপ সম্পাদক আসিফ হাসান বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত প্রফেশনাল এবং টেকনিক্যাল ওয়ার্কশপের বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেন।
কার্যনির্বাহী উপদেষ্টা ফেরদৌস আহমেদ বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার নতুন ওয়েবসাইট প্রজেক্টের তথ্য দেন।বিগত ২০১৮-১৯ অর্থ-বছরের আয়-ব্যয় এবং অন্যান্য হিসাব তুলে ধরেন সংগঠনটির ট্রেজারার হাসিবুর রহমান শেখ এবং সহকারী ট্রেজারার খন্দকার জিয়াউল করিম।
Source: Supplied
এরপর, সাধারণ সম্পাদক পারভেজ এহসান কার্যকরী পরিষদের সকল সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবকদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি তানভীর আহমেদ তমাল তার বক্তৃতায় সংগঠনটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বুয়েটিয়ানদের মাঝে সম্পর্ক এবং সংযোগ স্থাপন করাই সংগঠনটির মূল লক্ষ্য।
তিনি উল্লেখ করেন, বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার আয়োজিত ইভেন্টগুলো ভৌগোলিক কারণেই মূলত নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, অন্যান্য রাজ্যের বুয়েটিয়ানদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন ভবিষ্যতে। ইতোমধ্যে ভিক্টোরিয়া এবং পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করার কথাও বলেন তিনি।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ক্যান্টারবেরি-ব্যাংকসটাউন সিটি কাউন্সিলের বাংলাভাষী কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাহে জামান টিটু, বুয়েটের প্রাক্তন ছাত্র বাংলাদেশ হাই কমিশনের নবগঠিত সিডনি কনসুলেটের কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম।
এ বছর গবেষণা পর্যায়ে সর্বোচ্চ সফলতার জন্য বুয়েটের ২০০৫ ব্যাচের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ড. রিজওয়ান ফাত্তাহকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। ড. রিজওয়ান ‘দি অস্ট্রেলিয়ান’ মনোনীত ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাটাগরিতে অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ জন সেরা রাইজিং স্টার গবেষকদের মধ্যে এক জন।
‘টপ ভলান্টিয়ার’ ইন ইনার সার্কেল সম্মাননা পান বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৯৯৮ সালের রিফাত ফারহানা।
এরপর অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন তামিম শাহরিন এবং বাংলা ব্যান্ড ধূমকেতু।