বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার ভারত সফরে যাচ্ছেন। এবারের সফরে দু’দেশের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও তিস্তার জল-বণ্টন বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি ৮ টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে শনিবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যোগাযোগ, সংস্কৃতি, কারিগরি সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে সমঝোতা স্মারক স্মাক্ষরিত হতে পারে।
ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী জানিয়েছেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ৫ অক্টোবর বৈঠকের পর মূলত যোগাযোগ, সংস্কৃতি, কারিগরি সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে এ পর্যন্ত ৭ থেকে ৮টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয় নিশ্চিত হয়েছে। তবে এ সংখ্যা ১০টি পর্যন্ত হতে পারে।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম (ডব্লিউ-ই-এফ)-এর ভারতীয় শাখা ইন্ডিয়ান ইকোনমিক ফোরাম-২০১৯-এ যোগ দিতে ৩ অক্টোবর ৪ দিনের সফরে নয়াদিল্লী পৌঁছুবেন। ঐ ফোরামে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে নিম্ন-আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়াসহ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি তুলে ধরবেন।
এর পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের বর্তমান জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং বিগত কয়েক বছরে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার সরকারের সাফল্যের কথাও উল্লেখ করবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে শনিবার ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউজে।
বিকেলে শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রবিবার জাতীয় কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী জানিয়েছেন, তিস্তা ও রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হবে। ভারতের জাতীয় নাগরিক পঞ্জী বা এনআরসি বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে দুই প্রধানমন্ত্রী, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকে এনআরসি প্রশ্নে বাংলাদেশকে উদ্বিগ্ন না হতে প্রধানমন্ত্রী মোদির বক্তব্য উল্লেখ করে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। এনআরসি নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই।
জানা গেছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের বড় বড় বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানাবেন। এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের তিনটি চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যৌথভাবে বৈঠক ও মতবিনিময় করবেন। সফররত সিঙ্গাপুরের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হেং সুয়ে কেট দিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন।
এছাড়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম-ভিত্তিক ফিচার ফিল্ম তৈরির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য চিত্র-পরিচালক শ্যাম বেনেগাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজিত বঙ্গবন্ধুর উপর নির্মিত চলচ্চিত্রটি মুজিব বর্ষ ২০২০-২১ শেষ হওয়ার আগেই মুক্তি পাবে। ভারত সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার বিকেলে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হবেন।
READ MORE
বাংলাদেশের মানুষ অনেক রাজনীতি সচেতন